কাজের সূত্রে যেতে হয়েছিল সুদানে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত শহরে আটকে পড়েন বেশ কিছু দিন। ২৭ এপ্রিল ভোরে বাড়ি ফিরেছেন বছর ছাব্বিশের সুরজিৎ দে। জানালেন, যুদ্ধের স্মৃতি এখনও তাড়া করছে।
সুরজিৎ থাকেন উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান সুরজিৎ সফট্ওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। একটি ভারতীয় সংস্থায় কাজ করেন। সেই সূত্রেই ১ মার্চ গিয়েছিলেন সুদানে। রাজধানী খার্তুমে আরও পাঁচ ভারতীয়ের সঙ্গে হোটেলে থাকতেন। সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। বিপত্তি বাধে ১৫ এপ্রিল রাতে। সুদানের সেনার সঙ্গে আরএসএফের যুদ্ধ শুরু হয়। সুরজিৎ বলেন, “হঠাৎই বিকট শব্দ শুনতে পাই। প্রথমে ভেবেছিলাম, লক্ষ্মীপুজো বা কালীপুজোয় যেমন পটকা ফাটে, সে রকমই কিছু ঘটছে। কিছু ক্ষণের মধ্যে ভুল ভাঙে।”
সুরজিৎ জানান, তাঁরা যে হোটেলে ছিলেন, সেখান থেকে কিছুটা দূরেই একটি গয়নার দোকান দখল করে আরএসএফ। সেনাবাহিনী জানতে পেরে সেখানে মিসাইল ছোড়ে। একের পর এক বহুতল ভেঙে গুঁড়িয়ে যায়।
সুরজিৎদের হোটেলে খাবার ফুরিয়ে যায়। বিদ্যুৎ সংযোগ, ইন্টারনেট, টেলিফোন সংযোগ— কিছুই ছিল না। ঘণ্টাখানেকের জন্য বিদ্যুৎ থাকত হোটেলে। কোনও রকমে মোবাইলে সামান্য চার্জ দিয়ে বাড়িতে মেসেজ পাঠাতেন সকলে। সুরজিৎ-সহ ৪৯ জন ভারতীয় ২৪ এপ্রিল নিজেদের খরচেই ৯০০ কিলোমিটার দূরে পোর্ট সুদানে পৌঁছন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমানে সৌদি আরব হয়ে ২৬ এপ্রিল দিল্লিতে ফেরেন। সেখান থেকে বাড়ি। বিদেশে কাজে যাওয়ার ব্যাপারে ভয় ধরেছে যুবকের মনে। বললেন, ‘‘কাজেকর্মে ভবিষ্যতেও বাইরে যেতে হতে পারে। তবে এই স্মৃতিটা খুব সুখকর হল না।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)