প্রতীকী ছবি।
বর নয়, চুয়াডাঙার হাজারহাটি থেকে গাড়ি চড়ে কনে এল বরের বাড়ি বিয়ে করতে। সঙ্গে কনেযাত্রীরা। বরের বাড়ির লোকজন তো বটেই, স্বয়ং বরও নিজের বাড়ির দোরগোড়ায় স্বাগত জানালেন কনে খাদিজা আক্তার খুশিকে। মেহেরপুরের গাংনি উপজেলার চৌগাছা গ্রামে বর তরিকুল ইসলাম জয়ের বাড়িতে ম্যারাপ বেঁধে বিয়ের তোড়জোড়। রবিবার ইসলামি রীতিতে বিয়ের পরে সোমবার ফের বরকে নিয়ে নিজের বাড়ি ফিরলেন কনে খাদিজা। সেখানে বৌভাতের বদলে আয়োজন ছিল ‘বরভাত’-এর।
বর-কনে তো বটেই, দুই বাড়ি আলোচনা করেই প্রথা ভেঙে এই বিয়ের আয়োজন করেছিল। সাধারণ মানুষের ছিল প্রবল কৌতূহল। টিভি চ্যানেলগুলিও দিনভর সম্প্রচার করেছে এই ‘ভিন্ন রীতির’ বিয়ের। কিন্তু সোশ্যাল সাইটে প্রগতিশীলেরা এই বিয়ের পক্ষে মত দিতেই গেল গেল রব তুলেছেন প্রাচীনপন্থীরা। এত কাল বর এসে বিয়ে করে নিয়ে গিয়েছে কনেকে। সেটাই নিয়ম। কনে কেন বরকে বিয়ে করে নিজের বাড়িতে আনবে? কেউ কেউ তো ‘অবৈধ’ বলেও রায় দিতে ছাড়েনি খাদিজা-জয়ের বিয়েকে। তাঁদের দাবি, ইসলামি বিয়ের নিয়মকে লঙ্ঘন করেছেন বর-কনে। এমনটা চলতে থাকলে সমাজ যে রসাতলে যাবে!
কুষ্টিয়া ইসলামি কলেজের ছাত্রী খাদিজা বলছেন, ‘‘মুখে আমরা নারী-পুরুষের সমানাধিকারের কথা বলি। কিন্তু বর গিয়ে কনেকে বিয়ে করে আনে। উল্টোটা করতে গেলে বাধা হয় সমাজ আর প্রথা। আমরা বিষয়টি দুই বাড়িতে জানালে তাঁরা বাধা দেননি। প্রতিবেশীরাও আশীর্বাদই করেছেন। এই প্রথা ভাঙার সাহস দেখিয়েছি। আশা করব, ভবিষ্যতে আরও অনেকে প্রথা ভাঙবে।’’ খাদিজার শ্বশুর আব্দুল মাবুদ এলাকার পরিচিত বামপন্থী কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মুখে আমরা প্রগতিশীল কথা বললেও, কাজের বেলায় প্রথার দোহাই দিই। নারী ও পুরুষের সাম্যের বার্তাই দিতে চেয়েছি এই বিয়েতে।’’ বরভাত মিটলে খাদিজা জয়ের বাড়িতেই ফিরবেন সংসার পাততে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy