ইজ়রায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষের আবহে সীমান্ত দিয়ে বালোচিস্তানে জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ করেছে ইরান। এর জেরে পাকিস্তানের বিদ্রোহী অধ্যুষিত প্রদেশে দ্রুত বাড়ছে তেলের দাম। ফলে চাপ পড়ছে অর্থনীতি, এমনকি নিরাপত্তা ক্ষেত্রেও!
পাক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’ জানাচ্ছে, পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ সরকার নিয়ন্ত্রিত ‘তেল ও গ্যাস নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ’ (ওগ্রা) লিটার প্রতি পেট্রল এবং ডিজ়েলের দাম যথাক্রমে ৭ টাকা ৯৫ পয়সা এবং ৪ টাকা ৮০ পয়সা বাড়িয়েছে। ইজ়রায়েল-ইরান সংঘর্ষের তিন দিনের মাথায়, রবিবার রাতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই মূল্যবৃদ্ধির কথা জানানো হয়েছে। তা ছাড়া হাইস্পিড ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ২৫৪ টাকা ৬৪ পয়সা থেকে বেড়ে ২৬২ টাকা ৫৯ পয়সা হয়েছে।
স্বাধীনতাপন্থী বিদ্রোহী বালোচদের সংগঠন বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-র ইরান সীমান্তবর্তী ওই প্রদেশে ধারাবাহিক সংঘর্ষ চলছে পাক সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনী ফ্রন্টিয়ার কোরের। ঘটনাচক্রে, বালোচিস্তান সীমান্ত লাগোয়া ইরানের প্রদেশ সিস্তান-বালোচিস্তানেও সক্রিয় সে দেশের স্বাধীনতাপন্থী কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। এই আবহে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইরান সড়ক সীমান্ত দিয়ে তেল সরবরাহ বন্ধ করায় পাক বাহিনীর উপর চাপ বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত মার্চ মাসে অন্য দুই সশস্ত্র বালোচ গোষ্ঠী, বালোচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ) ও বালোচ রিপাবলিকান গার্ডস (বিআরজি) এবং সিন্ধুপ্রদেশে সক্রিয় বিদ্রোহী সংগঠন ‘সিন্ধুদেশ রেভলিউশনারি আর্মি’র (এসআরএ) সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন যৌথমঞ্চ গড়েছে বিএলএ। বস্তুত পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথম বার ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে বালোচদের তিনটি প্রধান জনগোষ্ঠী মারি, মেঙ্গল এবং বুগতি প্রভাবিত সংগঠনগুলি।
ইরান সীমান্তবর্তী বালোচিস্তানের জেলাগুলি— তুরবাত, গ্বদর, পাঞ্জগুর, চাঘাই, ওয়াশুক এবং মাশকাইলে ইতিমধ্যেই বহু পেট্রল পাম্প বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যানবাহন চলাচল করেছে অনেক। শুধু তেল নয়, ‘দ্য ডন’ প্রকাশিত খবরে দাবি ওই জেলাগুলি খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রেও ইরানের উপর নির্ভরশীল। পরিস্থিতির বদল না হলে ওই এলাকাগুলিতে কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ খাদ্যসঙ্কট দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিদ্রোহী প্রভাবিত এলাকাগুলিতে আরও চাপের মুখে পড়তে পারে পাক বাহিনী।