Advertisement
E-Paper

বিজেপি প্রার্থী সুব্রতই, বেনজির ধন্দে মতুয়ারা

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত মঞ্জুল-পুত্র সুব্রত ঠাকুরকেই বনগাঁ লোকসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী করল বিজেপি। বর্ধমানে মঙ্গলবার দলের বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে পিতা-পুত্রের উপস্থিতিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ-ই বনগাঁর প্রার্থী হিসাবে সুব্রতর নাম ঘোষণা করেন। মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর মন্ত্রিত্ব, বিধায়ক পদ এবং তৃণমূল ছেড়ে পুত্র সুব্রতকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন পাঁচ দিন আগে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৫

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত মঞ্জুল-পুত্র সুব্রত ঠাকুরকেই বনগাঁ লোকসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী করল বিজেপি।

বর্ধমানে মঙ্গলবার দলের বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে পিতা-পুত্রের উপস্থিতিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ-ই বনগাঁর প্রার্থী হিসাবে সুব্রতর নাম ঘোষণা করেন। মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর মন্ত্রিত্ব, বিধায়ক পদ এবং তৃণমূল ছেড়ে পুত্র সুব্রতকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন পাঁচ দিন আগে। এই ঘটনাকে তৃণমূলে বিরাট ভাঙন হিসাবে দেখাতে এ দিন বর্ধমানে জনসভার মঞ্চে মঞ্জুলকে আলাদা করে সংবর্ধনা দেন অমিত।

তৃণমূল আগেই বনগাঁ কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে সুব্রতর জেঠিমা মমতাবালা ঠাকুরের নাম ঘোষণা করেছে। তার ফলে বনগাঁর ঠাকুরবাড়ির পারিবারিক দ্বন্দ্বে যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক মাত্রা। এ বার একই বাড়ির দু’জন দুই যুযুধান শিবিরের প্রার্থী হওয়ায় পারিবারিক লড়াই এসে পড়ল নির্বাচনের ময়দানেও। এর ফলে মতুয়া ভোট ভাগাভাগি হয়ে নির্বাচনের ফলাফলে প্রভাব ফেলে কি না, তা নিয়ে কৌতূহলী সব পক্ষই।

ঠাকুরবাড়ির ভক্তদের একাংশের বক্তব্য, মতুয়াদের মধ্যে তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস সব দলেরই সমর্থক থাকায় আগেও ওই সমাজের ভোট ভাগাভাগি হয়েছে। এ বারও হবে। তবে মতুয়াদের আর এক অংশ ঠাকুরবাড়ির বিভাজন নিয়ে চিন্তিত। তাঁদের মতে, ওই পরিবার রাজনৈতিক দলের লড়াইয়ে না জড়িয়ে সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে মতুয়া মহাসঙ্ঘ থেকে আলাদা প্রার্থী দিতে পারত। বিষ্ণু বিশ্বাস নামে এক মতুয়া ভক্তের কথায়, “হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের টানে আমরা ঠাকুরবাড়িতে আসি। কিন্তু আর্থিক ও রাজনৈতিক স্বার্থে ঠাকুর পরিবারের বিভাজন দেখে আমরা কষ্ট পাই।”

সুব্রত নিজেও এ দিন বলেছেন, “আমার ধারণা, মতুয়া ভোট আমার দিকেই থাকবে।” এ দিন অমিত তাঁর নাম ঘোষণার পরে বৈঠক থেকে বেরিয়ে সুব্রত বলেন, “অমিতজিকে ধন্যবাদ। ওঁরা আস্থা রেখেছেন। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। অন্য কিছু ভাবছি না।” তৃণমূল প্রার্থী মমতাদেবীর অবশ্য দাবি, “মতুয়াদের মধ্যে সুব্রতর কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই।” সুব্রত আবার এই ডামাডোলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী জেঠিমার আশীর্বাদও চেয়ে রেখেছেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও মতুয়া ভোট ভাগের সম্ভাবনা উড়িয়ে বলেন, “মতুয়াদের ভাবাবেগ আমাদের সঙ্গেই আছে। কারণ মতুয়ারা জানেন, তাঁদের ও ঠাকুরবাড়ির প্রকৃত উন্নয়ন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বড়মাকে তিনি মায়ের মতো দেখেন।”

গত লোকসভায় বনগাঁ কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী ছিলেন দেবেশ দাস। উপনির্বাচনেও তাঁরই প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা। তাঁর বক্তব্য, “মতুয়াদের নিয়ে যে রাজনীতি হচ্ছে, তা গত লোকসভার প্রচারেও বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন যা ঘটছে, তাতে সাধারণ মতুয়ারা বুঝতে পারছেন, তাঁদের নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। ফলে এ বার আমরা আরও বেশি করে মানুষকে বোঝাতে পারব। মতুয়াদের সমর্থনও বেশি পাব।”

সুব্রত গোয়ায় হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে লেখাপড়া করে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট পড়তে। সেখানকার হোটেলে কাজও করেছেন। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাড়ি ফেরেন সুব্রত। তার ছ’মাস পর তিনি সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক হন।

আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি বনগাঁ লোকসভা এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচন। কৃষ্ণগঞ্জে বিজেপি প্রার্থী হচ্ছেন মানবেন্দ্র রায়। কল্যাণীর বি ব্লকের বাসিন্দা মানবেন্দ্রবাবু বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শস্যবিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। বিজেপির নদিয়া জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দী বলেন, “আমরা সকলেই মানবেন্দ্রবাবুকে জেতানোর জন্য মাঠে নেমে পড়েছি।” বিজেপির কৃষক মোর্চার সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার, ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটে চাকদহ কেন্দ্রের প্রার্থী বিশ্বজিৎ ঘোষ-সহ কয়েক জন অবশ্য এ দিনই কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে কল্যাণবাবুর অপসারণ চান। তাঁদের অভিযোগ, কল্যাণবাবু স্বচ্ছ এবং গণতান্ত্রিক ভাবে কাজ করছেন না। কল্যাণবাবু অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

simanta moitra bangaon bye election subrata thakur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy