Advertisement
E-Paper

হাকিম নিয়ে এসএসকেএম প্রকৃত তথ্য দিচ্ছে না, দাবি এনআইএ-র

খাগড়াগড় বিস্ফোরণে জখম আব্দুল হাকিমের শারীরিক অবস্থা সংক্রান্ত তথ্য এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঠিকমতো মিলছে না বলে আদালতকে জানাল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। বুধবার এনআইএ-র আইনজীবী শ্যামল ঘোষ কলকাতা নগর দায়রা আদালতে জানান, হাকিমের স্বাস্থ্য নিয়ে রিপোর্ট পেলে তদন্তকারী সংস্থা পরবর্তী পদক্ষেপ করতে পারবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৩৩

খাগড়াগড় বিস্ফোরণে জখম আব্দুল হাকিমের শারীরিক অবস্থা সংক্রান্ত তথ্য এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঠিকমতো মিলছে না বলে আদালতকে জানাল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।

বুধবার এনআইএ-র আইনজীবী শ্যামল ঘোষ কলকাতা নগর দায়রা আদালতে জানান, হাকিমের স্বাস্থ্য নিয়ে রিপোর্ট পেলে তদন্তকারী সংস্থা পরবর্তী পদক্ষেপ করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে তাকে হেফাজতে নিতে আবেদন করা হবে কি না, তা-ও এনআইএ ঠিক করতে পারবে। কিন্তু সে সংক্রান্ত তথ্য এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঠিকঠাক পাওয়া যাচ্ছে না। অবিলম্বে ওই হাসপাতালের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়ার জন্য এনআইএ-র তরফে আদালতে আবেদন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে হাকিমের স্বাস্থ্য নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারক মধুমিতা রায়।

যদিও এসএসকেএমের অধ্যক্ষ প্রদীপ মিত্র এ দিন বলেন, “এনআইএ আমাদের কাছে রিপোর্ট না চাইলে তা দেব কী ভাবে? ওঁরা নিজেদের মতো জেরা করে চলে যান। আমাদের কিছু জানান না। রিপোর্ট দিতে আমাদের কোনও অসুবিধে নেই। ওঁরা চাইলেই আমরা রিপোর্ট দিয়ে দেব।”

হাকিমের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে হাসপাতালের রিপোর্ট চেয়ে আবেদনের পাশাপাশি, এনআইএ এ দিন খাগড়াগড়-কাণ্ডে ধৃত অন্য তিন জনরাজিয়া বিবি, আলিমা বিবি ও হাসেম মোল্লাকে আদালতে হাজির করায়। সিআইডি-র কাছ থেকে ১৩ অক্টোবর আদালতের নির্দেশে এনআইএ ওই তিন জনকে নিজেদের হেফাজতে পেয়েছিল। এ দিন বিচারক হাসেমকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এনআইএ-র হেফাজতে এবং রাজিয়া ও আলিমাকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামীকাল, শুক্রবার সংস্থার ডিজি শরদ কুমারের কলকাতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি তদন্তের গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখবেন। তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে কথা বলবেন। খাগড়াগড়ের ঘটনাস্থলেও যেতে পারেন।

আলিমা বিবির স্বামী হাকিম গত ২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ের ওই বিস্ফোরণে জখম হয়। বীরভূমের মহম্মদবাজারের দেউচা গ্রামের বছর তেইশের এই যুবককে প্রথমে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। ৯ অক্টোবর তাকে এসএসকেএমে আনা হয়। বিস্ফোরণের জীবিত প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে হাকিম তদন্তকারীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এনআইএ-র দাবি, এসএসকেএম হাসপাতালে হাকিমকে যতটুকু জেরা করা গিয়েছে, তার মধ্যেই সে নিজেকে জমিয়ত-উল-মুজাহিদিন নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছে। গত তিন বছর ধরে জঙ্গি কাযর্কলাপে জড়িত থাকার কথাও গোয়েন্দাদের জানিয়েছে সে। এনআইএ সূত্রের দাবি, ভারত ও বাংলাদেশের জঙ্গিরা মিলেমিশে দু’টি রাষ্ট্রেই বড় মাপের ধারাবাহিক নাশকতার ছক কষেছিল। সে জন্য কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলার গোপন ডেরায় প্রচুর আইইডি (ইম্প্রোভাইজ্ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) মজুত করা হচ্ছিল বলে হাকিম কবুল করেছে। হেফাজতে নিয়ে জেরা করলে তার কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের।

এনআইএ-র অফিসারদের দাবি, হাকিমের স্বাস্থ্য নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নানা সময়ে নানা রকম কথা বলেছেন। যেমন, ১৫ অক্টোবর চিকিৎসকদের একাংশ তাঁদের জানান, পর দিনই হাকিমকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাঁদের বক্তব্য ছিল, পা থেকে স্প্লিন্টার বার করে দেওয়ার পরে আর কোনও সমস্যা নেই, শুধু নিয়মিত ‘ড্রেসিং’-এর প্রয়োজন। কিন্তু পর দিন এনআইএ-কে জানানো হয়, হাকিমের ক্ষত শুকোচ্ছে না, আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন। ১৭ তারিখ হাকিমের অস্ত্রোপচার হয়। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, “হাকিমের শারীরিক অবস্থা নিয়ে নানা কথায় আমরা বিভ্রান্ত হচ্ছি। তাই, পরবর্তী পদক্ষেপ করতেও অসুবিধে হচ্ছে।” এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ অবশ্য এনআইএ-কে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁদের দাবি, হাকিমের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তাঁদের কাছে কিছু জানতে চায়নি এনআইএ।

khagragarh case abdul hakim sskm health report NIA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy