ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ল।
বেরোল এমনই এক দিনে, যার পরের দিন রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে টক্কর নিতে উড়ে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। এমনই এক জায়গায় যেখানে এমনিতেই বিজেপি-র ভয়ে কার্যত কাঁটা হয়ে আছে শাসকদল তৃণমূল।
তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসতেই আসানসোলের খনি এলাকায় কয়লা পাচার কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে টানা দাবি করে এসেছে রাজ্য প্রশাসন। সিপিএমের প্রশ্রয়েই এত দিন চোরাই কারবার চলে এসেছে এবং এলাকার এক শ্রেণির মানুষের প্রবল চাহিদা সত্ত্বেও তাঁরা নরম হননি বলে দাবি করে এসেছেন তৃণমূল নেতারা। যদিও বিরোধী দল থেকে প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে এসেছে, কয়লা পাচার চলছেই। জামুড়িয়ার অবৈধ খাদানে কয়লা চুরি করতে নেমে ছ’জন আটকে পড়ায় সেই সত্যিটাই সামনে চলে এল।
শাসকদলের সঙ্গে কয়লা মাফিয়াদের যোগসাজশের অভিযোগ অনেক দিনের। গত লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত খনি এলাকায় মুখে-মুখে ঘুরত ‘লাল নেই তো কালো নেই’ স্লোগান। নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে পুলিশ কমিশনারেট গঠন করে অবৈধ খননে রাশ টানার চেষ্টা করেছিল ঠিকই। কিন্তু ভোটের আগে সেই রাশ অনেকটা শিথিল হয়ে গিয়েছে বলে দাবি। তৃণমূলের শ্রমিক নেত্রী দোলা সেন অবশ্য দাবি করেন, “আমাদের সরকার এ সব চলতে দিতে রাজি নয়। এখন পুলিশ কমিশনের হাতে, তাই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।”
তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় নেতাদের মধ্যে ‘কয়লা চালু’র দাবি উঠেছে। কারণ, জামুড়িয়া, অন্ডাল, রানিগঞ্জের বাসিন্দাদের বড় অংশ অবৈধ কয়লা কারবারে যুক্ত। সেখানে এখন নতুন স্লোগান ‘কয়লা চললে ঘাসফুল/ না চললে পদ্মফুল’। বেআইনি কয়লা খনন যে চলছে, পরিহারপুরের ঘটনা কি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল না? সরারসি জবাব এড়িয়ে আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল শুধু বলেন, “অবৈধ খননের অভিযোগ মিললেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
আসানসোলে ভোট ৭ মে। দলের তারকা প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র জন্য রবিবারই প্রচারে আসছেন মোদী। এই আবহে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় কোলে ঝোল টানার চেষ্টা করছে সব দলই। সিপিএম প্রার্থী বংশগোপাল চৌধুরীর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন, অবৈধ কয়লা পাচার তিনি বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিহারপুরের ঘটনায় পরিষ্কার, ওঁর কাছে ভুল তথ্য রয়েছে। কিছু তৃণমূল নেতা তাঁকে ভুল বুঝিয়ে কয়লা চুরি করে যাচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy