Advertisement
E-Paper

ভাইয়ের বদলা ভাইপো, দলে টানতে বংশে টান

মণ্ডল কা বদলা মণ্ডল! অনুব্রতের জবাবে দুধকুমার! প্রথমে হিট করেছিল এই পালা। এ বার এল ভাই কা বদলা ভাইপো! তৃণমূল বনাম বিজেপি-র রাজনীতিতে এখন এমনই দড়ি টানাটানি! তৃণমূল নিয়েছিল বিজেপি নেতার ভাইকে। বিজেপি আবার পাল্টা দিল তৃণমূল নেতার ভাইপোকে টেনে এনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:১৫
বিজেপির রাজ্য দফতরে রাহুল সিংহের পাশে মুকুল রায়ের ভাইপো দিব্যেন্দু রায় (বাঁ দিকে)।

বিজেপির রাজ্য দফতরে রাহুল সিংহের পাশে মুকুল রায়ের ভাইপো দিব্যেন্দু রায় (বাঁ দিকে)।

মণ্ডল কা বদলা মণ্ডল! অনুব্রতের জবাবে দুধকুমার! প্রথমে হিট করেছিল এই পালা। এ বার এল ভাই কা বদলা ভাইপো! তৃণমূল বনাম বিজেপি-র রাজনীতিতে এখন এমনই দড়ি টানাটানি!

তৃণমূল নিয়েছিল বিজেপি নেতার ভাইকে। বিজেপি আবার পাল্টা দিল তৃণমূল নেতার ভাইপোকে টেনে এনে। তবে এই টানাটানির সঙ্গে ‘জালিয়াতি’র অভিযোগ জড়িয়ে গিয়ে গোটা প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। যদিও বিজেপি-র এক নেতার মন্তব্য, “ঢিল মারলে পাটকেল খেতে হবে! এখানে নো মার্সি!”

দিন কয়েক আগেই শহিদ মিনার ময়দানের সমাবেশ-মঞ্চ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের ভাই সুদীপ সিংহের হাতে তৃণমূলের পতাকা ধরিয়েছিলেন শাসক দলের ‘যুবরাজ’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পাল্টা দিতে রাহুলবাবু বুধবার বিজেপির রাজ্য দফতরে হাজির করিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের ভাইপো দিব্যেন্দু রায়কে! রাহুলবাবুর মন্তব্য, “এটা কিন্তু জাল নয়! আসলি! তৃণমূলের কারবার জালিয়াতির!”

তাঁর ভাই গোড়া থেকেই তৃণমূল করে বলে জানিয়েছিলেন রাহুলবাবু। তাঁর হাতে পতাকা তুলে দেওয়ার ‘নাটক’কে কটাক্ষ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেছিলেন, ভালই হল বিজেপির চাপে ভাইয়ের পদোন্নতি হল! আর ভাইপোর গেরুয়া শিবিরে যোগদানের খবর শুনে মুকুলবাবু দাবি করেছেন, তাঁর এমন কোনও ভ্রাতুষ্পুত্রই নেই! মুকুলবাবুর কথায়, “আমি বাপ-মায়ের এক মাত্র ছেলে। আমার মায়ের দিকে, বাবার দিকে, পিসির দিকে, কাকার দিকে, কোথাও এমন কেউ নেই!”

বস্তুত, কাকার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কটা তেমন জোরদার নয় বলেই হয়তো এ দিন বেশ কুণ্ঠাবনত দেখিয়েছে দিব্যেন্দুবাবুকে। বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, মুকুলবাবুর বাবা এবং দিব্যেন্দুবাবুর দাদু সম্পর্কে দুই ভাই। সেই সূত্রেই দিব্যেন্দু মুকুলবাবুর ভাইপো। সেই পারিবারিক ‘মাহাত্ম্য’ গুণেই তাঁকে সংবাদমাধ্যমের সামনে ঘটা করে পেশ করা হয়েছে। কিন্তু স্বয়ং দিব্যেন্দু বলেছেন, “আমি আগে কোনও দলে ছিলাম না। পারিবারিক পরিচয়কে বড় করে দেখছিও না।

সোমবার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর
রাহুলের ভাই সুদীপ সিংহ।—নিজস্ব চিত্র।

আগে থেকেই দূরত্ব ছিল।” বিজেপির নীতি-আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই তিনি রাহুলবাবুদের দলে কার্যকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করলেন বলে জানিয়েছেন দিব্যেন্দু। কিন্তু মুকুল-বংশ থেকে আমদানি বলে যাঁকে দেখানো হচ্ছে, তাঁকে অত সহজে ছাড়ছে কে? তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি যে দলে এলেন, তারা তাঁর কাকার শাস্তি (সারদা-কাণ্ডে) চায়। তিনিও কি তা-ই চান? দৃশ্যতই বিড়ম্বিত দিব্যেন্দু বলেন, “আমি কিছু দাবি করছি না। কেউ ব্যক্তিগত ভাবে অপরাধী হলে শাস্তি পাবেন, না হলে পাবেন না! আমার দাবি করার কিছু নেই!”

দিব্যেন্দু বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, তাঁর ব্যক্তিগত পরিচয়েই তিনি বিজেপিতে এসেছেন। বলেছেন, “পরিবারের সম্পর্কটা দিয়ে আমি আসিনি।” তা হলে ব্যক্তিগত পরিচয়টা কী? উত্তর না দিয়েই উঠে পড়েছেন দিব্যেন্দু। উত্তর দিতে পারেননি বিজেপি নেতৃত্বও। ঘটনাপ্রবাহ দেখে সিপিএমের এক রাজ্য নেতার মন্তব্য, “নেতাদের পরিবার নিয়ে টানাটানি, এটা কোনও রাজনীতি? তা-ও আবার সেখানে জাল বেরোচ্ছে!”

মুকুলবাবুর তথাকথিত ভাইপোর সঙ্গেই একটি বাংলা ব্যান্ডের দুই শিল্পী অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় ও শুভাশিস রায়, অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের প্রেসিডেন্ট, চিত্রশিল্পী জহর দাশগুপ্ত এবং তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ছেড়ে আসা ইন্দ্রাণী দত্ত চৌধুরী এ দিন বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। বিধাননগরে এ দিনই দলীয় বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য স্থানীয় কংগ্রেস নেতা সঞ্জীব সিংহচৌধুরী, চিত্র পরিচালক শ্রেয়া দাস-সহ শ’খানেক লোকের হাতে বিজেপির পতাকা তুলে দিয়েছেন। টানাটানির বাজারে কার হাতে কার পতাকা কখন উঠে যাচ্ছে, তা নিয়েই অবশ্য প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে ভাই-ভাইপোদের কাহিনি!

bjp tmc mukul roy nephew dibyendu roy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy