Advertisement
E-Paper

সুদীপ্ত-কুণালদের হাতে পেতে সক্রিয় সিবিআই

সারদা-কেলেঙ্কারির বৃহত্তর প্রেক্ষাপট জানতে হলে সুদীপ্ত সেন, কুণাল ঘোষ-সহ ছ’জনকে অবিলম্বে জেরা করা প্রয়োজন বলে সিবিআই মনে করছে। যে কারণে তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো। ওই ছ’জনকে কোর্টে হাজির করানোর লক্ষ্যে তাদের পেশ করা আর্জি মেনে আলিপুর আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ১৬ জুন অভিযুক্তদের কোর্টে তুলতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৪ ০২:৪৬

সারদা-কেলেঙ্কারির বৃহত্তর প্রেক্ষাপট জানতে হলে সুদীপ্ত সেন, কুণাল ঘোষ-সহ ছ’জনকে অবিলম্বে জেরা করা প্রয়োজন বলে সিবিআই মনে করছে। যে কারণে তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো। ওই ছ’জনকে কোর্টে হাজির করানোর লক্ষ্যে তাদের পেশ করা আর্জি মেনে আলিপুর আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ১৬ জুন অভিযুক্তদের কোর্টে তুলতে হবে। আর সে দিনই সিবিআই অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে চাইবে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা-সূত্রের ইঙ্গিত।

সারদা-মামলার তদন্তে নেমে সিবিআই গত সপ্তাহে তাদের সল্টলেক অফিসে তিনটি এফআইআর দায়ের করেছে। সারদা-কাণ্ডে রাজ্যের বিভিন্ন থানার এফআইআরগুলি একত্রিত করে বিশ্বাসভঙ্গ-চক্রান্ত-প্রতারণার দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। তৃতীয়টি রুজু হয়েছে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের হদিস পেতে, যেটি সিবিআইয়ের স্পেশ্যাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ গত ৫ জুন জমা দিয়েছে আলিপুর আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের কাছে। সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেন, তাঁর একদা ছায়াসঙ্গিনী দেবযানী মুখোপাধ্যায়, সারদা-র কর্তৃস্থানীয় তিন ব্যক্তি অরবিন্দ চহ্বান, সোমনাথ দত্ত, মনোজ নাগেল এবং সারদার মিডিয়া শাখার অন্যতম কর্তা তথা তৃণমূলের সাসপেন্ডেড সাংসদ কুণাল ঘোষ মামলাটিতে অভিযুক্ত এই ছ’জনকে আদালতে হাজির করানোর জন্য সিবিআই মঙ্গলবার বিচারককে আর্জি জানিয়েছিল। আলিপুর আদালত আর্জি মঞ্জুর করেছে।

এবং ওঁদের সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার প্রক্রিয়াও এখান থেকেই শুরু হল বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা মহলের একাংশের অনুমান।সুদীপ্ত, মনোজ ও অরবিন্দ এখন রয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলে। দেবযানী বন্দি আলিপুর মহিলা জেলে। কুণাল আর সোমনাথের ঠিকানা আপাতত দমদম সেন্ট্রাল জেল।

সংশ্লিষ্ট এফআইআরটিতে সিবিআই দাবি করেছে, সারদার বিভিন্ন প্রকল্পে সংগৃহীত আমানত ১২%-৪০% সুদ-সহ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অভিযুক্তেরা পালন করেননি। বস্তুত আর্থিক লেনদেনের হিসাব রাখার ক্ষেত্রে সারদা গোষ্ঠীর ব্যবহৃত সফ্টওয়্যারটি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, আমানতকারীদের টাকা ফেরতের কোনও ব্যবস্থাই তাতে ছিল না। অর্থাৎ, প্রতারণাই ওদের মূল উদ্দেশ্য ছিল বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ।

সিবিআই-সূত্রের খবর: সারদা গোষ্ঠী বাজার থেকে টাকা তুলত মূলত তিনটি প্রকল্প মারফত ফিক্সড ডিপজিট, মান্থলি ইনকাম স্কিম ও রেকারিং ডিপজিট। এগুলির দৌলতে তারা প্রায় ছ’শো কোটি টাকা তুলেছে। উপরন্তু জমি প্রকল্পেও টাকা তোলা হয়েছে। এফআইআরে অভিযোগ: আমানতকারীদের বলা হয়েছিল ১১ বর্গফুট জমি মিলবে পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে। বাস্তবে এমন কারও সন্ধান মেলেনি, যিনি ওই টাকার বিনিময়ে কোথাও ওই পরিমাণ জমি পেয়েছেন। সিবিআইয়ের আরও অভিযোগ: বাজার থেকে টাকা তোলার জন্য সারদা গোষ্ঠী কয়েক হাজার এজেন্ট নিয়োগ করেছিল, যাদের বোনাস-কমিশন-ভাতা-ইনাম ইত্যাদির পিছনেই চলে গিয়েছে আমানতের ৩০%। পাশাপাশি আমজনতার কাছে গোষ্ঠীর ভাবমূর্তি বাড়াতে সারদা-কর্তারা সমাজের অত্যন্ত প্রভাবশালী লোকজনের সাহায্য নিয়েছিলেন। “সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ভূমিকা উড়িয়ে দেওয়ার নয়।” মন্তব্য করা হয়েছে এফআইআরে।

সিবিআইয়ের দাবি: সুদীপ্ত সেন নিজে ১৬০টি কোম্পানি খুলেছিলেন। দেবযানী ও মনোজ ছিলেন ৪০টি সংস্থার ডিরেক্টর। সারদা গোষ্ঠীর অধীনস্থ সংস্থাগুলির অধিকাংশই কাজে লাগানো হতো স্রেফ বাজার থেকে তোলা টাকা অন্যত্র সরাতে। কত দ্রুত কোম্পানি খোলা হতো, এফআইআরে তার উদাহরণও রয়েছে। সিবিআই জানিয়েছে, এক বার সাত দিনে ৫০টি, আর এক বার এক দিনে ১৫টি কোম্পানি খুলেছিল সারদা! ২০১১-র জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মধ্যে খুলেছিল ৬০টি কোম্পানি!

sudipto kunal saradha scam cbi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy