এনটিপিসি-র ফরাক্কা-মালদহ ট্রান্সমিশন লাইনে হঠাৎই যান্ত্রিক গোলযোগ হওয়ায় বৃহস্পতিবার ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই ঘটনার জেরে এক ধাক্কায় এনটিপিসি-র পাঁচটি ইউনিট বসে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে ১৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দেয়। ঘণ্টা পাঁচেকের চেষ্টায় ট্রান্সমিশন লাইন সারানো গেলে বিকেলের দিকে ফের ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। রাত পর্যন্ত দু’টি ইউনিট চালু হয়েছে।
এনটিপিসি-র ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার (মানবসম্পদ) মিলন কুমার বলেন, “ট্রান্সমিশন লাইনে গোলযোগের কারণেই ওই বিপত্তি দেখা দিয়েছিল। পরে লাইন সারানো হলে প্রথমে ২০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট চালু করা সম্ভব হয়।” পরে চালু হয় আরও একটি ইউনিট। বাকিগুলিও রাতের মধ্যে চালু হয়ে যাবে বলে এ দিন বিকেলে তিনি আশ্বাস দেন।
এনটিপিসি-র ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে মোট ছ’টি ইউনিট রয়েছে। ২০০ মেগাওয়াটের তিনটি ও ৫০০ মেগাওয়াটের তিনটি ইউনিট মিলিয়ে মোট ২১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে এই কেন্দ্রটির। তবে গত কয়েক দিন ধরেই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৫০০ মেগাওয়াটের পাঁচ নম্বর ইউনিটটি বসিয়ে রাখা হয়েছিল। এ দিন চালু ছিল বাকি পাঁচটি ইউনিট। বেলার দিকে ট্রান্সমিশন লাইনে গোলযোগ হতেই ওই লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। স্বাভাবিক নিয়মেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ধাপে ধাপে বন্ধ করে দিতে হয়।
ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পশ্চিমবঙ্গ প্রতি দিন ৬৫০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ কেনে। এ দিন ফরাক্কায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাজ্যের গ্রিডে কিছুটা হলেও বিদ্যুৎ ঘাটতি হয়। তবে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রে খবর, জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ কিনে সেই ঘাটতি মিটিয়ে ফেলা হয়। এর ফলে কোথাও বিদ্যুতের অভাবে লোডশেডিং হয়নি বলে তাদের দাবি। রাজ্যের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক কর্তা বলেন, “পূর্বাঞ্চলের পুরো গ্রিড বসে গেলে সমস্যায় পড়তে হত। যে হেতু কেবল ফরাক্কা-মালদহ লাইনটিই বসে গিয়েছিল, তাই অন্য জায়গা থেকে বিদ্যুৎ পেতে সমস্যা হয়নি।”
২০১২ সালের ৩১ জুলাই একই ভাবে উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড বসে গেলে সমস্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দেশ জুড়ে অন্ধকার নেমে এসেছিল। যার প্রভাব পড়েছিল এ রাজ্যেও। সে বারও ফরাক্কায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৬টি ইউনিটই। এ দিন যেহেতু এনটিপিসি-র নিজস্ব লাইনে গোলযোগ, তাই ফরাক্কার ৫টি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলেও এ রাজ্যে তার কোনও প্রভাব পড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy