Advertisement
E-Paper

বাধাকে পায়ের ভৃত্য করেই ওঁদের উড়ান

পরীক্ষার আগে টানা চার-পাঁচ মাস বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়েছে ওঁদের কাউকে। কারও বা দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে পরীক্ষার কান ঘেঁষে। কারও চলতে লাগে লাঠি। কারও বা স্মৃতিশক্তি কম, পড়া মনে রাখাটাই চ্যালেঞ্জ! বুধবার প্রকাশিত সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল জানাচ্ছে, ওঁরা পাশ করেছেন ভাল ভাবেই। ওঁদের কেউ কেউ নিজের সমস্যা জানিয়েছেন নিঃসঙ্কোচে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৪ ০২:৫০
স্নেহা মোহতা ও সুরভি বৈদ

স্নেহা মোহতা ও সুরভি বৈদ

পরীক্ষার আগে টানা চার-পাঁচ মাস বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়েছে ওঁদের কাউকে। কারও বা দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে পরীক্ষার কান ঘেঁষে। কারও চলতে লাগে লাঠি। কারও বা স্মৃতিশক্তি কম, পড়া মনে রাখাটাই চ্যালেঞ্জ!

বুধবার প্রকাশিত সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল জানাচ্ছে, ওঁরা পাশ করেছেন ভাল ভাবেই। ওঁদের কেউ কেউ নিজের সমস্যা জানিয়েছেন নিঃসঙ্কোচে। কারও বা সে-সব বিষয়ে কথা বলতে বাধে। তবে তাতে যে বিশেষ কিছু যায়-আসে না, ফল বেরোনোর পরে ওঁদের মুখের উজ্জ্বলতায় তারই ঘোষণা! সর্বোচ্চ নম্বরের দৌড়ে না-থাকলেও প্রতিকূলতা ঠেলে পরীক্ষায় সফল হয়ে ওঁরাই আসল জয়ী।

যেমন, মহাদেবী বিড়লা গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের সুরভি বৈদ। গত বছরের মাঝামাঝি জ্বরে পড়ে যান তিনি। ২০-২১ দিনেও জ্বর কমছে না দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন সুরভির পরিবারের লোকজন। চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে শিরদাঁড়ায় গোলমাল ধরা পড়ে ওই তরুণীর। ওই অসুখের জেরেই পিঠে ব্যথা। দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকতে সমস্যা হতো সুরভির। টানা তিন-চার মাস শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “মাঝেমধ্যে স্কুলে যেতাম। দু’-একটি পিরিয়ড করতাম। আবার গিয়ে সিক-রুমে শুয়ে পড়তাম। এ ভাবেই চলেছে। অনেকে আগামী বছর পরীক্ষা দিতে বলেছিলেন। কিন্তু আমার লক্ষ্য ছিল, এ বারেই পরীক্ষা দেব এবং ভাল নম্বর পাব।” শিরদাঁড়ায় সমস্যায় চিকিৎসাধীন সুরভি বাণিজ্য শাখায় ৯৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। ভবিষ্যতে সিভিল সার্ভিসে যুক্ত হতে চান তিনি।

ওই স্কুলেরই স্নেহা মোহতা গত বছর বড়দিনে পার্ক স্ট্রিট থেকে ফেরার পথে বড়সড় দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। তাঁর হাত ভেঙে যায়, অস্ত্রোপচারও করতে হয়। নার্সিংহোম থেকে ছাড়া পেলেও জানুয়ারিতে প্রি-বোর্ড পরীক্ষা দিতে পারেননি। স্নেহার বাঁ হাতে আপাতত স্টিলের পাত লাগানো। হাতে এখনও ব্যথা। এই অবস্থায় পরীক্ষা দিয়ে ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন বাণিজ্য শাখার ছাত্রী স্নেহা। তিনি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হতে চান।

সল্টলেকের একটি সিবিএসই স্কুলের অধ্যক্ষা জানালেন সেখানকার এক ছাত্রীর কথা, যে ‘অটিজ্ম’-এ আক্রান্ত। কিন্তু প্রিয় ছাত্রীর নাম-ঠিকান কিছুতেই জানাতে চান না অধ্যক্ষা। বলেন, “কিছুই মনে রাখতে পারত না মেয়েটি। বারবার একই পড়া পড়িয়ে, পাখিপড়ার মতো করে মুখস্থ করিয়ে আমাদের শিক্ষিকারা এবং ওর পরিবারের লোকজন মেয়েকে পাশ করিয়ে কার্যত একটা অসাধ্য সাধন করেছেন।” ৪৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন ওই ছাত্রী।

এ দিন পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরে বিভিন্ন স্কুলের অধ্যক্ষ-অধ্যক্ষারা জানান, এ বারের পরীক্ষায় বাণিজ্য শাখার ফলাফল বিজ্ঞান ও কলা শাখার থেকে অনেক ভাল। বিজ্ঞানে ছাত্রছাত্রীরা যত নম্বর পেয়েছেন, অনেক বাণিজ্যের পড়ুয়াই তার থেকে বেশি পেয়ে এ বারের পরীক্ষায় তাঁদের টপকে গিয়েছেন।

cbse result sneha surabhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy