Advertisement
E-Paper

মেঘের হঠাৎ হানায় ভয় দেখছে না হাওয়া অফিস

দিগন্তে মেঘের লেশমাত্র ছিল না বেশ কয়েক দিন। নীল আকাশে ছিল শরৎ-আলোর অঞ্জলি। সেই শারদীয় আবহে মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ আকাশ কালো করে নামল বৃষ্টি। মহোৎসবের বোধনেই প্রকৃতির এই আকস্মিক ভোলবদলে কিছুটা কুঁচকে উঠল ভ্রু! কয়েক দিন আগেই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, পুজোয় বৃষ্টির সম্ভাবনা তেমন নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:২৮
হঠাৎ বৃষ্টি। মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতায়।  নিজস্ব চিত্র

হঠাৎ বৃষ্টি। মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতায়। নিজস্ব চিত্র

দিগন্তে মেঘের লেশমাত্র ছিল না বেশ কয়েক দিন। নীল আকাশে ছিল শরৎ-আলোর অঞ্জলি। সেই শারদীয় আবহে মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ আকাশ কালো করে নামল বৃষ্টি। মহোৎসবের বোধনেই প্রকৃতির এই আকস্মিক ভোলবদলে কিছুটা কুঁচকে উঠল ভ্রু!

কয়েক দিন আগেই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, পুজোয় বৃষ্টির সম্ভাবনা তেমন নেই। কিন্তু ষষ্ঠীর সকালেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের কিছু এলাকায় বৃষ্টি নামল যে! কোথাও কোথাও দাপট দেখাল দমকা হাওয়া। দেখেশুনে আম-বাঙালি স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তিত। অনেকেরই প্রশ্ন, বৃষ্টির দাপটে কি পণ্ড হবে পুজো?

আবহাওয়া দফতর অবশ্য বলছে, এই বৃষ্টি নেহাতই সাময়িক। পুজোর সময়েও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ঠিকই। তবে সেই খামখেয়ালের বৃষ্টিতে উৎসবের আনন্দ মাটি হবে না বলেই আশ্বাস দিচ্ছেন আবহবিজ্ঞানীরা।

পাঁজিপুথি মেনে পুজো যেমন হাজির, খাতা-কলমের হিসেব ধরলে বর্ষাও তো এখনও রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। নিয়মমাফিক চললে লক্ষ্মীপুজোর পরের দিন অর্থাৎ ৮ অক্টোবর দক্ষিণবঙ্গ থেকে তার বিদায় নেওয়ার কথা। তাই পুজোয় যে বৃষ্টি হতে পারে, আবহবিদদের একাংশ অনেক আগেই তা জানিয়ে দিয়েছিলেন। তবে কয়েক দিন আগে আলিপুর আবহাওয়া দফতর আশ্বাস দিয়েছিল, পুজোয় বৃষ্টির সম্ভাবনা বিশেষ নেই। কারণ, বর্ষার বৃষ্টির জন্য ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ অথবা দু’টোই দরকার। এবং প্রয়োজন সক্রিয় মৌসুমি অক্ষরেখা। এ দিন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে তেমন কোনও ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ তৈরির ইঙ্গিত পাননি আবহবিজ্ঞানীরা। মৌসুমি অক্ষরেখার সক্রিয়তাও স্তিমিত। তা হলে এ দিন সকালে এই বৃষ্টিটা নামল কী ভাবে?

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, পশ্চিম ও মধ্য ভারতের একাংশ থেকে ইতিমধ্যেই বর্ষার বিদায় পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। তার ফলে সেখান থেকে দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে ঠান্ডা বাতাস ঢুকছে। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে এই মুহূর্তে রয়েছে রীতিমতো গরম জলীয় বাষ্প। “এই দুইয়ের সংমিশ্রণেই এ দিন স্থানীয় ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছে। তা থেকেই নেমেছে বৃষ্টি,” বলেন আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ।

দিল্লির মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীদের অনেকেই বলছেন, বর্ষা বিদায় নেওয়ার সময় ঠান্ডা হাওয়া আর গরম জলীয় বাষ্পের মিশ্রণে তৈরি মেঘ থেকে এমন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি অস্বাভাবিক নয়। প্রায় প্রতি বছরই এই সময়ে এমন বৃষ্টি হয়। সাধারণ মানুষ চলতি কথায় যেটাকে বলেন ‘আশ্বিনের ঝড়বৃষ্টি’। আবহবিদদের একাংশের বক্তব্য, গত কয়েক দিনে দক্ষিণবঙ্গে আকাশে ছিটেফোঁটা মেঘও ছিল না। চড়া রোদে তাপমাত্রার পারদ উঠে গিয়েছিল ৩৬-৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তার ফলে জলীয় বাষ্প গরম হয়ে বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে উঠে গিয়েছে। “ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরির অন্যতম কারণ এটাও,” বলেন এক আবহবিদ।

আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, পুজোর কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গে তৈরি হওয়া বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে এমন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতেই পারে। কোথাও কোথাও বইতে পারে দমকা বাতাসও। তবে তা খুব বেশি ক্ষণ স্থায়ী হবে না বলেই মনে করছেন আবহবিদেরা। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। তার ফলে উত্তরবঙ্গেও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে।

তবে এ-সব সত্ত্বেও বাঙালিকে আশ্বাস দিচ্ছে হাওয়া অফিস। পুজোয় প্রকৃতির মেজাজ কেমন থাকবে, তার পূর্বাভাস দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেছেন, “বৃষ্টি হলেও তা খুব বেশি সময় স্থায়ী হবে না। তাই উৎসব মাটি হওয়ার আশঙ্কা কম।”

pujo weather during pujo weather office
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy