ঢাকায় স্কুলের উপর ভেঙে পড়ল বাংলাদেশ বায়ুসেনার বিমান। ভেঙে পড়ার পরেই তাতে আগুন ধরে যায়। এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন। তাঁদের মধ্যে ১৬ জন পড়ুয়া, দু’জন শিক্ষক এবং ওই বিমানের পাইলট। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ১৬৪ জন। দগ্ধদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। বাংলাদেশের স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমানটি উড়েছিল। তার পরেই সেটি ভেঙে পড়ে ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপর। এমনটাই জানানো হয়েছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদনে। ওই স্কুলে আগুন ধরে যায়। এই ঘটনায় কত জন আহত হয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে প্রশাসন। ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে সেই দেশে।
বাংলাদেশের বায়ুসেনার তরফে জানানো হয়েছে, তাদের এফ-৭ বিমানটি ভেঙে পড়েছে। প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হত ওই বিমানটি। তবে কী ভাবে সেটি ভাঙল বা বিমানের পাইলট বেরিয়ে আসতে পেরেছেন কি না, তা নিয়ে বিশদ কিছু জানায়নি বাংলাদেশের বায়ুসেনা। দমকল বিভাগের আধিকারিক লিমা খান প্রথম আলো-কে জানিয়েছেন, মাইলস্টোন স্কুলের ক্যান্টিনের ছাদে বিমানটি ভেঙে পড়েছে। সেখানে কাজ করছে দমকলের তিনটি ইউনিট। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে জন্য মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি। দমকল বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আহত চার জনকে হেলিকপ্টারে চাপিয়ে সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকিদের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কয়েক জন পড়ুয়াকে সেনা জওয়ানেরা কোলে নিয়ে অন্য যানে তুলে হাসপাতালে পৌঁছে দেন।
ঘটনায় দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শতাধিক জন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই পড়ুয়া। হাসপাতালের তরফে আহতদের নামও প্রকাশ করা হয়েছে। উত্তরার ওই মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজ ভবনের বাইরে জড়ো হয়েছেন উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা। সেই স্কুলের শিক্ষক সবুজ মিয়াঁ প্রথম আলো-কে জানিয়েছেন, বিমানটি যখন ভবনে ভেঙে পড়ে, তখন স্কুল ছুটি হয়ে গিয়েছিল। তবে বেশ কিছু পডুয়া স্কুলের ভিতরেই ছিল। অনেক অভিভাবকই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ফেরদৌসি বেগম নামে এক অভিভাবিকা জানিয়েছেন, তাঁর কন্যা স্কুলের ভিতরে আটকে রয়েছে। তার সঙ্গে এখনও কোনও যোগাযোগ করতে পারেননি। অন্য এক অভিভাবক লাকি আখতার জানিয়েছেন, তাঁর দুই সন্তান এই স্কুলে পড়ে। বড় জন নিরাপদে স্কুল থেকে বার হতে পারলেও ছোট জন আটকে রয়েছে।
আরও পড়ুন:
এই ঘটনায় সমাজমাধ্যমে শোকপ্রকাশ করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ঢাকার ওই স্কুল, তার শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা ‘অপূরণীয়’। বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। আহতদের দ্রুত আরোগ্যও কামনা করেছেন ইউনূস।
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে ভারতের অহমদাবাদের লোকালয়ে ভেঙে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান। মেঘানিনগরে চিকিৎসকদের হস্টেলে ভেঙে পড়েছিল সেটি। ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২৬০ জন। লন্ডনের অদূরে গ্যাটউইকে যাচ্ছিল সেটি।