Advertisement
E-Paper

মুকুলের সঙ্গেই মিছিলে অভিযুক্ত নেতা

দলের পঞ্চায়েত সদস্যাকে গণধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা স্বপন দাস খেজুরিতে মিছিল করেছিলেন বুধবার। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সদরে তৃণমূলের মিছিলে হাঁটতে দেখা গেল খুন-ধর্ষণের হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসকে। মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সঙ্গে বেশ কয়েক কদম একই সঙ্গে হাঁটতে দেখা যায় তাঁকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৫২
মেদিনীপুর শহরে তৃণমূলের মিছিলে হাঁটছেন অভিযুক্ত উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস (ডান দিকে, হলুদ পাঞ্জাবি পরা)। মিছিলে রয়েছেন মুকুল রায়ও। বৃহস্পতিবার সৌমেশ্বর মণ্ডলের তোলা ছবি।

মেদিনীপুর শহরে তৃণমূলের মিছিলে হাঁটছেন অভিযুক্ত উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস (ডান দিকে, হলুদ পাঞ্জাবি পরা)। মিছিলে রয়েছেন মুকুল রায়ও। বৃহস্পতিবার সৌমেশ্বর মণ্ডলের তোলা ছবি।

দলের পঞ্চায়েত সদস্যাকে গণধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা স্বপন দাস খেজুরিতে মিছিল করেছিলেন বুধবার। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সদরে তৃণমূলের মিছিলে হাঁটতে দেখা গেল খুন-ধর্ষণের হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসকে। মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সঙ্গে বেশ কয়েক কদম একই সঙ্গে হাঁটতে দেখা যায় তাঁকে।

দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে একই সভামঞ্চে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত নেতাদের উপস্থিতি তৃণমূলে নতুন নয়। তা নিয়ে বিতর্কও হয়েছে। কিন্তু এ দিনের মিছিলে অভিযুক্ত উপ-পুরপ্রধানের থাকা নিয়ে অস্বস্তিকর কিছু দেখছেন না মুকুলবাবু। তাঁর বক্তব্য, “অনেকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে। তার মানেই তিনি দোষী নন। যতক্ষণ না দোষ প্রমাণ হচ্ছে, ততক্ষণ দলীয় কর্মসূচিতে আসতে বাধা নেই।” এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে না? মুকুলের জবাব, “প্রশ্নই ওঠে না।”

তবে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের কটাক্ষ, “মানুষকে সন্ত্রস্ত করে ভোট লুঠ করা, শাসক দলের লক্ষ্য। তাই মিছিলে আসামীদের পাশে নিয়ে হাঁটতে হচ্ছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাকে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের টিপ্পনী, “এটাই তৃণমূলের স্বাভাবিক সংস্কৃতি।”

এ দিন সকাল থেকে কার্যত মিছিলের আয়োজকের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে অভিযুক্ত জিতেনবাবুকে। কখনও ব্যানার টাঙানোর তদারকি করেছেন, কখনও সামলেছেন তৃণমূল সমর্থকদের। জিতেনবাবুর বক্তব্য, “মিছিলে আসতে কেউ নিষেধ করেনি। উল্টে ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি হিসেবে লোকজন আনার দায়িত্ব ছিল আমার উপরে।”

মেদিনীপুর শরৎপল্লির বাসিন্দা এক বিধবা সম্প্রতি অভিযোগ করেন, জমি বিক্রির প্রাপ্য টাকা চাইতে জমি বিক্রিতে মধ্যস্থতা করা স্থানীয় কাউন্সিলর জিতেনবাবুর কাছে যান তিনি। তখনই জিতেনবাবু তাঁর তরুণী মেয়েকে খুন-ধর্ষণের হুমকি দেন। পরে লোকজন নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়ে ওই একই হুমকি দিয়ে যান তিনি। পুলিশ প্রথমে নিতে না চাইলেও পরে অভিযোগ নেয়। অভিযোগকারিণী মা ও মেয়ে মেদিনীপুরের চতুর্থ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুস্মিতা খানের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। বুধবার মায়ের আর বৃহস্পতিবার মেয়ের জবানবন্দি নেওয়া হয়।

অভিযুক্ত উপ-পুরপ্রধান মিছিলে হাঁটছেন, তবু তাঁকে ধরা হচ্ছে না কেন? পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের দাবি, “তদন্ত চলাকালীন কাউকে এ ভাবে ধরা যায় না। ওই হুমকির অভিযোগের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। ফলে, উপ-পুরপ্রধানের দলীয় কর্মসূচিতে যেতে কোনও বাধা নেই।”

বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে এ দিন বিকেলে মেদিনীপুর কলেজ মাঠের সামনে থেকে তৃণমূলের মিছিল শুরু হয়। মিছিল শেষে গাঁধী মূর্তির নীচে বক্তব্য রাখেন মুকুলবাবু। এখানেই মঙ্গলবার সভা করার কথা ছিল বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির। তবে পুলিশের অনুমতি না পেয়ে বড় মিছিল করে বিজেপি। তার পরে তড়িঘড়ি মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। প্রথমে মুকুলবাবুর আসার কথা ছিল না। মুকুল বলেন, “এ দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভায় দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আমাকে ডেকে মেদিনীপুর যেতে বলেন।”

এ দিকে, মেদিনীপুরে পুলিশ-প্রশাসন তাঁদের সভা করার অনুমতি না দেওয়ায় রাজ্য সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করার হুমকি দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের কথায়, “সাত দিনের মধ্যে ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ না পেলে মামলা করব।”

threat rape murder medinipur mukul roy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy