Advertisement
E-Paper

‘একই সঙ্গে সাধারণ নির্বাচন এব‌ং গণভোট নয়’, ইউনূসের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেন জামাত নেতৃত্ব

জামাত নেতৃত্ব আগেই জানিয়েছিলেন, জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন করতে হবে বাংলাদেশে!

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:১৮
গ্রাফিক আনন্দবাজার ডট কম।

গ্রাফিক আনন্দবাজার ডট কম।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের ‘ভারসাম্যের কৌশল’ কাজ দিল না। বৃহস্পতিবার সকালে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ইউনূস জানিয়েছিলেন, আগামী বছর জাতীয় সংসদের নির্বাচন এবং জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট একই সঙ্গে হবে। জুলাই সনদ কার্যকরের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানালেও বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি’ (‘জামাত’ নামেই যা পরিচিত) এবং তাদের সহযোগী সাতটি দলের নেতারা জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করানোর সিদ্ধান্ত তাঁরা সমর্থন করবেন না।

জামাত নেতৃত্ব আগেই জানিয়েছিলেন, জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন করতে হবে বাংলাদেশে! অন্য দিকে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপি-র দাবি, কোনও অবস্থাতেই জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আগে সংস্কার প্রস্তাব সংক্রান্ত গণভোট করানো চলবে না। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে ইউনূস জানান, রাজনৈতিক দলগুলির মতামত নেওয়ার পরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গণভোটের নির্ঘণ্ট স্থির করার ভার অন্তর্বর্তী সরকারকে দিয়েছিল। তার পরেই এক সঙ্গে দু’টি ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

এর পরে সন্ধ্যায় ঢাকায় জামাতের সদর দফতরে আটদলীর জোটের নেতারা বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পরে জামাতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লা মহম্মদ তাহের বলেন, ‘‘এক সঙ্গে দু’টি গণভোট ও সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করার প্রস্তাবের আমরা নিন্দা করেছি। নির্বাচন এবং বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে যে জট লেগেছে, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সেটির সুষ্ঠু সমাধান হবে, এমনটাই আশা করেছিল সমমনা দলগুলো। কিন্তু ভাষণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জাতির মুক্তির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।’’ প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিকল্প দু’টি সুপারিশ জমা দিয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথমটিতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলি বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাশ হলে আগামী জাতীয় সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। নির্ধারিত সময়ে সংসদ এটি করতে ব্যর্থ হলে সংস্কার প্রস্তাবগুলি স্বয়ংক্রিয় ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাবে।

দ্বিতীয় সুপারিশটিও প্রায় একই। তবে সেখানে বলা হয়েছে, ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করা হবে। না হলে কী হবে, তার কোনও উল্লেখ নেই। চলতি বছরের ৫ অগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের বর্ষপূর্তিতে ‘৩৬ জুলাই উদ্‌যাপন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন ইউনূস। ২৮ দফার ওই ঘোষণাপত্র হল, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের একটি দলিল, যার মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মুজিবুর রহমান এবং হাসিনার আমলে ‘আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারের’ পাশাপাশি ওই সনদে সমালোচনা করা হয়েছে দুই সেনাশাসক, জিয়াউর রহমান (বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা) এবং হুসেন মহম্মদ এরশাদের (জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা) জমানারও। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে ঘোষণার কথাও বলা হয়েছে ওই সনদে। যদিও তার রূপায়ণের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে এখনও মতবিরোধ রয়েছে। জামাত নেতৃত্ব সই করলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের একাংশের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনও সনদে স্বাক্ষর করেনি।

Muhammad Yunus Bangladesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy