প্রকাশ্যে গুলি করে তিন মহিলা সাংবাদিককে খুন করা হল। পূর্ব আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহরের ঘটনা।
সরকারি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কাজ সেরে ঘরে ফেরার পথে তাঁদের মাথায় গুলি করে আততায়ীরা। গুলিতে জখম হয়েছেন আর এক মহিলা সাংবাদিক। তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। প্রাদেশিক শীর্ষ পুলিশকর্তা জুমা গুল হেমাট জানিয়েছেন, কারি বশির নামে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে সে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে।
জঙ্গি নিশানায় থাকা চার মহিলাই ‘এনিকাস টিভি’ নামে স্থানীয় একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের কর্মী ছিলেন। ওই চ্যানেলের প্রধান জ়ালমাই লতিফি জানান, নিহত তিন তরুণীর বয়স ১৮ থেকে ২০-এর মধ্যে। সদ্য কলেজের পাট চুকিয়ে তাঁরা ‘ডাবিং’ বিভাগে কাজে যোগ দিয়েছিলেন।
সাংবাদিকদের উপরে জঙ্গি হামলার ঘটনা আফগানিস্তানে নতুন নয়। ২০১৮ সালে চ্যানেল খোলার পর পরেই জ়ালমাই লতিফিকেও অপহরণ করে পণবন্দি করেছিল জঙ্গিরা। লতিফি জানান, তাঁর চ্যানেলে যোগ দেওয়া ১০ জন মহিলা কর্মীর মধ্যে ৪ জনকেই মেরে ফেলা হয়েছে। গত কয়েক মাসে আফগানিস্তানে সাংবাদিক, সমাজকর্মী, সরকারি কর্মচারীদের লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা হয়েছে। কখনও গুলি চালিয়ে, কখনও গাড়ি বোমায় তাঁদের উড়িয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা।
২০২০ সালের নভেম্বরে দু’টি পৃথক বিস্ফোরণে নিহত হন এলিয়াস দায়ী ও ইয়ামা সিয়াওয়াশ নামে দুই মহিলা সংবাদমাধ্যম-কর্মী। ওই ঘটনার এক মাসের মাথায়, অফিস যাওয়ার পথে খুন হন এনিকাস টিভির আর এক মহিলা সাংবাদিক মালালাই মাইওয়ান্দ। গুলি চালিয়ে খুন করা হয় তাঁর গাড়ির চালককেও।
এই সমস্ত হামলায় অভিযোগের তির তালিবানের দিকে থাকলেও তারা বরাবর তা অস্বীকার করেছে।
বেশ কিছু দিন ধরে আমেরিকার সঙ্গে শান্তিচুক্তির জন্য কথা চালাচ্ছে আফগান সরকার ও তালিবান। ওই চুক্তি সম্পন্ন হলে, আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল আমেরিকা। তবে জো বাইডেন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে, সেই প্রক্রিয়া কিছুটা থমকে গিয়েছে। নতুন সরকার পুরো বিষয়টি পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মধ্যেই একের পর এক হামলার ঘটনা।
পূর্ব আফগানিস্তানের নানগহর প্রদেশে আবার ঘাঁটি রয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-এর একটি শাখার।
তারাও এই হামলা চালাতে পারে মনে করছেন অনেকে। মঙ্গলবারের ঘটনার কঠোর নিন্দা করেছে কাবুলের আমেরিকান দূতাবাস। টুইটারে তারা বিবৃতি দিয়ে
জানিয়েছে, ‘‘সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে, তাদের দমিয়ে রাখতে এই হামলা চালানো হয়েছে। বাক্স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়াই দুষ্কৃতীদের মূল উদ্দেশ্য। এটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy