মোমেনা সোমা। —নিজস্ব চিত্র।
আইএসের দর্শনের বিশ্বাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মোমেনা সোমার ৪২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট। সোমার আইএসের প্রতি বিশ্বাসের কথা বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা রিপোর্টে রয়েছে। গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছনোর মাত্র ৯ দিন পরই সোমা মেলবোর্নে বাড়ির মালিক রজার সিংগারাভেলুকে খুন করতে ছুরি নিয়ে হামলা করেন।
হামলার পরপরই এই ছাত্রীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই ঘটনার বিচারে বুধবার বিচারক লেসলি টেইলর এই রায় দিয়েছেন। ভিক্টোরিয়া রাজ্যের আইন অনুযায়ী সোমাকে অন্তত ৩১ বছর ছয় মাস জেলে থাকতে হবে। এই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তিনি প্যারোলের আবেদনও করতে পারবেন না। ২০১৮ সালের অগস্ট মাসে সোমার বিচার শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
জঙ্গিবাদের দিক ঝুঁকে গত ২০১৫ সালেই তুরস্ক হয়ে সিরিয়া যেতে চেয়েছিলেন মোমেনা সোমা। সেই লক্ষ্যে তুরস্কের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ভর্তিও হয়েছিলেন। কিন্তু ভিসা না পাওয়ায় তখন তুরস্ক যেতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন: স্বেচ্ছায় ব্যয় কমাবে পাক সেনা
সেই সময় মোমেনা সোমার ছোট বোন আসমাউল হোসনাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে বিস্তর তথ্য পান বাংলাদেশের তদন্তকারী অফিসাররা। অভিযোগ, সোমার বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে ঢাকার মিরপুরে পুলিশের ওপর হামলাও করেছিলেন আসমাউল। তখনই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তদন্তে জানা যায় একাধিক তথ্য। আসমাউল হোসনা পুলিশকে জানান, জঙ্গিবাদের আকর্ষণে সিরিয়ায় গিয়ে ফেরত আসা গাজি কামরুস সালাম এবং সিরিয়ার গিয়ে না ফেরা মেরিন ইঞ্জিনিয়র নজিবুল্লা আনসারির সঙ্গেও মোমেনা সোমার যোগাযোগ ছিল।
আরও পড়ুন: ‘ড্রিমারদের’ জন্য বিল পাশ হাউসে
ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা করেন সোমা। ঢাকার এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির পড়ুয়াদের জঙ্গিবাদে আকর্ষণ নিয়ে বার বার আলোচনা হয়েছে। এখানকার গ্রন্থাগারে জঙ্গিবাদের বই পাওয়া গেলেও সে বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে ব্লগার রাজীব হায়দার কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফয়জল বিন নইম ও রেজওয়ানুল হক গ্রেফতারের হন। তাঁরা হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও সরাসরি অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করে ফৌজাদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দিও দেন। গুলশনের হলি আর্টিজান বেকারিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও আলোচিত জঙ্গি হামলায় অংশ নেওয়া নির্বাস ইসলামও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। সেই হামলায় নিহতদের ১৭ জন বিদেশি এবং ৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy