Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
USA

অনলাইনে শিশুদের বর্ম দিচ্ছেন বাঙালি

শিশুদের জন্য তৈরি ১০০ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে ৭২টিই ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ ও বিলি করে দিচ্ছে। এটা আমেরিকার শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা ও গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন করছে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২০ ০৫:০৮
Share: Save:

দিন দিন শিশুদের মধ্যে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। তাতে শিশুদের ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে বলে শিক্ষক-গবেষকদের অভিমত। তাঁদের আশঙ্কা, স্মার্টফোন, ট্যাবলেটের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে শিশু অপহরণের ঘটনাও ঘটতে পারে। এই বিপদ থেকে বাঁচাতে শিশুদের অনলাইন গোপনীয়তা রক্ষার একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছেন আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, ডালাসের এক দল গবেষক।

অ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি হয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কণাদ বসুর নেতৃত্বে। গবেষকদলে রয়েছেন কলেজ পড়ুয়া সুহা হুসেন। সুহার আদি বাড়ি বাংলাদেশে। হাইস্কুলে পড়ার সময় থেকেই তিনি এই গবেষণায় যুক্ত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী কণাদবাবু বৃহস্পতিবার জানান, তাঁদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুদের জন্য তৈরি ১০০ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে ৭২টিই ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ ও বিলি করে দিচ্ছে। এটা আমেরিকার শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা ও গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন করছে।

‘‘অভিভাবকেরা হয়তো মনে করছেন, তাঁর সন্তান স্মার্টফোনে এমন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করছে, যাতে সে শিক্ষাই পাচ্ছে। এর থেকে কী এমন ক্ষতি হতে পারে! কিন্তু অনেক অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারকারীর অগোচরে নাম, অবস্থান, ফোন নম্বর এবং অ্যান্ড্রয়েড বিজ্ঞাপন আইডি-র মতো জিনিস ভাগ করে নেয়। মোবাইল ব্যবহারকারীর পরিচয় খুঁজে বার করার জন্য সেই আইডি দেওয়া হয় বিজ্ঞাপনদাতাদের,’’ বলেন কণাদবাবু।

পরিসংখ্যান দিয়ে কণাদবাবু জানান, আমেরিকায় ২০১১ সালে আট বছর বয়স পর্যন্ত ৪১% শিশু স্মার্টফোন ফোন ব্যবহার করত। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয় ৯৫%। ২০১১-য় এই বয়সের ৮% শিশু ট্যাবলেট ব্যবহার করত। ২০১৮-য় তা বেড়ে ৭৮% হয়েছে! ২০১১ সালে এই বয়সের ১% শিশুর কাছে নিজস্ব ট্যাবলেট ছিল। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪২%। শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্ব জুড়ে শিশুদের মধ্যে স্মার্টফোন

ও ট্যাবলেটের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। যে-সব অ্যাপ নির্দিষ্ট আইন মেনে চলে না, আমেরিকার ফেডারেল ট্রেড কমিশন তাদের নিয়মিত আর্থিক দণ্ড দেয়। এরই মধ্যে টিক টক অ্যাপকে প্রায় ৪৩ কোটি ভারতীয় টাকা অর্থদণ্ড দিতে হয়েছে। ব্যবহারকারীর গোপন তথ্য প্রকাশ করে দেওয়ায় ২০১৯ সালে ৭৫৭ কোটি ভারতীয় টাকা অর্থদণ্ড দিতে হয়েছে ফেসবুককেও।

এমন বিপদ থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্যই কণাদবাবুর নেতৃত্বাধীন গবেষকদল বিশেষ অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে। তবে তা সফটওয়্যারও নয়। সেটি মোবাইল ফোন, ট্যাবলেটের হার্ডওয়্যার লেভেলে কাজ করবে। ধরিয়ে দেবে কোনও অ্যাপ্লিকেশন গোপনীয়তা লঙ্ঘন করছে কি না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

USA Bengali Bengali Scientist Online Protection
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE