(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা, তৌহিদ হোসেন (মাঝে), মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বদলে গিয়েছে বলে মনে করেন সে দেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। শনিবার ঢাকার নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সেমিনারে বক্তৃতার সময়ে এ কথা জানান তিনি। ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, “৫ অগস্ট পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে এক রকম সম্পর্ক ছিল। ৫ অগস্টের পরে সেটি পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে। এটা বাস্তবতা।” তাঁর মতে, এই বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। ভারতও এই পরিবর্তনকে অনুধাবন করে সেই মতো বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশাপ্রকাশ তৌহিদের। তাঁর মতে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সুসম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী। সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৌহিদ বলেছেন, “বাংলাদেশ কারও ক্ষতি করবে না। কারও জন্য নিজেদের ক্ষতি হোক, সেটিও চাইছে না বাংলাদেশ।”
কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন— এই দুইয়ের চাপে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সরকারের পতন হয়। গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে আসেন শেখ হাসিনা। গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশের তদারকি সরকার প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস একাধিক বার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ থামেনি পদ্মাপারে। ভারতও একাধিক বার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে। গত কয়েক মাসে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের একের পর এক অভিযোগে দু’দেশের নাগরিকদের একটি বড় অংশের মধ্যে সম্পর্কে তিক্ততা বৃদ্ধি হয়েছে।
তবে কূটনৈতিক স্তরে ঘোষিত ভাবে সম্পর্কের অবনতি এখনও পর্যন্ত সেই ভাবে দেখা যায়নি। হাসিনা সরকারের আমলে পুজোর মরসুমে এ পার বাংলায় ইলিশ পাঠাত বাংলাদেশ। ইউনূসের তদারকি সরকারের আমলেও তা বদলায়নি। উৎসবে মরসুমে এ বারও বাংলাদেশ ইলিশ পাঠিয়েছে ভারতে। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশের ঘটনা পরম্পরাকে ঘিরে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতির দৃশ্য দেখা গিয়েছে। যা নিয়ে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ চট্টগ্রামের সংখ্যালঘু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করার পরে, সে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দিল্লি। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার বলেন, ‘‘আশা করব চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে অভিযোগের স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ বিচার হবে। তাঁর আইনি অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকবে।’’
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। এর পরেই বাংলাদেশের তরফে পাল্টা বুঝিয়ে দেওয়া হয়, সে দেশের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে’ নাক গলানো পছন্দ করছে না ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। সে দেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম এক সাক্ষাৎকারে জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদে আছেন। কারও কোনও সমস্যা হচ্ছে না। বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চলছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy