Advertisement
E-Paper

মা-বাবাকে কষ্ট দিলে কেউ পাশে দাঁড়াবে না: হাইকোর্ট

বিরূপ বাবা-মায়ের মন পাওয়ার জন্য রোজ সকালে তাঁদের প্রণামের বিধান দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ বার উচ্চ আদালত বলল, ছেলের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ মা-বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে কেউই অভিযুক্তের পক্ষ নেবে না। অভিযুক্ত ছেলে কাউকেই পাশে পাবেন না। এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেন, বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মায়েরা শান্তি চান। তাঁদের জন্য রোজগেরে ছেলেকে সেই শান্তির পরিবেশটাই তৈরি করতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৬

বিরূপ বাবা-মায়ের মন পাওয়ার জন্য রোজ সকালে তাঁদের প্রণামের বিধান দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ বার উচ্চ আদালত বলল, ছেলের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ মা-বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে কেউই অভিযুক্তের পক্ষ নেবে না। অভিযুক্ত ছেলে কাউকেই পাশে পাবেন না। এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেন, বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মায়েরা শান্তি চান। তাঁদের জন্য রোজগেরে ছেলেকে সেই শান্তির পরিবেশটাই তৈরি করতে হবে।

কলকাতার নেতাজিনগর থানা এলাকার খানপুর রোডের বাসিন্দা গৌরহরি সেন এবং তাঁর স্ত্রী কল্পনাদেবী তাঁদের ছোট ছেলে সমরের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন পুলিশের কাছে। কিন্তু তাঁরা শেষ পর্যন্ত পুলিশি তদন্তে খুশি হতে পারেননি। সুবিচার চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন গৌরহরিবাবু। এ দিন সেই মামলার শুনানি ছিল।

গৌরহরিবাবুর আইনজীবী রাধামোহন রায় আদালতে অভিযোগ করেন, সমর তাঁর স্ত্রী রুমাদেবীকে সঙ্গে নিয়ে বাবা-মায়ের উপরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন। এই অভিযোগ শুনে বিচারপতি পাথেরিয়া অভিযুক্ত সমরের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, “এমন অভিযোগ উঠলে কিন্তু কেউই ছেলের পাশে দাঁড়াবে না!”

গৌরহরিবাবুর কৌঁসুলি জানান, খানপুর রোডে গৌরহরিবাবুর একতলা বাড়ি। সেখানে তিনটি ঘর। একটি ঘর ভাড়া দেওয়া হয়েছে। একটি ঘরে গৌরহরিবাবু ও তাঁর স্ত্রী থাকেন। অন্য ঘরে থাকেন সমর, তাঁর স্ত্রী রুমাদেবী এবং তাঁদের শিশুসন্তান। ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার বড় ছেলে অন্যত্র থাকেন। আদালতে গৌরহরিবাবুর অভিযোগ, ছোট ছেলে ও পুত্রবধূর দাবি, বাড়িটি তাঁদের নামে লিখে দিতে হবে। ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হাতছাড়া করতে রাজি হননি। তাই নাগাড়ে চলেছে অত্যাচার।

অভিযোগ শুনে বিচারপতি জানান, ওই ছেলের সামনে পথ আপাতত দু’টো। তিনি বলেন, “ছেলে বৃদ্ধ বাবা-মাকে ভাল বৃদ্ধাশ্রমে রাখতে পারে। সেখানকার খরচ বহন করুক ছেলে। নয়তো ছেলে ওই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাক।” তখন অভিযুক্ত সমরের আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল বেসরকারি একটি ক্যুরিয়র সংস্থায় মাসিক আট হাজার টাকা বেতনের চাকরি করেন।

তা শুনে বিচারপতি পাথেরিয়ার পরের মন্তব্য, ছেলেই তো সংসারে একমাত্র রোজগেরে। বৃদ্ধের এখন কোনও রোজগার নেই। এই বয়সে বাবা-মা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে থাকতে চান। রোজগেরে ছেলেকেই সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

আদালতে হাজির সরকারি আইনজীবীর কাছে বিচারপতি জানতে চান, ওই বৃদ্ধ দম্পতির অভিযোগ পেয়ে পুলিশ কী ব্যবস্থা নিয়েছে?

সরকারি আইনজীবী জানান, নেতাজিনগর থানায় গৌরহরিবাবু একটি জেনারেল ডায়েরি করেছেন। তার ভিত্তিতে দু’পক্ষকেই থানায় ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু বৃদ্ধ দম্পতি ছেলে ও পুত্রবধূর গ্রেফতার চাননি। ১৮ অগস্ট, সোমবার তিনি গৌরহরিবাবু এবং তাঁর স্ত্রীর বক্তব্য শুনবেন বলে জানান বিচারপতি। সে-দিন সমর অভিযুক্ত সমর এবং তাঁর স্ত্রী রুমাকেও আদালতে হাজির থাকতে হবে।

mother father suffer high court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy