Advertisement
E-Paper

বিভাজন-কৌশলে অধীর বিঁধলেন মমতার দলকেই

ভোটের মুখে তৃণমূলের মধ্যে বিভাজন উস্কে দেওয়ার কৌশল নিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। কংগ্রেসের ‘পরিবারতন্ত্র’ মানবেন না বলে প্রচারে নিয়মিতই বলছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ তিনি নিজেই তাঁর দলে ‘পরিবারতন্ত্র’ কায়েম করছেন বলে পাল্টা অভিযোগ তুলে অধীরবাবু সোমবার মন্তব্য করেছেন, “মমতা নিজের ভাইপোকে পুরোভাগে এনেছেন। কিন্তু মুকুল রায়ের ছেলে জনপ্রতিনিধি হলেও তাঁকে ভোটে প্রার্থী করেননি!’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৫৫
প্রেস ক্লাবে অধীর চৌধুরী। ছবি: নিজস্ব চিত্র।

প্রেস ক্লাবে অধীর চৌধুরী। ছবি: নিজস্ব চিত্র।

ভোটের মুখে তৃণমূলের মধ্যে বিভাজন উস্কে দেওয়ার কৌশল নিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। কংগ্রেসের ‘পরিবারতন্ত্র’ মানবেন না বলে প্রচারে নিয়মিতই বলছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ তিনি নিজেই তাঁর দলে ‘পরিবারতন্ত্র’ কায়েম করছেন বলে পাল্টা অভিযোগ তুলে অধীরবাবু সোমবার মন্তব্য করেছেন, “মমতা নিজের ভাইপোকে পুরোভাগে এনেছেন। কিন্তু মুকুল রায়ের ছেলে জনপ্রতিনিধি হলেও তাঁকে ভোটে প্রার্থী করেননি!’’ দলে প্রার্থী মনোনয়নে মুকুলবাবুর সুপারিশ মমতা মানেননি বলেও অভিযোগ করেন অধীর। একই ভাবে এ বারের ভোটে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রচারে তেমন ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না বলেও তাঁর মন্তব্য।

তৃণমূলের মধ্যে বিভাজন তৈরির এই চেষ্টার পাশাপাশি এ বারের ভোটকে সামনে রেখে দু’বছর বাদে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকে রাজনৈতিক ভাবে আরও প্রাসঙ্গিক করে তোলার লক্ষ্যের কথাও বুঝিয়ে দিয়েছেন অধীর। কলকাতা প্রেস ক্লাবে এ দিন ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে অধীর জানান, কংগ্রেসের আসন ধরে রাখা, নতুন আসন সংযোজন করা এবং ভোট বাড়ানো আপাতত এটাই তাঁদের লক্ষ্য। তাঁর বক্তব্য, “তিন বছর আগে জোট করে কংগ্রেস রাজ্যে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছিল। তবে বিলম্বে হলেও এ বারের ভোটে আমরা কংগ্রেসের প্রাসঙ্গিকতা পুনরুদ্ধারে নেমেছি। আগামী দিনে রাজ্যে কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।” কিন্তু আরও প্রাসঙ্গিক হওয়ার লড়াইয়ের মাঝেই প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দলের একাংশের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে। তবে অধীরের মতে, “কংগ্রেসের কোনও নেতার ক্ষোভ মানে গোটা দলের ক্ষোভ, এমন সরলীকরণ করা ঠিক নয়। শুরুতে কিছু ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলেও এখন কিছু নেই। সবই অতীত। ক্লোজড চ্যাপ্টার!”

নিজেদের সংগঠন প্রসারিত করার কথা বলার ফাঁকেই তৃণমূল নেত্রীকে এ দিন পাল্টা আক্রমণে গিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসকে বিঁধতে মমতা ‘পরিবারতন্ত্রকে ভাঙা’র ডাক দিচ্ছেন। অধীর এ দিন পাল্টা অভিযোগ করেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো দলে পরিবারতন্ত্র কায়েম করছেন! নিজের ভাইপোকে তুলে ধরার সুযোগ করে দিলেন!” তৃণমূল নেত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার যে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী, সেই কেন্দ্রের অর্ন্তগত সরিষাতে এ দিন প্রচারে গিয়েও অধীর বলেছেন, “উনি মুখে বলছেন পরিবারতন্ত্র মানি না! আবার নিজের ভাইপোকে প্রার্থী করেছেন!” তবে অধীরের এই অভিযোগ নিয়ে এ দিন মুখ খোলেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, আজ, মঙ্গলবার তাঁরা এর জবাব দেবেন।

তৃণমূলে গোষ্ঠী-বিভাজন খুঁচিয়ে তুলতে চেয়েই অধীরের অভিযোগ, দলে মুকুলবাবু, শুভেন্দুদের কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা চলছে। তাঁর প্রশ্ন, “যে দীনেশ ত্রিবেদী দলের বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন, এ বারও মমতা তাঁকে ব্যারাকপুরে প্রার্থী করেছেন। কেন মুকুল রায়ের ছেলেকে ওখানে প্রার্থী করা হল না?” মুকুলবাবু অবশ্য অধীরের বক্তব্যকে কোনও গুরুত্ব দিতে নারাজ। পাশাপাশিই এ দিন অধীরের মন্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত বিধানসভা ভোটের প্রচারে যে ভাবে শুভেন্দুকে ব্যবহার করেছিলেন, এখন কি সে ভাবে ব্যবহার করছেন? কারণ, শুভেন্দু জনপ্রিয়তায় বাংলার নেতা হয়ে যাচ্ছিলেন। তাই তাঁকে আবার মেদিনীপুরে নেতা করে রেখে দেওয়া হল!’’ প্রচারের ফাঁকে অধীরবাবুর এই মন্তব্য শুনে শুভেন্দু অবশ্য বলেন, “উনি ওঁর দল সামলান। আমাদের দলের ব্যাপারে মাথা না ঘামিয়ে যে ৬টা আসন ওঁদের রয়েছে, তা ধরে রাখার চেষ্টা করুন!” এক ধাপ এগিয়ে শুভেন্দু আরও বলেন, “আমাদের দলে এক জনই নেতা। তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”

adhir mamata tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy