ছবি রয়টার্স।
আড়াই থেকে তিন, তার পরে এক ধাক্কায় পাঁচ হাজার। দিন যত কাটছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বেইরুট বিস্ফোরণে আহতের সংখ্যা। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ার আশঙ্কা মৃতের সংখ্যাও। সরকারি ভাবে এখনও ১৫৭ জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও দেশের সাধারণ মানুষের বক্তব্য, আসল সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি। এখনও নিখোঁজ স্বজনকে খুঁজে পাওয়ার আশায় হন্যে হয়ে ঘুরছেন অসংখ্য মানুষ। হাসপাতালগুলোয় এত ভিড় যে কোনও কোনও জায়গায় মাঠেই ব্যবস্থা করতে হচ্ছে আহতদের চিকিৎসার।
এক নার্স জানালেন, মৃত আর জখমদের ভিড়ে হাসপাতালগুলোর এমনই অবস্থা যে রক্তে ভেসে যাচ্ছে সিঁড়ি থেকে করিডর। হাসপাতাল, নাকি কসাই খানা, পার্থক্য করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ভয়াবহ বিস্ফোরণের দু’দিন পরেও লেবাননের রাজধানী এখনও লন্ডভন্ড। বন্দরের দিকে যাওয়ার রাস্তাগুলো অবরুদ্ধ। দমকল আর উদ্ধারকারী দল এখন সেই ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যস্ত। তাঁদের আশঙ্কা, সেখানে হয়তো আটকে পড়ে রয়েছে নিথর দেহের স্তূপ। মঙ্গলবারের বিস্ফোরণে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই ডকের কর্মী অথবা সেই সময়ে ওই এলাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিস্ফোরণের তীব্রতায় অনেকেই জলে গিয়ে পড়েন।
আজ থেকে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব। তাঁর আশ্বাস, গোটা ঘটনার পিছনে দোষী কারা, তাদের খুঁজে বার করে দ্রুত শাস্তি দেবে সরকার। তবে প্রাথমিক তদন্তে গাফিলতির তত্ত্বই সামনে এসেছে। যে সব বন্দর কর্মীর দায়িত্বে এত বছর ওই বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক রাখা ছিল, তাঁদের গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার। ২০১৪ সাল থেকে যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো বিস্ফোরক বন্দর চত্বরে জড়ো করা ছিল, তা জানা সত্ত্বেও সেগুলি সরানোর দায়িত্বে থাকা বিচারক কমিটিও এত দিন কিছুই করেনি বলে অভিযোগ। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত বিচারের আশ্বাস দিলেও বেইরুটের সাধারণ মানুষ অবশ্য সরকারের প্রতি ক্ষোভ লুকোচ্ছেন না। দেশের ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি যে এ বার আরও মুখ থুবড়ে পড়ল, সে কথাও বলছেন অনেকে। প্রাথমিক হিসেবে সরকারই জানাচ্ছে ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারেও বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy