Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রাজ্যপালের নির্দেশেও মুক্তি নেই বন্দির

রাজ্যপালের আদেশও সরকার মানছে না! তাতে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট। পাঁচুগোপাল দাস নামে এক ব্যক্তি ২০ বছর প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি। গত ৫ মার্চ রাজ্যপাল তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ পাঠান রাজ্যের কাছে। তার পরও তিন মাস কেটে গিয়েছে। পাঁচুগোপাল ছাড়া পাননি। এ ব্যাপারে হাইকোর্টে মামলা করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। মঙ্গলবার তার শুনানিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেন, “এত দিন সরকার আদালতের নির্দেশ অমান্য করছিল, এখন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপালের নির্দেশও মানছে না! এর পর কী হবে কে জানে!”

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৪ ০৩:৪৫
Share: Save:

রাজ্যপালের আদেশও সরকার মানছে না! তাতে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট।

পাঁচুগোপাল দাস নামে এক ব্যক্তি ২০ বছর প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি। গত ৫ মার্চ রাজ্যপাল তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ পাঠান রাজ্যের কাছে। তার পরও তিন মাস কেটে গিয়েছে। পাঁচুগোপাল ছাড়া পাননি।

এ ব্যাপারে হাইকোর্টে মামলা করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। মঙ্গলবার তার শুনানিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেন, “এত দিন সরকার আদালতের নির্দেশ অমান্য করছিল, এখন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপালের নির্দেশও মানছে না! এর পর কী হবে কে জানে!”

বিচারপতি জানান, সরকারি আইনজীবী সাধন হালদার এই মামলার জন্য কিছুটা সময় চেয়েছেন। তাই তিনি এ দিনই পাঁচুগোপালবাবুর মুক্তির নির্দেশ দেবেন না। সোমবার এই মামলার আবার শুনানি হবে।

১৯৭৯ সালে চিৎপুর থানা এলাকা থেকে পাঁচুগোপালবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। একটি খুনের মামলার বিচারে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। কিন্তু পাঁচুগোপালবাবুর দাবি, তিনি এখনও জানেন না কোন কোন ধারায় তাঁকে সাজা দেওয়া হয়েছিল। কুড়ি বছর সংশোধনাগারে কাটানোর পরে তিনি মুক্তির আর্জি জানিয়েছিলেন।

পাশাপাশি বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করে তাঁর বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ এবং কোন অভিযোগে সাজা খাটছেন, তাও জানতে চান পাঁচুগোপালবাবু।

বিচারপতি মামলার কাগজপত্র পড়ে দেখেন, পাঁচুগোপালবাবুর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার ধারাগুলিতে ২০ বছর সাজাই হতে পারে না। বিচারপতি সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, কেন রাজ্যপালের নির্দেশের পরেও পাঁচুগোপালবাবুকে এখনও মুক্তি দেওয়া হয়নি। তা হলে কি সরকার রাজ্যপালের নির্দেশও অমান্য করছে?

সরকারি আইনজীবী জানান, পাঁচুগোপালবাবুর বিরুদ্ধে আরও অনেকগুলি অভিযোগ রয়েছে। সেই কারণেই তাঁকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।

সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি সেই সব অভিযোগের তালিকা দেখতে চান। সরকারি আইনজীবী জানান, তাঁর কাছে সেই তালিকা নেই। কিছুটা সময় পেলে তিনি সেই তালিকা আদালতকে দেখাতে পারেন। বিচারপতি জানান, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, এক জন মানুষ তাঁর যে সাজা পাওয়া উচিত নয়, তা ভোগ করছেন। রাজ্যপাল সব কিছু বুঝে তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। তার পরেও সরকারি আইনজীবী এই বিষয়ে আদালতকে সম্যক জানাতে পারছেন না।

এর পরেই বিচারপতি দত্ত বলেন, “হাইকোর্ট বা আদালতের নির্দেশ অমান্য করা এই সরকারের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন রাজ্যপালের নির্দেশও সরকার মানতে রাজি নয়।” তিনি সাফ জানিয়েছেন, আদালত এই ধরনের আচরণ বরদাস্ত করবে না। সোমবার পর্যন্ত রাজ্যকে সময় দিয়েছে বেঞ্চ। বিচারপতি দত্ত বলেন, “আশা করি, আদালতের হস্তক্ষেপের আগেই পাঁচুগোপালবাবু মুক্তি পাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

panchu gopal das governer high court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE