E-Paper

প্রশ্ন মৃতের হিসাবে, সরকারি আশ্বাসেও

দুর্ঘটনার পরে মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, আহতদের চিকিৎসার ভার প্রশাসনের। কিন্তু ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালগুলির অভিযোগ, সরকারি ভাবে এখনও যোগাযোগ করা হয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৬:৪৪
বাংলাদেশের ঢাকায় স্কুলভবনে বায়ুসেনার বিমান ভেঙে পড়ার পর উদ্ধারকাজের একটি মুহূর্ত।

বাংলাদেশের ঢাকায় স্কুলভবনে বায়ুসেনার বিমান ভেঙে পড়ার পর উদ্ধারকাজের একটি মুহূর্ত। —ফাইল চিত্র।

ঢাকায় বিমান দুর্ঘটনায় মুহ্যমান বাংলাদেশ। প্রতি দিনই খবর মিলছে হাসপাতালে এক-একটি ফুটফুটে শিশু ঝরে যাচ্ছে। শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয়েছে আইমান নামে বছর দশেকের এক শিক্ষার্থীর। তবে মোট কত জন প্রাণ হারিয়েছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। দুর্ঘটনার পরে মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, আহতদের চিকিৎসার ভার প্রশাসনের। কিন্তু ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালগুলির অভিযোগ, সরকারি ভাবে এখনও যোগাযোগ করা হয়নি।

গত সোমবার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সামরিক বিমান ভেঙে পড়ার পর থেকেই মৃতের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য বলছে এ দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত, ওই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ৩২ জন। বিভিন্ন হাসপাতালে ৫১ জন চিকিৎসাধীন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর)-এর হিসাবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৩২ জন মারা গিয়েছেন। আইএসপিআর এর পর আর মৃত্যুর হিসাব দেয়নি। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০ শিক্ষার্থী, ২ জন শিক্ষক ও ২ জন অভিভাবক প্রাণ হারিয়েছেন। বেসরকারি সূত্রের দাবি, সরকারের প্রকাশিত তথ্য যাই বলুক, মৃতের সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। আর এখানেই সংখ্যা গোপনের অভিযোগ তুলছে অনেকে।

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি থাকা ১০ বছরের আইমানকে এ দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ওই পড়ুয়ার দেহের প্রায় ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। দুর্ঘটনার দিন ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ৩০ বছরের আফসানা প্রিয়া। বৃহস্পতিবার ডিএনএ পরীক্ষায় তাঁর মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়। আফসানার কাকা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমার ভাতিজি আফসানার উপরেই বিমানটি ভেঙে পড়েছিল। ওর শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এ জন্য দেহটি কার, তা বোঝা যায়নি।’’ আগামী রবিবার আংশিক ভাবে খুলবে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ওই দিন নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চালু হবে বলে জানিয়েছেন স্কুলের জনসংযোগ আধিকারিক শাহ বুলবুল।

দুর্ঘটনার পরই স্বাস্থ্য মন্ত্রক আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসার কথা ঘোষণা করেছিল। উত্তরার চারটি বেসরকারি হাসপাতালে শিক্ষার্থী-সহ ১৫২ জনের চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালগুলি বলছে, সরকারি নির্দেশ আসার আগেই তারা মানবিকতার জায়গা থেকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা করছেন। যদিও এ বিষয়ে সরকারের কেউ যোগাযোগ করেনি। হাসপাতালের বেডে শুয়ে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া সালমান বলে, ‘‘এখনও পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি। তবে চিকিৎসার জন্য খরচ হয়নি।’’

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্যআধিকারিক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরপরই দগ্ধ শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে সব হাসপাতালে চিঠি দেওয়া হয়।’ কিন্তু হাসপাতালগুলোর সঙ্গে পরে কেন যোগাযোগ করা হয়নি, সেই প্রশ্নে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। অন্য দিকে, দুর্ঘটনায় গুরুতর আহতদের চিকিৎসায় ভারত থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দল ঢাকায় পৌঁছে গিয়েছে। আজ ঢাকার চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁরা দ্বিতীয় বৈঠক করেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

dhaka Bangladesh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy