Advertisement
E-Paper

শুভজিতের নামে খোলা কোম্পানি এখন ইডি-নজরে

সাদামাঠা নাম। আপাতদৃষ্টিতে নির্দোষ একটি সংস্থা। সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগের ইঙ্গিত অন্তত নামের মধ্যে নেই। কিন্তু সারদা তদন্তে ইডি-র নজর এখন তারই দিকে। কেন? কারণ শুভজিৎ কনস্ট্রাকশনের মালিক আর কেউ নন, স্বয়ং সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন। তাঁর প্রথম পক্ষের ছেলে শুভজিৎ সেন ওরফে রাজার নামেই তৈরি হয়েছে এই নির্মাণ সংস্থা।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪০

সাদামাঠা নাম। আপাতদৃষ্টিতে নির্দোষ একটি সংস্থা। সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগের ইঙ্গিত অন্তত নামের মধ্যে নেই। কিন্তু সারদা তদন্তে ইডি-র নজর এখন তারই দিকে।

কেন? কারণ শুভজিৎ কনস্ট্রাকশনের মালিক আর কেউ নন, স্বয়ং সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন। তাঁর প্রথম পক্ষের ছেলে শুভজিৎ সেন ওরফে রাজার নামেই তৈরি হয়েছে এই নির্মাণ সংস্থা। তদন্তকারীদের সন্দেহ, সারদার উধাও হওয়া কোটি কোটি টাকার একাংশ এতেই সরানো (সাইফন) হয়েছে। আপাতত শুভজিৎ কনস্ট্রাকশনের যাবতীয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ইডি দেখছে। খোঁজ চলছে, আমানতকারীদের অর্থ ওই কোম্পানির অ্যাকাউন্টে সরিয়ে সেখান থেকে অন্য কোথাও পাঠানো হয়েছিল কি না।

শুভজিৎ কনস্ট্রাকশনের ইতিহাস কী? ইডি-সূত্রের খবর: সংস্থাটির পত্তন ১৯৯৯-এর মাঝামাঝি। তখন সারদা ফুলে-ফেঁপে ওঠা দূরের কথা, তেমন ভাবে আমানত সংগ্রহেও নামেনি। তদন্তকারীদের দাবি: শুভজিৎ জানান, তাঁর নামে কোম্পানি খোলা হলেও তখন তিনি এ ব্যাপারে বিশেষ খোঁজ রাখতেন না। ইডি-র বক্তব্য, শুভজিৎ কনস্ট্রাকশন গোড়ায় আলাদা সংস্থা হিসেবে ছিল। পরে সারদা গোষ্ঠীর অধীনস্থ সংস্থা হিসেবে (অর্থাৎ ‘সারদা গ্রুপ অব কোম্পানিজ’-এর অধীনে) তার রেজিস্ট্রেশন করান সুদীপ্ত সেন।

শুধু শুভজিৎ কনস্ট্রাকশন নয়। সারদার অন্তর্ভুক্ত, অথচ নামের মধ্যে সারদা শব্দের উল্লেখ নেই সুদীপ্তর এমন সব কোম্পানির তালিকা করেছে ইডি। তাতে সেন অ্যান্ড সেন ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েটস প্রাইভেট লিমিটেড, রোজ ক্যাপিটাল লিমিটেড বা শেরউড হোটেলস অ্যান্ড রিসর্টস প্রাইভেট লিমিটেডের মতো বিবিধ সংস্থার নাম রয়েছে। দেখা হচ্ছে সেগুলোর যাবতীয় হিসেবের নথি। তদন্তকারীদের অনুমান, এমনই কিছু সংস্থার নামে খোলা অ্যাকাউন্টে আমানকারীদের বিস্তর টাকা সরানো হয়। কিন্তু কোম্পানির নামের মধ্যে ‘সারদা’ না-থাকায় সুদীপ্তর সংস্থা বলে এদের কয়েকটিকে চিহ্নিত করতেই প্রাথমিক ভাবে কিছুটা সমস্যা হয়েছে।

ইডি-র তদন্তেই প্রকাশ, ২০১২-য় সারদা-সাম্রাজ্যের আওতাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ২৩৯-এ। এর মধ্যে ছিল আনকোরা বহু সংস্থা। আবার গ্লোবাল অটোমোবাইলস লিমিটেড, ভাসান্ক ফুড্স প্রাইভেট লিমিটেডের মতো লাটে ওঠা বা ধুঁকতে থাকা কিছু সংস্থাও কিনেছিলেনসুদীপ্ত। গত বছরের ২৩ এপ্রিল সুদীপ্ত গ্রেফতার হওয়ার পর দিন কেন্দ্রীয় কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের নথি অনুযায়ী, ১৯৯৫-এর নভেম্বর থেকে ২০১২-র জুলাই পর্যন্ত ১৬০টি সংস্থার ডিরেক্টর পদে সুদীপ্তর নাম মিলেছে।

ইডি সূত্রের খবর: সুদীপ্ত প্রথম যে সংস্থার ডিরেক্টর হন, তার নাম সারদা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড। ১৯৯৫-এর নভেম্বরে। ইডি-র তদন্তকারীদের মতে, সারদা কনস্ট্রাকশন দিয়েই সারদা-সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন। শুভজিৎ কনস্ট্রাকশন ও বেহালা সারদা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড খোলা হয় চার বছর বাদে, ১৯৯৯-এর জুলাইয়ে। তিনটি আদি সংস্থাই নথিভুক্ত হয়ে আছে বেহালা ট্রাম ডিপোর কাছে সেই ৪৫৫ ডায়মন্ড হারবার রোডের ঠিকানায়। যেখানে সারদার বিভিন্ন সংস্থার নামে ৪৩টি লাইসেন্স মঞ্জুরির অভিযোগ উঠেছে কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে।

তবে ইডি-র বক্তব্য: শুভজিৎ কনস্ট্রাকশন কিংবা সারদা কনস্ট্রাকশন মারফত আমানতকারীদের থেকে টাকা তোলা হতো না। টাকা তোলার মূল মাধ্যম ছিল অন্য চারটি সংস্থা। তার দু’টো সারদা গার্ডেন রিসর্ট অ্যান্ড হোটেল প্রাইভেট লিমিটেড এবং সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেড হয়েছিল একই দিনে ২০০৭-এর ৩ জানুয়ারি। আমানত সংগ্রহের অন্য দু’টি মাধ্যম ছিল সারদা রিয়েলটি ইন্ডিয়া লিমিটেড এবং সারদা হাউসিং প্রাইভেট লিমিটেড। প্রথমটি গড়া হয় ২০০৮-এর জুনে। দ্বিতীয়টির সূচনা ২০১০-এর ডিসেম্বরে।

surbek biswas sarada son of sudipta sen
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy