ছেলের সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল বছর খানেকেরও বেশি আগে। প্রায় ৬০০ দিন পেরিয়ে আজ সিডনি বিমানবন্দরে যখন ছেলের মুখটা প্রথম নজরে এল টিম টার্নারের তখন আর চোখের জল বাঁধ মানেনি বৃদ্ধের। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘‘গত দেড় বছরে একটা করে দিন কাটিয়েছি আর ভেবেছি, কবে আবার তোমার মুখ দেখতে পারব, আদৌ পারব কি...’’
সিডনির এই ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। সোমবার অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর দেশের একাধিক বিমানবন্দরে দেখা গেল পুনর্মিলনের এমন হাজারো খণ্ডচিত্র। গত বছরের মার্চ মাস থেকে প্রায় ৬০০ দিন কড়া প্রহরায় সরকার আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ রাখায় অস্ট্রেলিয়ার বাইরে পা রাখার অনুমতি ছিল না বাসিন্দাদের।
বাইরে থেকে সে দেশে পা রাখার অনুমতি পাওয়াও ছিল কঠিন। যদি কোনও ভাবে তা পাওয়াও যেত খরচের পরিমাণ ছিল বিপুল। হোটেলে কমপক্ষে ১৪ দিন নিভৃতবাসে কাটানোর ফরমান ছিল দোসর। ফলে ইচ্ছে থাকলেও এই ১৯ মাস অন্য মহাদেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তবে এ দিন থেকে নিভৃতবাসের সেই নিয়মও তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার দুই বড় শহর সিডনি এবং মেলবোর্ন।
ফেরার রাস্তা সুগম হতেই সময় নষ্ট না করে দলে দলে দেশে ফিরছেন বাসিন্দারা। বিশেষত তাঁরা, যাঁদের ফেরার কারণ গুরুতর হওয়া সত্ত্বেও ফিরতে পারেননি এতদিন। ঠিক যেমন মায়ের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর পেয়েও ব্রিটেন থেকে উড়ে আসতে পারেননি জুলি চু। আজ ফেরার বিমানে উঠে জুলির উচ্ছ্বসিত মন্তব্য, ‘‘কতক্ষণে মায়ের হাতটা চেপে ধরব! আর অপেক্ষা করতে পারছি না!’’