Advertisement
E-Paper

বৈধতার প্রশ্নে গণভোট নিয়ে নীরব আচার্য

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগ চেয়ে ছাত্রছাত্রীরা যে-গণভোটের পথ নিয়েছেন, তার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। এই অবস্থায় রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ওই গণভোট নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না। রবিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যপাল জানান, ছাত্রছাত্রীদের গণভোটের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় তিনি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪৮

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগ চেয়ে ছাত্রছাত্রীরা যে-গণভোটের পথ নিয়েছেন, তার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। এই অবস্থায় রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ওই গণভোট নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না। রবিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যপাল জানান, ছাত্রছাত্রীদের গণভোটের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় তিনি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না।

ঘেরাওকারী ছাত্রছাত্রীদের উপরে পুলিশি নিগ্রহের প্রতিবাদে দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্যেই আচার্যের অনুমোদন নিয়ে অভিজিৎবাবুকে উপাচার্য-পদে স্থায়ী ভাবে বসায় রাজ্য সরকার। স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ের জন্য রাজ্যপালের কাছে তিনটি নামের যে-তালিকা পাঠানো হয়েছিল, অভিজিৎবাবুর নামই ছিল তার শীর্ষে। যাদবপুরে পুলিশি তাণ্ডবের পরে এক দল শিক্ষাবিদ ত্রিপাঠীর কাছে গিয়ে স্থায়ী উপাচার্য বেছে নেওয়ার জন্য নিজের বিচার-বিবেচনাকেই কাজে লাগাতে অনুরোধ করেন। আচার্য শেষ পর্যন্ত স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে অভিজিৎবাবুর নামেই সিলমোহর দেন। রাজ্য সরকার বরাবরই অভিজিৎবাবুর পাশে। ত্রিপাঠী এ বার পড়ুয়াদের গণভোট নিয়ে মন্তব্য করতে না-চাওয়ায় অনেকেই মনে করছেন, সরকারের মতো রাজ্যপালও উপাচার্যের পাশেই দাঁড়ালেন। আর তাতে উপাচার্যের স্থায়ী পদে অবস্থান আরও দৃঢ় হল অভিজিৎবাবুরই।

তাঁদের গণভোট নিয়ে আচার্য-রাজ্যপালের ভূমিকায় আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা অবশ্য মোটেই আশ্চর্য নন। রবিবার আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা জানান, অভিজিৎবাবুকে স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের সময়েই তাঁরা আচার্যের মনোভাব বুঝে গিয়েছিলেন। তাই তাঁর এ দিনের মন্তব্য নিয়ে তাঁরা বিচলিত নন। আন্দোলনকারী এক ছাত্র জানান, কলা শাখার গণভোট বুঝিয়ে দিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অংশের সংখ্যাগরিষ্ঠ পড়ুয়া অভিজিৎবাবুকে উপাচার্য-পদে চান না। ১১-১২ নভেম্বর বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গণভোটের পরে পড়ুয়াদের অবস্থানটা আরও পরিষ্কার হবে।

পড়ুয়াদের গণভোটের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে আচার্যের নীরবতা নিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও শিক্ষক এ দিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা এবং দৈনন্দিন কাজকর্মের ক্ষেত্রে গণভোটের রায় গুরুত্বপূর্ণ বলেই তাঁদের একাংশের ধারণা। উপাচার্যের বিরুদ্ধে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছাত্রছাত্রীর বিমুখতার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের সুষ্ঠু পরিবেশ কবে ফিরবে, সেই প্রশ্নও তুসছেন তাঁরা। অনেক শিক্ষক এবং আধিকারিক এই নিয়ে উদ্বিগ্নও।

মূলত অভিজিৎবাবুর ইস্তফার প্রশ্নে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার গণভোটের আয়োজন করেছিলেন কলা শাখার ছাত্রছাত্রীরা। শুক্রবার তার ফলপ্রকাশের পরে দেখা যায়, ২৯৭০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ২৬০২ জন ভোট দিয়েছেন। ভোটারদের মধ্যে মাত্র ৮০ জন অভিজিৎবাবুকে উপাচার্য হিসেবে চান। ২৫ জনের ভোট বাতিল হয়েছে। বাকি ২৪৯৭ (যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের ৯৭ শতাংশ) জনই অভিজিৎবাবুর পদত্যাগের পক্ষে রায় দিয়েছেন। যৌন নিগ্রহের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে-কমিটি (আইসিসি) আছে, তা পুনর্গঠনের দাবির পক্ষেও ভোট দিয়েছেন প্রায় ৯৭ শতাংশ পড়ুয়া। অভিজিৎ-বিরোধীরা এখন বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার ছাত্রছাত্রীদের গণভোটের দিকে তাকিয়ে আছেন।

jadavpur university mass voting abhijit chakrabarty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy