ভারতে বসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের বিরোধিতা করাকে ভাল ভাবে নিচ্ছে না ঢাকা! ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীকে সে কথাই জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের বিদেশসচিব মহম্মদ জসীম উদ্দিন। এ বিষয়ে ভারত সরকারের অবস্থানও স্পষ্ট করেছেন বিক্রম। বিদেশ সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং (স্থায়ী) কমিটির বৈঠকে তিনি জানান, ভারতে থেকে আওয়ামী লীগের নেত্রীর বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বিবৃতি সমর্থন করে না নয়াদিল্লি! দিল্লি-ঢাকার আপত্তির পর এ বার নাম না করে ইউনূস প্রশাসনকে নিশানা করলেন হাসিনা!
শনিবার বাংলাদেশের ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’। সেই উপলক্ষে দেশবাসীর উদ্দেশে হাসিনার একটি লিখিত বিবৃতি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। সেই বিবৃতিতে সরাসরি ইউনূস প্রশাসনের নাম করেননি বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তবে তিনি লেখেন, ‘‘দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করে সাধারণ মানুষের উপর অমানবিক নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে জামাতে ইসলামী-সহ ১৯৭১-এর পরাজিত শক্তিকে পুনর্বাসন করছে।’’ মুক্তিযুদ্ধের স্মারকচিহ্ন ‘পরিকল্পিত ভাবে’ ধ্বংস করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন হাসিনা।
হাসিনার উদ্বেগ, বাংলাদেশে ‘গভীর সঙ্কটময়’ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশকে ‘জঙ্গিদের উর্বর লীলাভূমিতে পরিণত’ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁর। এই সব ‘অপশক্তি’র বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান দিলেন হাসিনা। তাঁর কথায়, ‘‘দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’’
আরও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তৈরি হওয়া জনবিক্ষোভের জেরে গত ৫ অগস্ট দেশত্যাগ করেছিলেন হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে গোপন আস্তানায় রয়েছেন। হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে এখন বাংলাদেশ সামলাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের বিরুদ্ধে প্রায়ই সুর চড়াতে শোনা গিয়েছে হাসিনাকে। কখনও আমেরিকার আওয়ামী লীগের সভায়, কখনও আবার লন্ডনে। ‘ভার্চুয়াল মাধ্যমে’ উপস্থিত হয়ে ইউনূস প্রশাসনের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। দাবি করেছেন, ‘‘বাংলাদেশে অরাজকতা চলছে। বাংলাদেশের মানুষের এখন ন্যায়বিচার চাওয়ার অধিকার নেই।’’ হাসিনার দাবি, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। ভারতে বসে হাসিনার ইউনূস প্রশাসন-বিরোধী বক্তৃতা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় বাংলাদেশ সরকার। পরে ভারত সরকারও এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে।