দুর্ঘটনাস্থলে ভিড়। মঙ্গলবার বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মন্দবাগ স্টেশনের কাছে। নিজস্ব চিত্র
সিগন্যাল উপেক্ষা করার বড় ধরনের মাসুল দিতে হল। বাংলাদেশে দু’টি ট্রেনের সংঘর্ষে মৃত্যু হল ১৬ জনের। আহত ৬০-৬৫ জন। গত কাল রাত ৩টে নাগাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মন্দবাগ স্টেশনের কাছে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পরে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, তূর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল অমান্য করার জন্যই এই দুর্ঘটনা। তূর্ণা নিশীথার দুই চালক-সহ তিন জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রেল মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, যেখানে দুর্ঘটনা ঘটে তার আগে সিগন্যাল মেনে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসটি মন্দবাগ স্টেশনের মেন লাইন থেকে লুপ লাইনে (সাইড লাইন) ঢুকেছিল। ওই সময়েই বিপরীত দিক থেকে মেন লাইন দিয়ে আসছিল ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা। কিন্তু সিগন্যাল ‘লাল’ থাকা সত্ত্বেও তূর্ণা নিশীথার চালক স্টেশনে ট্রেনটিকে দাঁড় করাননি। ফলে লুপ লাইনে উঠতে থাকা উদয়ন এক্সপ্রেসের মাঝখানের কামরাগুলিতে ধাক্কা মারে তূর্ণা। ট্রেনটির গতি এতটাই তীব্র ছিল যে উদয়ন এক্সপ্রেসের তিনটি কামরা কার্যত চুরমার হয়ে যায়।
উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রী কওসার দুর্ঘটনার মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘‘ট্রেন মন্দভাগ স্টেশনে পৌঁছনোর আগেই সজোরে ধাক্কা খায়। ভেবেছিলাম, কেউ বোমা মেরেছে! মনে হয়েছিল ট্রেনটি ১০ হাত উপরে উঠে নীচে পড়ল। আমি নীচের আসনের উপর আছড়ে পড়লাম। উদ্ধারকারীরা আসার পরে আমার পাশে পড়ে থাকা তিন বছরের একটি মেয়ের দেহ তাঁদের হাতে তুলে দিই। তখনই জ্ঞান হারাই।’’ কওসার কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর পাঁজর ভেঙেছে। পায়েও আঘাত পেয়েছেন। দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া মমিনুল নামের এক যাত্রীর কথায়, ‘‘ট্রেন থেকে বেরিয়ে দেখি কয়েক জনের ছিন্নবিচ্ছিন্ন শরীর পড়ে আছে। মৃত্যুর খুব কাছে ছিলাম।’’
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচটি তদন্ত দল গড়া হয়েছে। মৃতদের পরিচয় জানা গিয়েছে। সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, ক্ষতিপূরণ হিসেবে মৃতদের পরিবারকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার ভার ও ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy