Advertisement
E-Paper

৮০ দিন পর শেষকৃত্য শাকিলের

বিস্ফোরণ-কাণ্ডের ৮০ দিন পরে, রবিবার শেষকৃত্য হল খাগড়াগড়ে নিহত জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ) চাঁই শাকিল গাজির। তার স্ত্রী, খাগড়াগড়-কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত রাজিয়া বিবিকে এনআইএ এ দিন বর্ধমানে নিয়ে যায়। রাজিয়ার উপস্থিতিতেই শেষকৃত্য হয় তার স্বামীর। তার আগে এ দিন রাজিয়াকে দিয়ে শাকিলের দেহ সরকারি ভাবে শনাক্তও করান তদন্তকারীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫০
রাজিয়া বিবির কান্না। ছবি: উদিত সিংহ।

রাজিয়া বিবির কান্না। ছবি: উদিত সিংহ।

বিস্ফোরণ-কাণ্ডের ৮০ দিন পরে, রবিবার শেষকৃত্য হল খাগড়াগড়ে নিহত জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ) চাঁই শাকিল গাজির। তার স্ত্রী, খাগড়াগড়-কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত রাজিয়া বিবিকে এনআইএ এ দিন বর্ধমানে নিয়ে যায়। রাজিয়ার উপস্থিতিতেই শেষকৃত্য হয় তার স্বামীর। তার আগে এ দিন রাজিয়াকে দিয়ে শাকিলের দেহ সরকারি ভাবে শনাক্তও করান তদন্তকারীরা।

গত ২ অক্টোবর খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণে নিহত হয় দু’জন। তাদের মধ্যে বীরভূমের কীর্ণাহারের আব্দুল করিমের দেহ মাসখানেক আগে শনাক্ত করে নিয়ে যান তার বাবা। কিন্তু শাকিলের দেহ এত দিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পড়েছিল। অথচ বিস্ফোরণস্থল থেকেই শাকিলের স্ত্রী রাজিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে শাকিলের পরিচয় জানা যায়, সে যে আদতে বাংলাদেশের নাগরিক, তা-ও জানতে পারেন গোয়েন্দারা। তার পরেও শেষকৃত্যে দেরি হল কেন?

এনআইএ-র এক শীর্ষকর্তার ব্যাখ্যা, “যতক্ষণ না আমরা নিহতের পরিচয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হচ্ছি, ততক্ষণ শেষকৃত্য হয় না। কোনও নিকটাত্মীয় দেহ চেয়ে আবেদন করেন কি না, সে জন্যও অপেক্ষা করা হয়। এ ক্ষেত্রেও আমরা সেই নিয়ম মেনেছি।” তিনি জানান, স্বামীর শেষকৃত্য করতে চেয়ে সম্প্রতি আবেদন জানায় শাকিলের তিন সন্তানের জননী রাজিয়া। সেই আবেদন বিবেচনা করার পর এ দিন শাকিলের শেষকৃত্য হয়।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের বাসিন্দা শাকিল বছর সাতেক আগে এ দেশে এসে নদিয়ার করিমপুরের বারবাকপুরের রাজিয়াকে বিয়ে করে। শ্বশুরকে নিজের বাবা পরিচয় দিয়ে করিমপুরের ঠিকানায় ভোটার আইডি কার্ড-ও জোগাড় করে সে। তার পর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বিস্ফোরকের গবেষণাগার চালাচ্ছিল শাকিল। ঘটনার মাস তিনেক আগে থেকে তারা খাগড়াগড়ে থাকতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, রাজিয়াকে বিয়ে করার পর শাকিল কলকাতার মেটিয়াবুরুজেও কিছুকাল ছিল।

শনিবার কলকাতা নগর দায়রা আদালতের নির্দেশে রাজিয়াকে ফের তিন দিনের জন্য হেফাজতে নেয় এনআইএ। তার পর রবিবার দুপুর ১টা নাগাদ এনআইএ অফিসারদের সঙ্গে সন্তান কোলে রাজিয়া বর্ধমান থানায় পৌঁছয়। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দেহ হস্তান্তরের নথিপত্রে সই করানোর পরে তাকে দিয়ে শাকিলের দেহ শনাক্ত করানো হয়। স্বামীর ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখেও যার চোখে জল ছিল না, সেই রাজিয়াই কাঁদতে কাঁদতে মর্গ থেকে বেরিয়ে আসে।

স্থানীয় কারবালা উন্নয়ন কমিটির ভ্যানে করে শাকিলের দেহ নিয়ে গিয়ে কবর দেওয়া হয় বর্ধমানের আলমগঞ্জে। ওই কমিটির সম্পাদক ফারুক আনসারি জানান, কবরস্থলে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও এ দিন পুলিশের অনুরোধে রাজিয়াকে ভিতরে ঢুকে কবরে মাটি দিতে দেওয়া হয়েছে। বিকেলেই রাজিয়াকে নিয়ে কলকাতা যাওয়া হয়। এনআইএ-র এক কর্তা জানান, শাকিলের দেহের ডিএনএ-নমুনা সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।

রবিবার রাতে বরপেটার ভবানীপুর থেকে কারিগরি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নাহিমুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে স্পেশাল ব্রাঞ্চ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গুয়াহাটি নিয়ে আসা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এ দিনই অসমের বরপেটায় কলাবাগান থেকে ১০টি বোমা উদ্ধার করে অসম পুলিশের বিশেষ শাখা। খাগড়াগড়ে তৈরি হওয়া বেশ কিছু বোমা এ রাজ্যে মজুত হয়েছে বলে আগেই দাবি করেছিল পুলিশ। তবে ওই বোমাগুলি বর্ধমানে তৈরি কি না, এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। আইজি (আইন শৃঙ্খলা) সত্যেন্দ্র নারায়ণ সিংহ জানান, জামাত নেতা শাহনুর জেরায় জানিয়েছিল, নলবাড়ি ও বাক্সায় কিছু বোমা রাখা আছে। তার হদিস জানে বাক্সার নুরজামাল হক। দু’দিন আগে বাক্সা থেকে নুরজামালকে ধরার পরে তাকে জেরা করে এ দিন বাক্সা-বরপেটার সীমানায় পাতাচরকুচি এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। পানপুর গ্রামে মাটিতে পোঁতা বোমাগুলি মেলে। নমুনা রেখে সেগুলি ফাটিয়ে ফেলে পুলিশ। বোমা উদ্ধারকারী দলটি জানায়, গ্রেনেডের ধাঁচে তৈরি হলেও এই বোমার ভিতরে কোনও সার্কিট বা আরডিএক্স ধরনের বিস্ফোরক ছিল না।

khagragarh blast rajia bibi abdul karim shakil gazi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy