Advertisement
E-Paper

সংবর্ধনা সরিয়ে গ্রাম ছাড়াদের ফেরালেন বাবুল

নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই দিল্লি গিয়েছিলেন আসানসোলের নব্য-সাংসদ। পাক্কা দু’সপ্তাহ পর সেই খনি শহরে ফিরেই সংবর্ধনা সরিয়ে দলের ঘর-ছাড়াদের গ্রামে ফিরিয়ে সোমবার বাবুল সুপ্রিয় বলছেন, “সংবর্ধনা নয়, এখন ঘর-হারা মানুষদের সাহস জোগানোর সময়।”

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০৩:৩১
জামুড়িয়ার সত্তর গ্রামের বাসিন্দাদের ঘরে ফিরিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন বাবুল সুপ্রিয়। সোমবার। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

জামুড়িয়ার সত্তর গ্রামের বাসিন্দাদের ঘরে ফিরিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন বাবুল সুপ্রিয়। সোমবার। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই দিল্লি গিয়েছিলেন আসানসোলের নব্য-সাংসদ। পাক্কা দু’সপ্তাহ পর সেই খনি শহরে ফিরেই সংবর্ধনা সরিয়ে দলের ঘর-ছাড়াদের গ্রামে ফিরিয়ে সোমবার বাবুল সুপ্রিয় বলছেন, “সংবর্ধনা নয়, এখন ঘর-হারা মানুষদের সাহস জোগানোর সময়।”

সেই সাহস জোগাতে এ দিন আসানসোলে ঢোকার আগে দলের জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকারকে নিয়ে বাবুলের গন্তব্য ছিল জামুড়িয়া। বিজেপি সূত্রে দাবি, ভোটের পর থেকে জামুরিয়ার বেশ কয়েকটি এলাকায় বিজেপি সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। অনেকেই ভয়ে রাত কাটাচ্ছেন অন্যত্র। জামুড়িয়ার সত্তর গ্রামের দয়াময় নন্দী তাঁদেরই এক জন।

গত ৭ মে ভোটের পরে বাড়িই ফিরতে পারেননি সত্তর গ্রামের বিজেপি-র পোলিং এজেন্ট দয়াময়। তাঁর বাড়িতেও হামলা করে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ ছিল জেলা বিজেপি নেতৃত্বের। ‘প্রাণ-ভয়ে’ ওই কর্মীকে আশ্রয় নিতে হয়েছিল আসানসোলে দলীয় কার্যালয়ে। এ দিন কার্যত সদ্য নির্বাচিত আসানসোল সাংসদের হাত ধরেই ঘরে ফিরলেন দয়াময়। গ্রামে গিয়ে অন্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে ওই দলীয় কর্মীর ভাঙাচোরা ঘর ঘুরে দেখেন বাবুল। দয়াময়ের মা জ্যোৎস্নাদেবী ও বাবা ষষ্ঠীপদবাবুর সঙ্গে কথা বলেন। জ্যোৎস্নাদেবী জানান, ফল প্রকাশের আগে তাঁদের বাড়ি ঘিরে রেখেছিল শাসকদলের কর্মীরা।

যা শুনে বাবুলের পরামর্শ, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাল্টা সন্ত্রাস নয়। তবে যদি কেউ সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চায়, তার বিরুদ্ধে সবাইকে এক সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে। এই তো সন্দেশখালিতে দেখে এলাম, যাঁদের নামে এফআইআর হয়েছে, তারা প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু পুলিশ তাদের খুঁজে পাচ্ছে না।” সত্তর গ্রামে দাঁড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে ঘর-ছাড়া দলীয় কর্মীদের তিনি বলেন, “দেখুন ভাই, আপনাদের শাখরুখ খানের মতো নিরাপত্তা দিতে পারব না। আপনাদেরই জোট বেঁধে প্রতিবাদ করতে হবে। মানুষ পরিবর্তন এনেছেন। জনগণই আবার পাল্টা পরিবর্তন আনতে পারে।” বাবুলের আশ্বাস, “দু’বছর পরে বিধানসভা নির্বাচনে কে রিগিং করে দেখা যাক। আপনাদের এইটুকু বলতে পারি, কেন্দ্র সুষ্ঠু ভোট করতে সব রকম ব্যবস্থা নেবে।”

বিকেলে ফিরে আসার আগে তাঁর হাত ধরে দয়াময়কেও বলতে শোনা যায়, “আর ভয় পাচ্ছি না বাবুলদা।”

তবে জামুড়িয়ার তৃণমূল নেতা পূর্ণশশী রায়ের দাবি, “ভোটের দিন দুপুরে সিপিএম-বিজেপি এক হয়ে আমাদের কর্মীদের মারধর করে। দোষ ঢাকতে নিজেরাই এখন গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছে।” আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলেরও দাবি, “কোথাও কেউ ঘরছাড়া ছিলেন বলে তো আমাদের জানা নেই।”

এ দিন চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে দলীয় কর্মীদের দেখতে গিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করেন, “সিপিএমের অনুকরণে এখন হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল। অথচ পুলিশ কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। যাঁরা মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।” এ দিন রাতেও কোচবিহারের বক্সিরহাটের ফলিমারি এলাকায় দু’দলের সংঘর্ষে জখম হয়েছেন অন্তত ৬ জন। তাঁদের অসমের তামারহাট ও কোচবিহারের বক্সিরহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ক্রমাগত সংঘর্ষ ঘটে চললেও পুলিশের ‘পক্ষপাতিত্বের’ও ‘বিরাম’ নেই বলে এ দিন কটাক্ষ করেছেন বাবুল। সন্ধ্যায় আসানসোল ফিরে বিভিন্ন সিটিজেন্স ফোরাম ও চেম্বার অব কর্মাসের সঙ্গে বৈঠকেও রাজ্যের শাসকদলই ছিল তাঁর লক্ষ্য।

babul supriyo bjp jamuria
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy