E-Paper

কে তুমি পড়িছ বসি অমিতাভ-লিপি

প্রকল্পটির মূল ভাবনা স্কটিশ দৃশ্যশিল্পী কেটি প্যাটারসনের। নরওয়ের রাজধানী অসলো শহরের উত্তর দিকে নর্ডমার্কা এলাকায় কেটি এক হাজারটি স্প্রুস গাছ পুঁতেছিলেন ২০১৪ সালে। স্প্রুস হচ্ছে পাইন জাতীয় চিরহরিৎ বৃক্ষ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৫ ০৯:৩৭

—প্রতীকী চিত্র।

ধূসর পাণ্ডুলিপি। জীবনানন্দ দাশের কবিতার বইয়ের কথা মনে পড়বে অনেকেরই। কিন্তু অমিতাভ ঘোষের পরিকল্পনাটা অন্য। পরের পাণ্ডুলিপিটি সময়ের পলি পড়ে ধূসর হতে দিতেই কি চান তিনি? না কি আজি হতে প্রায় নবতিবর্ষ পরের পাঠকের জন্য রেখে যেতে চান কোনও ভবিষ্যনামা? বিশ্বের এক ডজন লেখককে এই অভিনব পরিকল্পনায় শামিল করা হয়েছে। অমিতাভ তাঁদের মধ্যেই আছেন।

ঠিক হয়েছে, অমিতাভ-সহ এই লেখকেরা যা লিখবেন, আগামী ৮৯ বছর পর্যন্ত তা পড়া হবে না। পাণ্ডুলিপি আকারেই সেগুলো সিন্দুকে ভরা থাকবে ২১১৪ সাল পর্যন্ত। ইংরেজি ভাষায় লিখে আন্তর্জাতিক খ্যাতির শিখর ছোঁয়া বাঙালি অমিতাভর সঙ্গে এই দলে আছেন মার্গারেট অ্যাটউড, হান কাং, ওশ্যান ভুয়ং প্রমুখের মতো শীর্ষস্থানীয় সাহিত্যিক। প্রকল্পটির নাম, ফিউচার লাইব্রেরি প্রজেক্ট।

প্রকল্পটির মূল ভাবনা স্কটিশ দৃশ্যশিল্পী কেটি প্যাটারসনের। নরওয়ের রাজধানী অসলো শহরের উত্তর দিকে নর্ডমার্কা এলাকায় কেটি এক হাজারটি স্প্রুস গাছ পুঁতেছিলেন ২০১৪ সালে। স্প্রুস হচ্ছে পাইন জাতীয় চিরহরিৎ বৃক্ষ। কেটির তৈরি এই স্প্রুস বনানী ১০০ বছর পূর্ণ করবে ২১১৪ সালে। অসলো নগর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, প্রকল্প শেষ না হওয়া ইস্তক এই বনানী ফিউচার লাইব্রেরি ট্রাস্টের হাতে থাকবে।

এর সঙ্গে পাণ্ডুলিপির সম্পর্ক কী? কেটির ভাবনাটা এই রকম যে, পাণ্ডুলিপিগুলি অসলো সাধারণ গ্রন্থাগারের একটি কক্ষে রাখা থাকবে ২১১৪ পর্যন্ত। তার পরে এই বনানীর গাছ থেকে তৈরি কাগজে সেগুলো ছাপা হবে একত্রে। বই এবং বৃক্ষের এই উদ্‌যাপনী সংযোগ অমিতাভকে প্রণোদিত করছে খুব। পরিবেশের সংকট অমিতাভর ভাবনা জুড়ে রয়েছে অনেক দিনই। অরণ্যও তাঁর লেখার বিষয় হয়েছে বারবার— দ্য হাংরি টাইড, জঙ্গল নামা, গান আইল্যান্ড। সেখানে পটভূমি ছিল সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ। এ বার আর্কটিকঘেঁষা উত্তরের সঙ্গে বিষুব অরণ্যের সংযোগ স্থাপনই বড় চ্যালেঞ্জ বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন অমিতাভ।

আর একটা চ্যালেঞ্জ হল, ‘‘এই কাজটা আমাদের জীবৎকাল পেরিয়ে যাওয়া সময়ের কথা ভাবতে বাধ্য করবে। এমন পাঠককে কল্পনা করে লিখতে হবে, যারা এখনও জন্মায়ইনি।’’ বাস্তুতন্ত্র, সাহিত্য এবং ধৈর্যের উত্তুঙ্গ মেলবন্ধন হিসেবে এই প্রকল্পকে ব্যাখ্যা করছেন অমিতাভ। তাঁর লেখা নিয়ে মুগ্ধ কেটিও। তবে কারও কারও মনে প্রশ্ন, গাছ কেটে কাগজ বানিয়ে কি পরিবেশবাদের বার্তা দেওয়া সঙ্গত?

অমিতাভ তাঁর লেখায় এ প্রশ্নের মোকাবিলা করবেন কি না, সে উত্তর আগামীর গর্ভে। তিনি তাঁর পাণ্ডুলিপি জমা দেবেন পরের বছর মে-জুন মাস নাগাদ। লেখার নাম জানা যাবে তখনই। ভবিষ্যতের গ্রন্থাগারে অনাগত পাঠকের জন্য সংরক্ষিত থেকে যাবে কলকাতার ক্রোমোজ়মও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Amitav Ghosh Amitav Ghosh Novels

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy