Advertisement
E-Paper

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য, অভিযুক্ত ডিজি

কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়াই পাড়ুই হত্যাকাণ্ডের মামলায় কেন চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। উচ্চ আদালতে তার জবাবদিহির পরে এ বার তাঁর বিরুদ্ধে উঠল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ। আইনি পরামর্শ নিয়ে চার্জশিট পেশ করে ডিজি সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন বলে মঙ্গলবার হাইকোর্টে জানান আবেদনকারিণীর কৌঁসুলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২১

কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়াই পাড়ুই হত্যাকাণ্ডের মামলায় কেন চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। উচ্চ আদালতে তার জবাবদিহির পরে এ বার তাঁর বিরুদ্ধে উঠল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ। আইনি পরামর্শ নিয়ে চার্জশিট পেশ করে ডিজি সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন বলে মঙ্গলবার হাইকোর্টে জানান আবেদনকারিণীর কৌঁসুলি।

হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডনের আদালতে পাড়ুই মামলার শুনানি চলছে। এই মামলায় গত ৪ সেপ্টেম্বর বিচারপতি টন্ডনের আদালতে হাজির হয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি জিএমপি রেড্ডি জানিয়েছিলেন, আইনি পরামর্শ নিয়েই বোলপুর আদালতে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ২১ জুলাই রাতে রাজনৈতিক গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের জেরে পাড়ুইয়ে সাগর ঘোষ নামে এক অবসরপ্রাপ্ত স্কুলকর্মীকে গুলি করা হয়। দু’দিন পরে বর্ধমান হাসপাতালে মারা যান সাগরবাবু। খুনের ঘটনায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং ওই জেলার সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

পুলিশ ওই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার না-করায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করা হয়। সাগরবাবুর পুত্রবধূ শিবানী ঘোষ আদালতে অভিযোগ করেন, পুলিশ প্রথমে তাঁদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছিল। সেই জন্য বীরভূমের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত ভাবে দ্বিতীয় এফআইআর দায়ের করা হয়। কিন্তু তদন্তকারী পুলিশ তার পরেও অনুব্রত বা বিকাশের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়নি বলে শিবানীদেবীর অভিযোগ।

হাইকোর্ট ১৪ ফেব্রুয়ারি পাড়ুই মামলার তদন্তে ডিজি-র নেতৃত্বে বিশেষ দল (সিট) গড়ে দেয়। তাদের নজরদারিতে তদন্ত করে সিট। কিন্তু সিট-প্রধান হিসেবে ডিজি হাইকোর্টের অনুমতি না-নিয়েই চার্জশিট দেন। কেন? কারণ দর্শানোর জন্য ডিজি-কে তলব করেন বিচারপতি টন্ডন। ডিজি ৪ সেপ্টেম্বর জানান, আইনি পরামর্শ নিয়েই চার্জশিট পেশ করা হয়েছে।

এ দিন শিবানীদেবীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি প্রশ্ন তোলেন, ফৌজদারি মামলায় তদন্তকারীকে সরকারি আইনজীবীর মতামত নিয়ে চার্জশিট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া যাবে না বসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে। ডিজি কী ভাবে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করলেন? তিনি জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিতে আবেদনকারিণী বলেছেন, খুনের পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। অথচ তদন্তকারীরা ষড়যন্ত্রের অভিযোগের কোনও তদন্ত না-করে চার্জশিট পেশ করেছেন। কী ভাবে?

সরকারি আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সাগরবাবুর মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু সেই জবানবন্দির খোঁজ মিলছে না বলে এডুলজির অভিযোগ। অন্য দিকে, সাগরবাবুর ছেলে হৃদয়বাবুর আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহরায় আদালতের বাইরে জানান, দু’দিন সময় পেয়েও পুলিশ মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেয়নি।

এডুলজির প্রশ্ন, পাড়ুই কাণ্ডে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে ডিজি কয়েক দফায় রিপোর্ট দাখিল করেছেন হাইকোর্টে। সেই সব রিপোর্ট বিচারপতির কাছে পেশ করা হয়েছে বন্ধ খামে। অথচ সরকারি আইনজীবী সেই গোপন রিপোর্টের বক্তব্য উল্লেখ করে সওয়াল করেছেন। রিপোর্টের গোপনতা নষ্ট হল কী ভাবে?

কাল, বৃহস্পতিবার ফের শুনানি হবে বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি।

parui case hriday ghosh sagar ghosh murder high court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy