Advertisement
E-Paper

মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রাজনৈতিক খুন! হাসিনা জমানার ‘বিভীষিকা’ র‍্যাবের শীর্ষপদে রদবদল

২০২০ সালে র‍্যাবের সিনিয়র কর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে জো বাইডেন সরকারে কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠিয়েছিল আমেরিকার সেনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ১৭:২৮
Amid chaos in Bangladesh, new Chiefs appointed for Rapid Action Batallion and Dhaka Metropolitan Police

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বিরোধীদের অনেকে বলতেন, ‘মুজিবুর রহমানের জমানার রক্ষীবাহিনীর নতুন সংস্করণ’! সন্ত্রাসদমন, মাদক চোরাচালান রোধ, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে অভিযানের জন্য গড়া এই বাহিনীকে শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধীদের দমনপীড়ন, অবৈধ ভাবে আটক করে রাখা, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো, এমনকি গুপ্তহত্যার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বারে বারেই!

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পরে এ বার কোপ পড়ল সেই সেই র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (যা বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে ‘র‌্যাব’ নামেই পরিচিত)-এর উপরে। বাংলাদেশ সেনার কয়েক জন উচ্চপদস্থ অফিসারের পাশাপাশি রদবদল হয়েছে র‌্যাবে। ‘হাসিনা ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত র‌্যাব প্রধান হারুন উর-রশিদকে সরিয়ে বুধবার বাহিনীর নতুন ডিজি করা হয়েছে একেএম শহিদুর রহমানকে। পাশাপাশি, রদবদল হয়েছে ঢাকার পুলিশ কমিশনার পদেও।

গত ২৯ মে র‍্যাবের ডিজি হিসাবে হারুনকে নিয়োগ করেছিল হাসিনা সরকার। আড়াই মাসের মধ্যেই তাঁকে বদলি করা হল। গত ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন পর্বে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের বিরুদ্ধেও হামলার অভিযোগ উঠেছে। হেলিকপ্টার থেকে কাঁদানে গ্যাসের শেল আর সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের অভিযোগ ওঠে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী পদে হাসিনার ইস্তফা এবং দেশত্যাগের পর পাল্টা হামলায় পুলিশকর্মীদের পাশাপাশি খুন হয়েছেন বেশ কয়েক জন র‌্যাব সদস্যও।

শুধু বাংলাদেশের অন্দরে নয়, হাসিনার জমানায় মানবাধিকার লঙ্ঘন আর গুপ্তহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচিত হয়েছে র‌্যাবের নাম। ২০২০ সালে র‍্যাবের সিনিয়র কর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠিয়েছিল আমেরিকার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটি। সে সময় তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, হাসিনা জমানায় ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশে ৪০০-র বেশি মানুষের বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে র‍্যাব ‘প্রত্যক্ষ ভাবে’ জড়িত!

প্রধানমন্ত্রী পদে হাসিনার পূর্বসূরি খালেদা জিয়ার আমলে ২০০৪ সালে র‍্যাব গড়া হয়েছিল। বাংলাদেশ সেনা, বিডিআর (বর্তমানে নাম বদলে বিজিবি), ব্যাটেলিয়ন আনসার এবং বাছাই করা সদস্যদের নিয়ে গড়া ওই বাহিনী প্রাথমিক পর্যায়ে সন্ত্রাস দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। ২০০৬ সালে তদারকি সরকারের জমানায় সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী জাগ্রত মুসলিম জনতার কুখ্যাত নেতা বাংলা ভাই ওরফে সিদ্দিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছিল লেফ্‌টেন্যান্ট কর্নেল গুলজারের নেতৃত্বাধীন র‍্যাব বাহিনী।

যদিও গোড়া থেকেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও এই বাহিনীর সঙ্গী ছিল। ছিল, ‘ক্রসফায়ার’, ‘এনকাউন্টার’ নাম দিয়ে সরকার-বিরোধীদের খুনের অভিযোগ। যথেচ্ছাচার চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় আইনি রক্ষাকবচেরও বন্দোবস্ত করা হয়েছিল সরকারি তরফে। প্রসঙ্গত, হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিব ক্ষমতায় থাকার সময়ও তাঁর হাতে গড়া জাতীয় রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে গুমখুনের অভিযোগ উঠেছিল ভূরি ভূরি। প্রাক্তন মুক্তিযোদ্ধা এবং মুজিব বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গড়া ওই বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের নির্মূল করতে ব্যবহার করা হত বলে অভিযোগ। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট সেনার একাংশের অভুত্থানে মুজিব সপরিবারে নিহত হওয়ার পরে ভেঙে দেওয়া হয় রক্ষীবাহিনীকে। অধিকাংশ অফিসার এবং জওয়ানকে পুনর্বাসিত করা হয় বাংলাদেশ সেনায়।

Bangladesh Unrest Bangladesh Protest Bangladesh Police rab Seikh Hasina Bangladesh Crisis Unrest in Bangladesh Sheikh Hasina
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy