Advertisement
E-Paper

Rohingya: জঙ্গি-নির্দেশে খুন রোহিঙ্গা নেতাকে, জানাল আততায়ী

২০১৮-র অগস্টে আরসা-র জঙ্গিরা এক রাতে মায়ানমার পুলিশ ও সেনাদের ৩৯টি শিবিরে হানা দিয়ে বেশ কয়েক জনকে হত্যা করে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২১ ০৬:১২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাকে খুন করা হয়েছে জঙ্গি সংগঠন আরসা-র নেতৃত্বের নির্দেশে। রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানোর জন্য তিনি তৎপর হলেও আরসা সেটা চায় না। এই কারণেই মুহিবুল্লাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আরসা। এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া এক আততায়ী দু’দিন আগে ধরা পড়ার পরে পুলিশকে সে এই সব তথ্য জানিয়েছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে এই আততায়ী।

বাংলাদেশ সরকার স্বীকার না-করলেও কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলিতে মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি)-র উপস্থিতি ও দৌরাত্ম্য ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে। রোহিঙ্গা নেতা মুহাম্মদ মুহিবুল্লাকে মাস খানেক আগে অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীরা শরণার্থী শিবিরের মধ্যেই গুলি করে হত্যা করার পরে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী সেটিকে সাধারণ দুষ্কৃতীদের কাজ বলে বর্ণনা করেছিল। তবে মুহিবুল্লার পরিবার গোড়া থেকেই অভিযোগ করে আসছিলেন, পাকিস্তানের মদতে ও প্রশিক্ষণে তৈরি কট্টরপন্থী ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আরসা এই খুন করেছে। তারা বেশ কিছু দিন ধরেই মুহিবুল্লাকে হুমকি দিচ্ছিল। এর পরে সম্প্রতি শরণার্থী শিবিরের একটি মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে ৬ জনকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডকে মাদক চোরাচালানিদের গোষ্ঠী সংঘর্ষ বলে বর্ণনা করলেও, এর পিছনেও আরসা-র নাম উঠে আসছে।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লা শরণার্থীদের সম্মানজনক ভাবে দেশে ফেরানোর দাবিতে আন্তর্জাতিক মহলে যোগাযোগ করে পরিচিতি পেয়েছিলেন। গ্রেফতার হওয়া আজিজুল হক জানিয়েছে, এ ভাবে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় আরসা অসন্তুষ্ট হয়েছিল। তাঁকে থামতে বলেছিল এই জঙ্গি সংগঠন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। আজিজুল জানিয়েছে, সংগঠনের ‘ওপরতলা’ থেকে নির্দেশ আসার পরে তা রূপায়ণের জন্য তারা কয়েক জন স্থানীয় একটি টিলার মাথায় বৈঠকে বসে। ঠিক হয় পরের দিনই এই রোহিঙ্গা নেতাকে খুন করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এক দল বন্দুকধারী শিবিরের মধ্যে একটি পেঁপে বাগানে জড়ো হয়। দু’জন মুহিবুল্লাকে জানায়, কয়েক জন শরণার্থী ফেরত যেতে চায়। তারা কথা বলতে আসবে। এর পরে মুহিবুল্লা তাঁর দফতরে এসে বসার পরে বন্দুকধারীরা চড়াও হয়। আজিজুল জানিয়েছে, তার কাজ ছিল দরজা আগলে দাঁড়ানো। ঘরের ভিতরে যাওয়া তিন জন বন্দুকধারী নিশানায় গুলি করতে না-পারলে, তখন তাকে গুলি করতে হত। কিন্তু ঘরের ভিতরে ঢুকে আততায়ীরা মুহিবুল্লাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে।

২০১৮-র অগস্টে আরসা-র জঙ্গিরা এক রাতে মায়ানমার পুলিশ ও সেনাদের ৩৯টি শিবিরে হানা দিয়ে বেশ কয়েক জনকে হত্যা করে। তারই বদলা হিসেবে সেনারা রোহিঙ্গাদের উৎখাতে নামে। প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার শাখা তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করলেও অভিযোগ ওঠে, শরণার্থীদের মধ্যেই জঙ্গিদের একাংশ গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে। কিন্তু নানা বাধ্যবাধকতার কারণে বাংলাদেশ সরকার এখনই আরসা-র উপস্থিতি স্বীকার করতে চায় না। তবে মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে মাদক, সোনা, অস্ত্রের চোরাচালানে শিবিরের রোহিঙ্গাদের একাংশ যে যুক্ত, সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তা মেনে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি এখন মাথাব্যথার পর্যায়ে পৌঁছেছে। চোরাচালান ঠেকাতে ওই সীমান্তে গুলি চালানোর জন্য সীমান্ত রক্ষীদের নির্দেশ দেবে— এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

Rohingya people
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy