ঝাড়গ্রাম এসপি অফিসে তিন রাজ্যের পাঁচ জেলার পুলিশের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটকে কেন্দ্র করে জঙ্গলমহলে ফের হামলা ও মাওবাদী সক্রিয়তার আশঙ্কা রয়েছে। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডের পাঁচটি পুলিশ জেলার আধিকারিকদের সমন্বয় বৈঠকে তাই মাওবাদীদের গতিবিধি রোধে নিরাপত্তা জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়। এ দিনের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ, বালাশোর এবং ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার ডিএসপি, এসডিপিও, আইসি, ওসি স্তরের পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা ভোটের আগেই ওই তিন রাজ্যের পুলিশ মাওবাদীদের খোঁজে যৌথ অভিযান চালাবে। এছাড়া মাওবাদীদের গতিবিধি সংক্রান্ত তথ্যও আদান-প্রদান করা হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ড সীমান্ত দিয়ে প্রায়ই বেলপাহাড়িতে মাওবাদীরা যাতায়াত করছে। আবার ওড়িশা সীমান্তে নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুরেও ফের মাওবাদীরা সক্রিয় হচ্ছে বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে সব রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। বৈঠকে পুলিশ আধিকারিকেরা বলেন, ২০১১ সালের নভেম্বরে জামবনির বুড়িশোলের জঙ্গলে যৌথ বাহিনীর গুলিতে মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষেনজির মৃত্যুর পর জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের প্রভাব একেবারেই কমে যায়। তারপর থেকে একের পর এক শীর্ষ মাওবাদী নেতারা ধরা পড়েন। জাগরী, সুচিত্রা, রাজারামের মতো অনেক মাওবাদী নেতা আত্মসমর্পণ করেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই মাওবাদীরা কোনও নাশকতার ছক কষতে পারে বলে সন্দেহ পুলিশের। বৈঠকে ঠিক হয়, মাওবাদীরা তাঁদের হামলার নকশা বদলাচ্ছে। তাই রাস্তার ধারে সন্দেহজনক কোনও বস্তু পড়ে থাকতে দেখলেই ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশ আধিকারিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন, আকাশ, বিকাশ ও রঞ্জিত পালের মতো শীর্ষ মাওবাদী নেতারা এখনও অধরা। তাই তাঁদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা এবং কোনও খবর পেলেই ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গত মঙ্গলবার বিনপুরের মুচিবাঁধের কাছে কংসাবতী নদীর ফিডার ক্যানালের কালভার্টের তলা থেকে একটি নকল মাইন উদ্ধার হয়। ওই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতারও করা হয়। তাই বৈঠকে লোকসভা ভোটের সময় বাড়তি সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।
ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের নেতৃত্বে এদিনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈকে উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষও। লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার ৯৮৯টি বুথের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে ছ’হাজার রাজ্য পুলিশ ও ৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বৈঠক শেষে ভারতী ঘোষ বলেন, “নির্বাচনে নির্বিঘ্ন করতে এ দিন বৈঠকে আলোচনা হয়।” বৈঠকে উপস্থিত জলেশ্বরের এসডিপিও সুরেশ চন্দ্র পথী ও ঘাটশিলার এসডিপিও আরিফ এক্রাম বলেন, “লোকসভা ভোটের আগে মাওবাদীদের গতিবিধি রুখতে এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়। তিন রাজ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy