আগেও দু’-দু’বার চিঠি দিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু কোনও বারই রাজ্য সরকার তার উত্তর দেয়নি। নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর ঘটনায় রাজ্যের ছয় অভিযুক্ত পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরুর অনুমতি চেয়ে তাই আবার নবান্নে চিঠি পাঠিয়েছে ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
রাজ্যের আগেকার দু’টি চিঠির জবাব দেয়নি কেন? প্রশাসনের শীর্ষ মহলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, নন্দীগ্রামে গুলিচালনার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। সে-দিন কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারেরা তাঁদের নির্দেশ মেনেছিলেন মাত্র। ফলে সিবিআই যদি মূল ষড়যন্ত্রীদের ছাড় দিয়ে শুধু পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চায়, রাজ্য সরকার তা মানবে না।
২০০৭-এর ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলিতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা সিবিআই তদন্ত চেয়ে সরব হন। পরবর্তী কালে আদালতের নির্দেশে তদন্তে নামে সিবিআই। তদন্ত শেষে বছর দেড়েক আগে তারা চার্জশিটের খসড়া রিপোর্ট দেয় রাজ্যকে। তাতেই ছয় পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে নিয়ম না-মেনে গুলি চালানোর অভিযোগ আনা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) অরুণ গুপ্ত, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার গঞ্জি অনিল শ্রীনিবাসন, দুই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেবাশিস বড়াল এবং নন্দীগ্রাম ও খেজুরি থানার ওসি শেখর রায় ও অমিত হাতির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরুর অনুমতি চায় সিবিআই।
রাজ্য অনুমতি তো দেয়ইনি। উল্টে নন্দীগ্রাম কাণ্ডে বুদ্ধবাবুর ভূমিকা খতিয়ে দেখে নতুন চার্জশিট পেশ করতে অনুরোধ জানায় নবান্ন। সিবিআই জানিয়ে দেয়, গুলিচালনার ঘটনায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী যে জড়িত ছিলেন, তেমন কোনও তথ্যপ্রমাণ তাদের হাতে নেই। এ কথা জানিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফের ছয় পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করার অনুমতি চায়। কিন্তু রাজ্য সরকার তাতে কোনও সাড়া না-দেওয়ায় ফের নবান্নে চিঠি পাঠিয়েছে সিবিআই।