Advertisement
E-Paper

সিবিআই বাউন্সারে নাজেহাল মদন, মুখে বহু নাম

জেরার মুখে ভেঙে পড়ে প্রথম দিন দ্রুত অনেক তথ্যই উগরে দিয়েছিলেন তিনি। সিবিআই সূত্রে দাবি, শনিবার রাতে পরিবহণ মন্ত্রী তদন্তকারীদের জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর দলের আরও কয়েক জন নেতা এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের দাবি, মদনবাবু ওই নেতাদের নামও বলেছেন। তাঁদের ব্যাপারে অনেক তথ্যও দিয়েছেন। আগে তৃণমূল সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষ, দলের সহ-সভাপতি রজত মজুমদারের কাছ থেকেও এই নেতাদের সম্পর্কে বহু তথ্য পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৪

জেরার মুখে ভেঙে পড়ে প্রথম দিন দ্রুত অনেক তথ্যই উগরে দিয়েছিলেন তিনি। সিবিআই সূত্রে দাবি, শনিবার রাতে পরিবহণ মন্ত্রী তদন্তকারীদের জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর দলের আরও কয়েক জন নেতা এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের দাবি, মদনবাবু ওই নেতাদের নামও বলেছেন। তাঁদের ব্যাপারে অনেক তথ্যও দিয়েছেন। আগে তৃণমূল সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষ, দলের সহ-সভাপতি রজত মজুমদারের কাছ থেকেও এই নেতাদের সম্পর্কে বহু তথ্য পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা।

রবিবার সারা দিন ধরেই পরিবহণ মন্ত্রীকে দফায় দফায় জেরা করেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, যে কৌশলে মদনবাবুকে জেরা করা হচ্ছে, তাতে ক্রমশ ভেঙে পড়ছেন তিনি। জেরাপর্বের পুরোটাই ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে। মদনবাবু তাঁর সহকর্মীদের সম্পর্কে যে সব তথ্য দিচ্ছেন, তার কতটা সত্যি তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে যে দলের অনেক নেতারই লেনদেন হয়েছে, তা এই তিন জনের বয়ান থেকেই ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে আসছে। পাশাপাশি সুদীপ্ত ও দেবযানীর বয়ানও এঁদের তিন জনের বয়ানের সঙ্গে মিলছে। সুদীপ্ত সেন যে গাড়িচালককে নিয়ে কাশ্মীর পালিয়েছিলেন, সেই অরবিন্দ চৌহানের জবানবন্দির সঙ্গে এই বক্তব্যগুলির মিল রয়েছে। তৃণমূলের আর এক নেতা আসিফ খানও ওই সব তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে নানা তথ্য দিয়েছেন বলে সিবিআইয়ের দাবি।

সিবিআইয়ের দাবি, মদনবাবু যে প্রায়ই সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে যেতেনতার যথেষ্ট প্রমাণ মিলেছে। এ দিনও জেরার সময়ে মন্ত্রীকে সেই সব তথ্য ও কয়েকটি ভিডিও ক্লিপিং দেখানো হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, এর মধ্যেই সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন এবং সংস্থার দুই হিসাবরক্ষক তাঁদের জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, যে দিনই মন্ত্রী মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে আসতেন সে দিনই তাঁকে টাকা দেওয়া হতো। এই টাকা দেওয়ার হিসেব অনেক সময়ে ক্যাশবুকেও লেখা হয়েছিল বলে সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা দাবি করছেন। এই ক্যাশবুক এবং ক্যাশ ভাউচারগুলি হাতে নিয়ে সিবিআই এ দিন মদনবাবুকে জেরা করেছে। দেখানো হয় সুদীপ্তের সঙ্গে তাঁর ফোন কলের রেকর্ডও। সিবিআইয়ের এক পদস্থ কর্তা জানান, এই সব তথ্য দেখে মদনবাবু ভেঙে পড়েন। তাঁর অনুরোধ মেনে তদন্তকারীরা দুপুরে কিছু ক্ষণের জন্য বিশ্রাম দেন মদনবাবুকে। ঘণ্টা দু’য়েক পরে ফের জেরা শুরু হয়।

কী ভাবে জেরা করা হচ্ছে মন্ত্রীকে? সিবিআই সূত্রের খবর, মদনবাবুকে জেরা করার জন্য চারটি দল তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি দলে রয়েছেন তিন জন করে অফিসার। মদনবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা ৪২টি অভিযোগকে এই চারটি দলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এ দিন সকালে মন্ত্রীকে পর পর দু’টি দল জেরা করে। এই জেরার সময়েই তদন্তকারীদের ‘বাউন্সার’-এ বেসামাল হয়ে পড়েন মদনবাবু। বিশ্রাম নেওয়ার পরে দ্বিতীয় দফায় তাঁকে জেরা করে তদন্তকারীদের আরও দু’টি দল। এই সময়ে তাঁকে যে সব বিষয় নিয়ে জেরা করা হয় তার মধ্যে রয়েছে কলকাতার মেসি-ম্যাচ। তদন্তকারীদের দাবি, ওই ম্যাচের সময়ে মন্ত্রীকে ৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন।

সিবিআই সূত্রের খবর, সারদা থেকে মদনবাবু কত টাকা নিয়েছেন তা জানতে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মদনবাবু ও তাঁর পরিবারের সম্পত্তির পরিমাণও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আরও তথ্য পেতে মদন ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যবসায়ীকে তাঁর মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় সিবিআই। তাদের দাবি, সারদার টাকা ওই ব্যবসায়ীদের সংস্থায় বেআইনি বিনিয়োগ করেছেন মদনবাবু।

saradha scam madan mitra mamata bandyopadhyay cbi cgo sudipto sen
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy