Advertisement
E-Paper

ভরা স্টেডিয়ামে ফের হত্যা! দর্শক ৮০ হাজার, এ ভাবেই খুনের আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিল তালিবান, উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জ

আফগানিস্তানে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত তালিবান শাসনে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড খুবই স্বাভাবিক বিষয় হয়ে উঠেছিল। ২০২১ সালে তালিবান ক্ষমতা পুনর্দখলের পরে এমন ঘটনা খুব বেশি দেখা যায়নি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৭
আফগানিস্তানে মঙ্গলবার স্টেডিয়ামের মধ্যে গুলি করে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এক আসামিকে।

আফগানিস্তানে মঙ্গলবার স্টেডিয়ামের মধ্যে গুলি করে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এক আসামিকে। ছবি: এক্স।

আফগানিস্তানে ফের ভরা স্টেডিয়ামে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল এক আসামিকে। গত মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে আফগানিস্তানের খোস্ত প্রদেশে। এক পরিবারের মহিলা, শিশু-সহ ১৩ জনকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল ওই আসামির বিরুদ্ধে। এ বার সেই পরিবারেরই এক সদস্য গুলি করে হত্যা করল আসামিকে। আর তা দেখতে ভিড় জমালেন প্রায় ৮০ হাজার আফগান জনতা।

আফগানিস্তানে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত তালিবান শাসনের আমলে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া খুবই স্বাভাবিক বিষয় হয়ে উঠেছিল। তবে ২০২১ সালে তালিবান পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পরে এমন ঘটনা খুব বেশি দেখা যায়নি। দ্বিতীয় বার আফগানিস্তানে তালিবান সরকার গঠনের পর থেকে এই নিয়ে ১১ বার প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা ঘটল। তার মধ্যে গত এপ্রিলেই একই দিনে আফগানিস্তানের তিন প্রদেশে পৃথক পৃথক স্টে়ডিয়ামে চার জনকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ের এই ঘটনাগুলির জেরে ফের এক বার উদ্বেগ প্রকাশ করতে শুরু করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী। উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জও।

জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার আফগানিস্তানে যে আসামিকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তিনি চলতি বছরেই এক পরিবারের ১৩ সদস্যকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন এক মহিলা এবং ন’জন শিশু। আফগানিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নিম্ন আদালত এবং আপিল আদালত— উভয় জায়গা থেকেই তাঁর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট সেই আদেশই বহাল রাখে। তার পরে তালিবানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজ়াদার অনুমোদন নিয়ে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

মঙ্গলবার খোস্ত প্রদেশে ওই প্রকাশ্যে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড দেখার জন্য স্টেডিয়ামে ভিড় করেছিল ৮০ হাজার আফগান জনতা। যে পরিবারের ১৩ সদস্যকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল, সেই পরিবারের বাকি সদস্যেরাও উপস্থিত ছিলেন স্টেডিয়ামে। খোস্ত প্রদেশের পুলিশের এক মুখপাত্র মুস্তাগফির গোরবাজ় জানান, ওই পরিবারেরই এক আত্মীয়কে দিয়ে গুলি করানো হয় আসামিকে। বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, ওই পরিবারের ১৩ বছর বয়সি এক নাবালক কিশোরকে দিয়ে গুলি করানো হয়েছে আসামিকে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও মন্তব্য করেনি স্থানীয় পুলিশ।

আফগানিস্তানে এই প্রকাশ্যে হত্যা ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেখানে রাষ্ট্রপুঞ্জ নিযুক্ত বিশেষ দূত রিচার্ড বেনেট। মঙ্গলবারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে ফের এক বার প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের প্রথা বন্ধ করার দাবিতে সওয়াল করেছেন তিনি। সমাজমাধ্যমে এক পোস্টে বেনেট লেখেন, “প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া অমানবিক। শাস্তি দেওয়ার এই নিষ্ঠুর এবং অস্বাভাবিক প্রথা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।” যদিও আফগান জনতার মধ্যে এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াই রয়েছে। আসামিকে হত্যা দেখতে স্টেডিয়ামে যাওয়া মুজিব রহমান রহমানি নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, “এর ফলে আগামী দিনে কেউ আর এমন অপরাধ করার সাহস পাবে না।”

অন্য দিকে আফগানিস্তান প্রশাসন এবং আদালতের বক্তব্য, ওই আসামিকে ক্ষমা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল নিহতদের পরিবারকে। তারা ক্ষমা করে দিলে আসামির মৃত্যুদণ্ড আটকানো যেত। কিন্তু পরিবার ওই আসামির মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে।

taliban Afghanistan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy