Advertisement
E-Paper

ফের অনুব্রতর হুমকি, পুলিশ শাসালেন মনিরুল

আবার স্বমহিমায় অনুব্রত। সঙ্গে দোসর মনিরুল। এক জন বিরোধীদের প্রাণে মারার হুমকি দিলেন, অন্য জন পুলিশকর্মীদের বুঝিয়ে দিলেন শাসক দলের কথা না শুনলে জঙ্গলমহলে বদলি করে দেবেন। বীরভূম পাড়ুই থানা এলাকার ক্ষতিপুর গ্রামে বিজেপি ও সিপিএমের ‘যৌথ সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রতিবাদসভা ছিল শনিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৫০

আবার স্বমহিমায় অনুব্রত। সঙ্গে দোসর মনিরুল। এক জন বিরোধীদের প্রাণে মারার হুমকি দিলেন, অন্য জন পুলিশকর্মীদের বুঝিয়ে দিলেন শাসক দলের কথা না শুনলে জঙ্গলমহলে বদলি করে দেবেন।

বীরভূম পাড়ুই থানা এলাকার ক্ষতিপুর গ্রামে বিজেপি ও সিপিএমের ‘যৌথ সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রতিবাদসভা ছিল শনিবার। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় কর্মীদের পুলিশকে বোমা মারার পরামর্শ দেওয়া তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং জেলার লাভপুরের বিতর্কিত বিধায়ক মনিরুল ইসলাম (প্রকাশ্য সভায় পায়ের তলা দিয়ে বিরোধীদের পিষে মারার কথা বলায় অভিযুক্ত) সেখানেই এক সঙ্গে এক মঞ্চ থেকে তোপ দাগেন।

অনুব্রতর মন্তব্য, “কিছু ৩৪ বছরের মাল দাঁড়কাক হয়ে আসছে। মা-বোনেরা ঝাঁটা নিয়ে তেড়ে যান। দাঁড়কাক খুব ভীতু হয়। দাঁড়কাক পালাবে।” এর পরেই ওই বিতর্কিত তৃণমূল নেতার হুমকি, “যাঁরা বেশি বাড়াবাড়ি করছেন, করবেন না।

বেশি বাড়াবাড়ি করলে দাঁড়কাককে কী করে মারতে হয় জানি।” একই সভামঞ্চ থেকে মনিরুলের হুঁশিয়ারি, “এক শ্রেণির পুলিশকর্মী অন্য রাজনৈতিক দলের হয়ে দালালি করছেন। এটা বন্ধ করুন। তা না হলে জঙ্গলমহলে বদলি করে দেব. কারণ সরকারটা তৃণমূলের।”

শাসক দলের দুই বিতর্কিত নেতার এমন মন্তব্যে সাড়া পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের মন্তব্য, “বোঝা যাচ্ছে, সরকারটা চালাচ্ছে অনুব্রত-মনিরুলেরা। পুলিশমন্ত্রীর চেয়ে ওদের ক্ষমতাই বেশি। পুলিশ-প্রশাসনও সেটা বুঝতে পারছে। না হলে এত কুকথা বলার পরেও পুলিশের ক্ষমতা নেই, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব বলেছেন, “এটা ওদের (তৃণমূলের) সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ, উপনির্বাচনে কলকাতায় অলোক-রাজু-শান্তনুদের দাপট দেখেছে মানুষ। সেই একই ধারায় চলছেন মনিরুল-অনুব্রতেরা।” রবীনবাবুর অভিযোগ, “ওই তৃণমূল নেতারা হাতে আইন তুলে নিয়েছেন। আর পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছেন দলের শীর্ষ নেত্রীর। এটা উৎকণ্ঠা, উদ্বেগ এবং যন্ত্রণার বিষয়।” শাসক দলের এক শীর্ষ নেতা অবশ্য বলেন, “কী হয়েছে খোঁজ নিই। পরে মন্তব্য করব।” পাড়ুই থানা এলাকার যে অঞ্চলে এ দিন দুই নেতা এত আগ্রাসী বক্তব্য রেখেছেন সেই এলাকা কিছু দিন আগে পর্যন্ত তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেখানে একটু একটু করে জায়গা তৈরি করতে শুরু করেছে বিজেপি। মাসখানেক আগে ওই গ্রামে শাসক দলের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষও বাধে।

এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা-সহ দু’পক্ষের চার জন জখম হন। কিন্তু ওই ঘটনায় পুলিশ কোনও পক্ষেরই কাউকে ধরেনি। এলাকার বিজেপি নেতা তথা দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উজ্জ্বল মজুমদারের দাবি, “ওই এলাকা-সহ সিউড়ি ২ ব্লক জুড়ে আমাদের প্রভাব বাড়ছে। তাতে খেপে গিয়ে অনুব্রত এমন বলেছেন।”

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এমনিতেই বোলপুর থানায় ঢুকে পুলিশের উপরে হামলা করেও তৃণমূলের যুব নেতা সুদীপ্ত ঘোষ এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশকর্মীদের একাংশের মধ্যে ভুল বার্তা গিয়েছে। তার উপরে শাসক দলের এক বিধায়ক এ ভাবে পুলিশকর্মীদের জঙ্গলমহলে বদলি করার হুমকি দিলে তাদের মনোবল তো তলানিতে ঠেকবে!”

বীরভূম জেলা সিপিএমের এক নেতার টিপ্পনী, “মুখ্যমন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী, জঙ্গলমহল তো হাসছে! সেখানে বদলি করা হলে পুলিশকর্মীদের আপত্তি থাকার কথা নয়।”

anubrata manirul threatning parui
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy