নানা জল্পনার মধ্যেই রবিবার ভোরে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। তার মধ্যে ফোরডোর মাটির নীচে পরমাণুকেন্দ্রটিতে অন্তত ছ’টি ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ফেলা হয়েছে বলে দাবি। এই ঘটনার পরেই পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের পড়শি এবং আমেরিকার এক বন্ধুদেশে জারি হল সতর্কতা। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে সরকারি নির্দেশ, ‘‘বাড়ি থেকে কাজ করুন। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোবেন না।’’
গত সপ্তাহে ইজ়রায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর থেকেই আমেরিকার যুদ্ধে যোগদান নিয়ে জোর জল্পনা চলছিল। ইরানও হুমকি দিয়ে রেখেছিল, আমেরিকা অস্ত্র ধরলে তারাও ছেড়ে দেবে না। পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাবে তারা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি, পশ্চিম এশিয়ায় অন্তত ১০টি দেশে আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। সেখান অন্তত ৫০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন। পশ্চিম এশিয়ার যে দেশগুলিতে আমেরিকার মূল ঘাঁটি রয়েছে, সেগুলি হল— তুরস্ক, সিরিয়া, লেবানন, জর্ডন, মিশর, সৌদি আরব, কাতার, ইরান, কুয়েত এবং বাহরিন।
ইরানে মার্কিন হামলার পর রবিবার বাহরিনে জারি হল সতর্কতা। এই দেশে আমেরিকার পঞ্চম নৌবহর রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সেখানে মোতায়েন রয়েছে প্রায় ৮,৩০০ মার্কিন সেনাও। সেই দেশে এ বার ৭০ শতাংশ সরকারি কর্মচারীকে বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হল।
বাহরিনের সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সে দেশের সিভিল সার্ভিস বুরো যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তা লেখা হয়েছে, ‘‘আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ।’’ নাগরিকদের প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে না-বেরোনোর নির্দেশ দিয়েছে বাহরিনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও। সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও বাড়ি থেকে পড়াশোনা চালানোর নির্দেশ দিয়েছে বাহরিনের শিক্ষা মন্ত্রক।
পশ্চিম এশিয়ার ১০টি দেশে সব মিলিয়ে আমেরিকার ১৯টি মূল সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল— কাতারের আল উদেইদ বায়ুসেনা ঘাঁটি, বাহরিনে নৌসেনা ঘাঁটি, কুয়েতের ক্যাম্প আরিফজান, ইরাকের আল-আসাদ বায়ুসেনা ঘাঁটি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আল-ধাফরাস এবং তুরস্কের ইনসারলিক। এ ছাড়াও সিরিয়া, ওমান, জর্ডনেও আমেরিকার কিছু ঘাঁটি রয়েছে।
ইরাকের বাগদাদ থেকে পশ্চিমে আল আসাদ বায়ুসেনা ঘাঁটিতেই সবচেয়ে বেশি মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। সাম্প্রতিক কালে বেশ কয়েক বার এই ঘাঁটিতে হামলাও চালিয়েছে ইরান এবং তাদের সহযোগী বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী। উত্তর ইরাকের কুর্দিস্তান প্রদেশেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।