জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। ছবি: এএফপি।
শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা।
আমরা চ্যাম্পস এলিসেস-এ। থিয়েটার, ক্যাফে, রেস্তোরাঁ, লাক্সারি দোকান— গোটা দুনিয়ার কাছে এই অ্যাভিনিউয়ের খ্যাতি। আমার মেয়ে ক্লেয়ারি বাঁশি বাজায়। পোর্তে মাইলটে সম্প্রতি ওর কনসার্ট হয়েছে। অসম্ভব ভাল বাজিয়েছে ক্লেয়ারি। আর সেই সাফল্য সেলিব্রেট করতেই আমাদের এখানে আসা। ককটেল আওয়ার চলছে। বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব এসেছে। আমার জীবনের সেরা কয়েকটি রাতের মধ্যে অন্যতম এই রাত। সব কিছুই অতি সাধারণ, অথচ উষ্ণতায় মাখা এবং সুন্দর। আমরা উডি অ্যালেনের সাম্প্রতিক ছবিটা নিয়ে কথা বলছিলাম।
এর পর স্টিভ ম্যাককুইনের সঙ্গে হাল্কা মেজাজে রেস্তোরাঁ থেকে বেরিয়েও পড়ি।
আমরা এখন বাড়ি ফেরার জন্য দৌড়চ্ছি। এ এক বিভীষিকা! অকল্পনীয়! কান্না পাচ্ছে! বন্ধুদের জন্য চিন্তা হচ্ছে। বাবা-মা, পরিবার, সন্তান— সকলের কথা মাথায় ঘুরছে।
রাত সাড়ে ১০টা।
আমাদের আবাসন চত্বরের সামনেটা আলোয় আলোময়। হাতের মুঠোয় ধরে রাখা মোবাইল ফোনটা অনবরত কাঁপছে। প্রচুর, প্রচুর এসএমএস।
‘কেমন আছ তোমরা?’
‘ক্লেয়ারি কোথায়?’
‘প্যারিসে হামলা হয়েছে।’
‘ভিনসেন্ট কোথায়? রমেইন, গুইলওম, আমানদিনে, মাতিলদে, পেরিইনে, জিমি?’
মাতিলদে মাঝে মাঝে বাতাক্লাঁতে গান গায়। ওটা তো তরুণদেরই জায়গা।
আমরা যাঁদের ভালবাসি, এ যেন তাঁদের সমস্ত ভাল খবর জোগাড় করার একটা রাত।
ভাগ্য কী ভাল!
সবাই বেঁচে আছে।
কিন্তু, পরের বার?
ক্লেয়ারি কিন্তু ওর কনসার্ট চালিয়ে যাবে...
হার্ট ভীষণ দ্রুত চলছে। প্রতিটা বিট যেন নিজেই শুনতে পাচ্ছি!
ক্রিসমাসের অপেক্ষায় ছিল প্যারিস। সকল প্রস্তুতিই প্রায় সারা হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু বাড়ি ইতিমধ্যেই লাল রঙের আলোয় ঝলমল করছে। কিসের অপেক্ষায় থাকা, আর কী হল!
লেখক ফ্র্যান্সের এক জন নাট্য সমালোচক এবং ফিল্মের কাস্টিং ডিরেক্টর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy