Advertisement
E-Paper

হামলায় ক্ষুব্ধ ফুরফুরা শরিফ আন্দোলনের পথে

ফুরফুরা শরিফের পিরসাহেবদের উপরে একের পর এক হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ পিরসাহেবরা অবশেষে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের দ্বারস্থ হলেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে পিরসাহেবরা জানান, তৃণমূলকর্মীরাই হামলা করছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৪ ০৩:১৯
রাজভবনের সামনে পিরসাহেব ইব্রাহিম সিদ্দিকী। ছবি: সম্প্রীত চট্টোপাধ্যায়।

রাজভবনের সামনে পিরসাহেব ইব্রাহিম সিদ্দিকী। ছবি: সম্প্রীত চট্টোপাধ্যায়।

ফুরফুরা শরিফের পিরসাহেবদের উপরে একের পর এক হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ পিরসাহেবরা অবশেষে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের দ্বারস্থ হলেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে পিরসাহেবরা জানান, তৃণমূলকর্মীরাই হামলা করছেন। পুলিশ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না-করলে তাঁরা রাজ্য জুড়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবেন।

পিরসাহেব ফুরফুরা দরবার শরিফের তরফে ইব্রাহিম সিদ্দিকী শুক্রবার বলেন, বামফ্রন্টের ৩৪ বছরের শাসনে ওই সরকার মুসলিমদের উন্নয়নের কোনও প্রতিশ্রুতি দেয়নি। কোনও কাজও করেনি। তখনও ফুরফুরার পিরসাহেবরা ওয়াজ-জলসার সময় সমাজের কথা বলতে গিয়ে মুসলিমদের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করতেন। কিন্তু তার জন্য বাম জমানায় তাঁদের উপরে কোনও রকম হামলার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু তৃণমূলের ৩৪ মাসের শাসনে পিরসাহেবদের উপরে হামলার ঘটনা ঘটল তিন-তিন বার।

পিরসাহেবদের উপরে হামলার অভিযোগ নিয়ে বাম এবং তৃণমূল দুু’পক্ষই সরব হয়েছে। লোকসভার দুই বাম প্রার্থী দেবেশ দাস ও মোর্তজা হোসেন এই ধরনের হামলার তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, “বারবার এমন ঘটনা ঘটছে।” পিরসাহেবদের উপরে এমন আক্রমণ হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, “পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বিপন্ন। প্রতিবাদ করলেই হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে।”

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য পিরসাহেবদের বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ এনেছেন। তাঁর অভিযোগ, ইব্রাহিম সিদ্দিকী সিপিএমের সুরে কথা বলছেন। তিনি বলেন, “ইব্রাহিম বেশ কিছু জায়গায় ধর্মীয় প্রচারের বদলে পুরোদস্তুর রাজনৈতিক প্রচার করছেন। উস্কানিমূলক কথা বলছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নামে বিষোদ্গার করছেন। সেই জন্য ওঁদের সম্প্রদায়ের লোকজনই তাঁদের বাধা দিয়েছেন।” পার্থবাবুকে প্রশ্ন করা হয়, বিরুদ্ধ প্রচার করলেই কি বাধা দেওয়া যায়? তাঁর জবাব, “বিরুদ্ধ প্রচার করলেই বাধা দেওয়া উচিত নয়। আমরা হিংসা, গোলমাল সমর্থন করি না। তবে উনি (ইব্রাহিম) উস্কানিমূলক প্রচার করছেন।”

ইব্রাহিম সিদ্দিকীর অভিযোগ, তৃণমূলের একাংশ বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁদের উপরে আক্রমণ চালাচ্ছিল। গত মঙ্গলবার ভাঙড়ের শোনপুরে তা মারাত্মক আকার নেয় বলে পিরসাহেবরা মনে করছেন। তাঁদের অভিযোগ, সেখানে ওয়াজ-জলসায় পিরসাহেবদের হেনস্থা করা হয়েছে। রাজ্যপালকে তাঁরা জানিয়েছেন, স্থানীয় কাশীপুর থানার পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়েও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রসচিবের হস্তক্ষেপে পুলিশ আসে। ইব্রাহিম সিদ্দিকী রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের না-করে উল্টে পিরসাহেবদেরই নিউ টাউন পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়।

এই অভিযোগ প্রসঙ্গে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম বলেন, “ওঁরা পিরসাহেব হতে পারেন। কিন্তু সিপিএমের সঙ্গে যোগসাজশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসা করছিলেন। ভাঙড়ের মুসলিম সমাজ সেই কুৎসার প্রতিবাদ করেছেন। এখানে আমার কোনও উস্কানি ছিল না।”

ইব্রাহিম জানান, রাজ্যপালের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দেখা করার পরেও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না-নিলে ফুরফুরার মোজাদ্দেদীয় নাগরিক সংহতি ও উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে রাজ্য জুড়ে। আন্দোলনের রূপরেখা আজ, শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেওয়া হবে।

furfura sharif
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy