ভেনেজ়ুয়েলার এক দল অবৈধ অভিবাসী, তথা দুষ্কৃতীদলের সদস্যকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আমেরিকার সু্প্রিম কোর্টের স্তক্ষেপে আপাতত থমকে গেল। ২২৭ বছরের পুরনো ‘এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট’ নামে একটি যুদ্ধকালীন আইনের সাহায্যে সম্প্রতি ওই ২৬১ জনকে ভেনেজ়ুয়েলায় ফেরত পাঠানোর তোড়জোড় করছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। শনিবার সুপ্রিম কোর্ট এই ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
‘এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট’ নামে ওই আইনটি ১৭৯৮ সালের। এই আইনটি আসলে যুদ্ধের সময়ে শত্রুপক্ষের নাগরিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তৈরি হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি ছিল, মাদকপাচার এবং অপরাধমূলক কাজে জড়িত ভেনেজ়ুয়েলার ওই অভিবাসীরা দেশের শত্রুপক্ষ।
যদিও, ওই দলের সদস্য বলে দেগে দেওয়া কয়েক জনের দাবি, তাঁরা মোটেই দুষ্কৃতী নন। যা হোক, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আইনটির ব্যবহার হয়নি আমেরিকায়।
দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এলে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে ওই আইন ফের ব্যবহার করতে চান বলে আগেই জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু গত ১৫ মার্চ নিম্ন আদালত ওই আইনে অবৈধ অভিবাসী বিতাড়নের প্রক্রিয়া সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। তবে ৮ এপ্রিল সেই স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে শীর্ষ আদালত জানায়, ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য বন্দিদের অন্তত একটা সুযোগ
দিতেই হবে।
ভেনেজ়ুয়েলার ওই নাগরিকেরা এখন টেক্সাসের কুখ্যাত এল সালভাদর জেলে বন্দি। তাঁদের অধিকার নিয়ে লড়াই করা একটি সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ জানায়, বন্দিদের ভেনেজ়ুয়েলার ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে বলে সম্প্রতি সরকার জেলে নোটিস পাঠায়। কিন্তু নোটিসটি ইংরেজিতে লেখা ছিল। অথচ বন্দিরা শুধুমাত্র স্প্যানিশ ভাষা জানেন। তাঁদের কাছে নোটিসের বক্তব্য ব্যাখ্যা
করা হয়নি।
এর পাশাপাশি, সরকারির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা যে আদালতে যেতে পারেন, সেই তথ্যও জানানো হয়নি। নির্দিষ্ট ওই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট। সংবাদ সংস্থা
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)