Advertisement
E-Paper

সীমা ছাড়াবেন না, ব্লগারদের হুঁশিয়ারি দিলেন পুলিশকর্তা

চার দিন কেটে গিয়েছে। ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক জনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি বাংলাদেশ পুলিশ। কিন্তু এরই মধ্যে মুক্তমনা ব্লগারদের কী লেখা উচিত, আর কী না, সে বিষয়ে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন বাংলাদেশ পুলিশেরই এক শীর্ষ কর্তা। ওই সব লেখককে ধমকের সুরে তিনি বলেছেন, ‘‘নিজেদের সীমা লঙ্ঘন করবেন না।’’

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০২:৫৭

চার দিন কেটে গিয়েছে। ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক জনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি বাংলাদেশ পুলিশ। কিন্তু এরই মধ্যে মুক্তমনা ব্লগারদের কী লেখা উচিত, আর কী না, সে বিষয়ে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন বাংলাদেশ পুলিশেরই এক শীর্ষ কর্তা। ওই সব লেখককে ধমকের সুরে তিনি বলেছেন, ‘‘নিজেদের সীমা লঙ্ঘন করবেন না।’’ খোদ পুলিশকর্তার মুখ থেকে এই ধরনের বার্তা শোনার পরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে দেশে-বিদেশে।

বিতর্কের কেন্দ্রে বাংলাদেশ পুলিশের আইজি একেএম শাহিদুল হক। নীলাদ্রি খুনের কিনারা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল হককে। কিন্তু তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে মুখ না খুলে প্রথমেই তিনি আক্রমণ করে বসেন মুক্তমনা ব্লগারদেরই। তাঁদের প্রতি হকের বার্তা, ‘‘সীমা ছাড়াবেন না। আর কখনওই কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেবেন না। এমন কিছু লিখবেন না যাতে অন্যে সেটা পড়ে দুঃখ পায়।’’ পরে অবশ্য সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে হক জানান, এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা না গেলেও নীলাদ্রির খুনিদের ধরাকেই এখন অগ্রাধিকার দিচ্ছে পুলিশ।

গত শুক্রবার ঢাকার ভাড়া বাড়িতে খুন হন মুক্তমনা ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়। নীলয় নীল নামে পাঠকদের কাছে পরিচিত ছিলেন তিনি। জনা চারেক দুষ্কৃতী বাড়ি ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে খুন করে পালিয়ে যায়। তবে নীলাদ্রিই প্রথম নন। চলতি বছরে চার-চার জন মুক্তমনা ব্লগার খুন হয়েছেন বাংলাদেশে। অভিজিৎ রায়কে দিয়ে শুরু। তার পর ওয়াশিকুর রহমান, অনন্তবিজয় দাস এবং নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়। একই কায়দায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার কুপিয়ে খুন করা হয়েছে ওই চার জনকে।

অভিযোগ, উগ্র মৌলবাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার শাস্তি হিসেবেই মৃত্যু বরণ করতে হয়েছে ব্লগারদের। এই হত্যাকাণ্ডগুলির দায়ও স্বীকার করেছে ভারতীয় উপমহাদেশে আল কায়দার শাখা সংগঠন। এক জন করে ব্লগার খুন হয়েছেন, আর প্রতি বারই রব উঠেছে, এই সব মুক্তমনা ব্লগারকে নিরাপত্তা দিতে কার্যত ব্যর্থ বাংলাদেশ পুলিশ। যাঁরা খুন হয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই আগে হুমকি পেয়েছেন। নীলাদ্রিও পেয়েছিলেন। পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে প্রত্যাখ্যাতও হয়েছিলেন তিনি। সে কথা নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেওছিলেন। যারা তাঁকে শাসাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নিতে চায়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন নীলাদ্রি। তার পর নিজের বাড়ির মধ্যেই খুন হতে হয়েছে তাঁকে। নীলাদ্রির মৃত্যুর পরে হকের মুখে এই ধরনের মন্তব্য তাই মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। বাংলাদেশের বহু বি়জ্ঞানমনস্ক যুক্তিবাদীদের বক্তব্য, এক জন লেখক কী লিখবেন, না লিখবেন তা যদি পুলিশ ঠিক করে দেয়, তা হলে পুলিশ নিজের কাজটা করবে কখন। আর যে পুলিশ দেশের সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তারা অন্যের সীমা লঙ্ঘন নিয়ে প্রশ্ন তোলে কোন যুক্তিতে। তাঁদের আরও প্রশ্ন, সীমার মধ্যে থেকে লেখার কথা বলে কি কার্যত কট্টর মৌলবাদীদেরই আকারে ইঙ্গিতে প্রশ্রয় দেওয়ার বার্তা দিলেন পুলিশের আই জি?

হক এ সব প্রশ্নের উত্তর দেননি। বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, কাল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের গোয়েন্দারা বৈঠক করেছেন এ দেশের পুলিশের সঙ্গে। প্রযুক্তিগত তথ্য আদানপ্রদান হয়েছে দু’দেশের গোয়েন্দাদের মধ্যে।

bangladeshi top cop niloy nil niladri chattopadhyay murder investigation niladri murder investigation bangladeshi blogger bangladeshi blogger restrain police warns blogger
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy