‘শিথিল থাকা’ ১৪৪ ধারা ফের ‘বলবত্’ হল পাডুই থানার ওই দুই পঞ্চায়েত এলাকার দুই গ্রামে। তবে সেই অর্থে আগের মতো অবশ্য পুলিশ, র্যাফ ও কমব্যাট বাহিনীর ভিড় চোখে পড়েনি। মঙ্গলডিহি পঞ্চায়েতের চৌমণ্ডলপুর ঢোকার আগে রাঘাইপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে ছিল বাহিনী। অন্য দিকে, বাতিকার পঞ্চায়েতের মাখড়া গ্রামে ঢোকার মুখে হাঁসড়া স্কুল মোড়ের কাছে ছিল বাহিনী। তবে বাসিন্দাদের প্রশ্ন, শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় বলবত্ থাকা ১৪৪ ধারা এলাকায় আর কত দিন থাকবে? বোলপুর মহকুমাশাসক মলয় হালদার বলেন, “উত্সবের জন্য শিথিল থাকা ১৪৪ ধারা বলবত্ রয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন এলাকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এ দিকে, মাখড়া-কাণ্ডে ধৃত গ্রামীণ পুলিশ কর্মী শেখ আসরাফুল-সহ মোট ৬ জনকে পুলিশি হেফাজত থেকে ১০ দিনের জেল হেফজতে পাঠাল আদালত। বুধবার সিউড়ি মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় এই নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, গত মাসের ৩০ তারিখ রাতে তৌসিফ আলি ও শেখ মোজাম্মেলের খুনের ঘটনায় মোট ছয় জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। দুবরাজপুরের খণ্ডগ্রামের বাসিন্দা গ্রামীণ পুলিশ কর্মী শেখ আসরাফুল ছাড়াও বাকি ধৃতদের মধ্যে ছিলেন শেখ শান্তি, শেখ মুজিবর, আজিম শাহ, শেখ আবদুল্লা এবং শেখ আব্বাসউদ্দিনরা। ধৃতদের মধ্যে প্রথম তিন জনের বাড়ি ইলামবাজার থানার ঘুরিশায়। আবদুল্লার বাড়ি পাড়ুই থানার শাহবাজপুর এবং আব্বাসউদ্দিনের বাড়ি ওই থানারই নশণ্ডা গ্রামে। মাখড়ায় নিহত তৌসিফের বাবার অভিযোগে আসরাফুল-সহ প্রথম পাঁচ জনকে ধরা হয়েছিল। ধৃতেরা সকলেই তৃণমূলের লোক বলে জানা গিয়েছিল। নিহত শেখ মোজাম্মেলের দিদি নুরেলা বিবির অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃত আব্বাসউদ্দিন বিজেপির লোক বলে পরিচিত। আগামী ১৫ অক্টোবর ফের সকলকে আদালতে তোলা হবে বলে জানান সরকারি আইনজীবী কুন্তল চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, মাখড়ার ঘটনায় মোট ১৭ জন গ্রেফতার হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চৌমণ্ডলপুরে পাড়ুই থানার ওসি প্রসেনজিত্ দত্ত-সহ একাধিক পুলিশ কর্মী আক্রান্তের ঘটনার পর গ্রাম-সহ পাশাপাশি দু’টি পঞ্চায়েত এলাকায় জারি হয় ১৪৪ ধারা। ওই ১৪৪ ধারার মধ্যে ঘটনাস্থলের লাগোয়া গ্রাম অন্য পঞ্চায়েতের মাখড়াতে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ওই সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হন তিন জন। যাঁদের মধ্যে এক জন বহিরাগত নিয়ে দু’জন তৃণমূল কর্মী এবং একজন বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত। ওই ঘটনার পর তৃণমূল এবং তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে খুন, লুটপাট ও তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ তোলেন পাশাপাশি দুই গ্রামের বিজেপি সমর্থক বাসিন্দারা। পুলিশের বিরুদ্ধে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। এই সন্ত্রাসের আবহে গ্রামছাড়া হন দুই গ্রামের বহু বাসিন্দা। দুই গ্রাম প্রায় জনমানব শূন্য চেহারা নেয়। দুই গ্রামের পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের বাধার মুখে পড়েন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জন প্রতিনিধিরা।
তবে উত্সবের জন্য ১৪৪ ধারায় কিছুটা শিথিল আনে জেলাপ্রশাসন। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসিন্দাদের মধ্যে চাপা আতঙ্ক থাকলেও নতুন করে কোনও গণ্ডগোলের খবর নেই। এ দিনও মাখড়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছিল পুলিশ ক্যাম্প। অশান্তি ঠেকানোর জন্য দুই গ্রামে পুলিশি টহলদারি-সহ ছিল নজরদারির ব্যবস্থাও।
অন্য দিকে, মাখড়া-কাণ্ড নিয়ে ফের সরব হল কংগ্রেস। মাখড়ায় নিহত সোলেমান শেখকে একজন দুষ্কৃতী দাবি করে কংগ্রেস। তারা ক্ষোভ, বলে, সোলেমান বাইরে থেকে এসে হামলা চালাল। অথচ সরকার থেকে ২ লক্ষ টাকা সাহায্য দেওয়া হল। এ ব্যাপারে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করে কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে রামপুরহাট মহকুমাশাসকের মাধ্যমে লিখিত আকারে আবেদন জানান হয়। রামপুরহাট মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “কংগ্রেস নেতৃত্বের আবেদনপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” বিজেপিও মুরারই এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy