অশান্ত: ওয়াশিংটনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষ। রয়টার্স
ভোটের ফলপ্রকাশের পরেও উত্তপ্ত আমেরিকা। জো বাইডেনের কাছে পরাজয়ের পর থেকেই কারচুপির তত্ত্বে অটল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি আদালতে মুখ পুড়লেও দমছেন না প্রেসিডেন্ট। প্রিয় প্রেসিডেন্টের সুরে সুর মিলিয়েই নির্বাচন খারিজ ও ট্রাম্পের শাসনের মেয়াদ আরও চার বছর বৃদ্ধির দাবিতে শনিবার ওয়াশিংটনে
পথে নামলেন তাঁর অনুগামীরা। মিছিলের বিরোধিতায় পথে নামেন বিরোধীদের একাংশও। এর পরেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। গুলিও চলে। ঘটনায় আহত হয়েছেন এক জন। ছুরিবিদ্ধ হয়ে জখম হয়েছেন আরও চার জন। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ওয়াশিংটন পুলিশ টুইটে জানিয়েছে, অলিম্পিয়ায় ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের কাছে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনায় এক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে অবশ্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: স্মৃতিলোপের শঙ্কা বাড়ছে ঘরবন্দি প্রবীণদের, উদ্বেগ
আরও পড়ুন: স্কুল খোলা নিয়ে চিন্তায় আদালত
সম্প্রতি ট্রাম্পের পক্ষ নিয়ে টেক্সাস প্রদেশের তরফে করা মামলা খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্টের সমর্থনে উৎসবের মেজাজেই দিনটা শুরু করেছিলেন ট্রাম্পপন্থীরা। হোয়াইট হাউসের অদূরে ফ্রিডম প্লাজ়ায় হাজারেরও বেশি সমর্থক জমায়েত করেন।
মাথায় লাল টুপি, জামায় ‘ট্রাম্প ২০২৪’ লেখা ব্যাজ পরেও পথে নামেন অনেকে। মাসখানেক আগেও হাজার দশেক ট্রাম্প সমর্থক রাস্তায় নেমেছিলেন। সেই দিনের তুলনায় এ দিনের মিছিল অবশ্য শুরু থেকেই কিছুটা নিষ্প্রভ। তবে সমর্থকদের বিশ্বাস এখনও অটুট। ষাটোর্ধ্ব লিউক উইলসন জানান, হাল ছাড়ছেন না তাঁরা। ট্রাম্পের মতোই ভোট জালিয়াতির তত্ত্ব তাঁদের মুখে। আবার কেউ কেউ ট্রাম্পের পরাজয়ের পিছনে বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্রের তত্ত্বও ভাসিয়ে দিয়েছেন। মিছিলের এই ছবি দেখা গিয়েছে আটলান্টা, মিনেসোটা, নেব্রাস্কা, আলাবামাতেও।
ইতিমধ্যেই নির্বাচনী ফলাফল খারিজের আর্জি নিয়ে দেশের নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে শীর্ষ আদালত পর্যন্ত বিচারবিভাগের বিভিন্ন স্তরের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকেরা। অন্তত ৮৬ জন বিচারপতি ট্রাম্পের আবেদন খারিজ করেছেন। এমনকি উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া এ হেন গুরুতর অভিযোগের সমালোচনাও করেছেন বিভিন্ন বিচারপতি। ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানদের মনোনীত বিচারপতিরাও রয়েছেন সেই তালিকায়।
এমনই এক জন আমেরিকার সার্কিট কোর্টের বিচারক স্টেফানস বিবাসকে ২০১৭ সালে বিচারক পদে মনোনীত করেছিলেন স্বয়ং ট্রাম্পই। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়েছেন, আইনজীবীরা নন, ভোটাররাই নির্বাচন করেন প্রেসিডেন্ট। গত বছর ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক হিসেবে ট্রাম্পের মনোনীত স্টিভেন ডি গ্রিমবার্গের এজলাসে রিপাবলিকানদের তরফে আবেদন করা হয়, জর্জিয়ায় বাইডেনের জয় স্থগিত রাখা হোক। যদিও কোনও সারবত্তা নেই বলে মামলা খারিজ করেছেন বিচারক গ্রিমবার্গ। এই তালিকায় নয়া সংযোজন বিচারক ব্রেট এইচ লুডউইগ। সেপ্টেম্বরেই বিচারকের পদে তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ট্রাম্প। উইসকনসিনে ভোটের ফলাফল খারিজের আর্জি বাতিল করে এই আবেদনকে ‘এক্সট্রাঅর্ডিনারি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিচারক লুডউইগ।
সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতি-সহ দু’শোরও বেশি বিচারপতিকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ট্রাম্প। বরাবরই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভোটে কাঙ্খিত ফলাফল না-হলে বিচারবিভাগকে পাশে নিয়েই মসনদ দখল করবেন। এমনকি ১০ ডিসেম্বরেও ট্রাম্পের টুইট, ‘আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নির্বাচনী জালিয়াতি থেকে দেশকে বাঁচানোর সুযোগ রয়েছে
সুপ্রিম কোর্টের। ৭৮ শতাংশ মানুষই জানেন নির্বাচনে কারচুপি করা হয়েছে।’ তবে শেষ ভরসা আদালতেও খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে বর্তমান প্রেসিডেন্টকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy