Advertisement
E-Paper

বাসভাড়ার জট কাটাতে আজই বৈঠক চান মদন

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ফের বাস ধর্মঘটের ডাক দিল বিভিন্ন মালিক সংগঠন। ২৫ থেকে ২৭ জুন, তিন দিন বাস-মিনিবাস রাস্তায় বার করা হবে না বলে সোমবার জানিয়ে দেন রাজ্যের ছ’টি বাস-মালিক সংগঠনের নেতারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৪ ০৩:৩৯

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ফের বাস ধর্মঘটের ডাক দিল বিভিন্ন মালিক সংগঠন। ২৫ থেকে ২৭ জুন, তিন দিন বাস-মিনিবাস রাস্তায় বার করা হবে না বলে সোমবার জানিয়ে দেন রাজ্যের ছ’টি বাস-মালিক সংগঠনের নেতারা।

বাস্তব পরিস্থিতি যে বাস-মালিক সংগঠনের দাবি সমর্থন করে, ঠারেঠোরে তা স্বীকার করলেও তিন দিনের ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। একই সঙ্গে বাস-মালিকদের আলোচনায় বসারও আহ্বান জানান তিনি। তাঁর বক্তব্য, ধর্মঘট নয়, আলোচনাতেই রাস্তা খুঁজে বার করতে হবে। “জ্বালানির দাম বাড়ায় বাস-মালিকেরা যে অসুবিধেয় পড়েছেন, তা মানছি। কিন্তু যেখানে প্রচণ্ড গরমে মুখ্যমন্ত্রী স্কুলছুটি বাড়িয়ে দিয়েছেন, সেখানে বাস ধর্মঘট হলে সাধারণ মানুষ অসুবিধেয় পড়বেন। আমি ওঁদের মঙ্গলবার বেলা ৩টেয় পরিবহণ ভবনে এসে আলোচনায় বসতে বলেছি,” বলেছেন মদনবাবু। তবে বাসভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে সরকার কিছু ভাবছে কি না, সেই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি মন্ত্রী। তাঁর কথা, “বাসভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে আমি একা কোনও সিদ্ধান্ত নিই না।”

মন্ত্রীর কাছ থেকে তাঁরা কোনও আলোচনার ডাক পাননি বলে জানান জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটসের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরিষ্কার কথা, “বাসভাড়া কত বাড়বে, একমাত্র তা নিয়েই আমরা আলোচনায় বসতে পারি। না-হলে আমাদের ঘোষণা অনুযায়ী তিন দিনের ধর্মঘট হবেই।”

রাজ্যে শেষ বার বাসভাড়া বাড়ানো হয়েছিল ২০১২ সালের অক্টোবরে। তার পর থেকে কয়েক দফায় ডিজেলের দাম বাড়লেও বাসভাড়া বাড়েনি। গত অক্টোবরে পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে বাস-মালিক সংগঠনগুলির নেতারা দেশের বিভিন্ন শহরের বাসভাড়ার তালিকা তাঁর কাছে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজোর ঠিক আগে বাসভাড়া বাড়াতে রাজি না-হওয়ায় মালিকদের অপেক্ষা করতে বলেন পরিবহণমন্ত্রী। তার পরে, গত জানুয়ারিতে বাস ধর্মঘটের ডাক দেয় মালিক সংগঠন। তখন সরকারের তরফে জানানো হয়, সামনে লোকসভা ভোট। তার পরে বাসভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু লোকসভা ভোট মিটে যাওয়ার পরেও বাসভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে সরকারের তরফে কোনও আলোচনা না-হওয়ায় তাঁরা ধর্মঘট ডাকতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়ে দেন বাস-মালিকেরা।

সকালে রাজ্যের ছ’টি বাস-মালিক সংগঠনের বৈঠকের পরে তিন দিনের ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। তপনবাবু জানান, ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে তাঁরা ৩০ মে পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। ২ জুন চিঠি দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। তখনই জানানো হয়েছিল, সরকার ১৫ জুনের মধ্যে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে সদর্থক পদক্ষেপ না-করলে ১৬ জুন বৈঠকে বসে চূড়ান্ত আন্দোলনের কথা ঘোষণা করা হবে। “ভেবেছিলাম, এর মধ্যে সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু তা হয়নি,” ক্ষোভের সঙ্গে বললেন তপনবাবু।

বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের নেতা দীপক সরকারের বক্তব্য, তাঁরা যে লোকসান করে বাস চালাচ্ছেন, সেটা সরকারও জানে। কিন্তু ভোটব্যাঙ্ক বজায় রাখতে তারা বাসভাড়া বাড়াতে চাইছে না। দীপকবাবু বলেন, “এটা দীর্ঘদিন চলতে পারে না। সর্বস্তরের মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। সরকারকে ভাড়া বাড়াতেই হবে।”

এ ভাবে চললে পরিবহণ শিল্পই মুখ থুবড়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেন মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির অবশেষ দা।ঁ তিনি বলেন, “আমরা তো সংসারই চালাতে পারছি না। কিস্তি দিতে না-পারায় ব্যাঙ্ক অনেক বাস টেনে নিয়ে গিয়েছে। তাই আমরা ধর্মঘট ডাকতে বাধ্য হয়েছি।”

কী ভাবছে সরকার? ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে রাজ্য সরকার অন্যান্য বারের থেকে এ বার অনেকটাই নরম। পরিবহণ দফতরের এক শীর্ষ কর্তার মতে, এখন সামনে কোনও ভোট নেই। জ্বালানির দাম যে-ভাবে

বেড়েছে, তাতে বাসভাড়া বাড়ানো ছাড়া উপায়ও নেই। পরিবহণ দফতরের তাবড় কর্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, পুরোটাই নির্ভর করছে মুখ্যমন্ত্রীর উপরে। তিনি না-চাইলে এ বারেও ভাড়া বাড়বে না।

transport strike transport minister madan mitra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy