Advertisement
১৮ মে ২০২৪

দরগায় বেহুঁশ করে হত্যালীলা

মাঝরাতে দরগার মধ্যে চলল নৃশংস হত্যালীলা। মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে লাঠি মেরে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে ২০ জনকে খুন করল দরগারই কেয়ারটেকার। শনিবার এই ঘটনার সাক্ষী থাকল পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের মহম্মদ আলি গুজ্জরের দরগা।

লাহৌর
সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

মাঝরাতে দরগার মধ্যে চলল নৃশংস হত্যালীলা। মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে লাঠি মেরে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে ২০ জনকে খুন করল দরগারই কেয়ারটেকার। শনিবার এই ঘটনার সাক্ষী থাকল পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের মহম্মদ আলি গুজ্জরের দরগা।

গত কাল রাতে দরগায় এসেছিলেন ওই ২০ জন পুণ্যার্থী। নিহতদের মধ্যে ছ’জন একই পরিবারের। দরগার দেখভালের দায়িত্বে থাকা আব্দুল ওয়াহিদ (৫০) রোজকার মতোই সেখানে ছিল। কিন্তু ওই পুণ্যার্থীরা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি কী অপেক্ষা করে আছে তাঁদের জন্য। সারগোধা জেলার একটি গ্রামে মহম্মদ আলি গুজ্জরের এই দরগায় দর্শনার্থীদের আনাগোনা হতেই থাকে।

জেলার ডেপুটি কমিশনার লিয়াকত আলি চাত্তা জানিয়েছেন, আব্দুল ওয়াহিদ মানসিক ভাবে অসুস্থ বলে স্থানীয়দের অনেকে দাবি করেছে। সে নাকি নিজেই ফোন করে ওই ২০ জনকে দরগায় ডেকে আনে। আব্দুলের রোষ থেকে কোনও মতে রক্ষা পেয়েছেন দুই মহিলা এবং আর কয়েক জন পুরুষ। আহত অবস্থায় তাঁরাই ছুটে বাইরে এসে ঘটনার কথা সবাইকে জানান। তার পরেই খবর যায় পুলিশের কাছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

চাত্তা বলেছেন, ওই কেয়ারটেকার আব্দুল প্রথমে দর্শনার্থীদের মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে। তার পরে তাঁদের নগ্ন করে পিটিয়ে, ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। নিহতের মধ্যে তিন জন মহিলাও রয়েছেন। সারগোধার এক চিকিৎসকের দাবি অনুযায়ী, নিহতদের সংজ্ঞাহীন করে বারবার লাঠি দিয়ে মারা হয়। দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার পরে ছুরিও মারা হয় একাধিক বার।

পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে জেনেছে, পাপস্খালনের জন্য অনেকেই দরগায় আসতেন। আর পাপ দূর করার জন্য আব্দুল তাঁদের লাঠিপেটা করলেও আপত্তি করতেন না কেউ। সেই জন্যই কি আব্দুলের দেওয়া মাদক খেয়ে তাঁরা প্রাথমিক প্রতিরোধটুকুও গড়ে তুলতে পারেননি? উত্তর খোঁজা চলছে তার। কিন্তু কোথায় যে গোলমাল হলো, কেউই বুঝতে পারছেন না।

লাহৌর থেকে দু’শো কিলোমিটার দূরে সারগোধা জেলার এই দরগা তৈরি হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। স্থানীয় ধর্মগুরু আলি মহম্মদ গুজ্জরের সমাধির উপরেই গড়ে উঠেছিল দরগাটি। ডেপুটি কমিশনার চাত্তা জানাচ্ছেন, আব্দুল পাক নির্বাচন কমিশনে কাজ করে। লাহৌরের বাসিন্দা। পুলিশের কাছে তার দাবি, ওই দর্শনার্থীরা তার গুরু মহম্মদ গুজ্জরকে বিষ খাইয়েছিল দু’বছর আগে। তার পর তাঁর সমাধির উপরেই এই দরগা হয়। আব্দুলের দাবি, ওই ২০ জন দর্শনার্থীকে না মারলে ওঁরা তাকেও বিষ খাইয়ে দিতেন। সেখানেও ধন্দ থাকছে। কারণ আব্দুলের ছুরির কোপে পড়তে হয়েছে মহম্মদ
গুজ্জরের ছেলে আসিফ পির আলিকেও। পুলিশ আব্দুল-সহ মোট পাঁচ জনকে জেরা করছে।

জখমদের মধ্যে এক জন আবার পুলিশকে জানিয়েছেন, দরগার দখল নিতে গিয়ে দুই কেয়ারটেকার, আব্দুল এবং ইউসুফের গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাই এই পরিণতি। আপাতত দরগা চত্বর ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Dargah Caretaker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE