Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Bank Robbery

ক্যানসার আক্রান্ত বোনের টাকা উদ্ধারে ব্যাঙ্ক লুট দিদির! রেকর্ড হল গোটা ঘটনার রুদ্ধশ্বাস ভিডিয়োও

আর্থিক দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে লেবানন। ২০১৯ থেকে ব্যাঙ্কে জমা থাকা আমানতও অনির্দিষ্ট কালের জন্য ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়া হয়েছে। মাসে মাত্র ৮০০ ডলার তুলতে পারেন আমানতকারীরা।

ক্যানসার আক্রান্ত বোন (বাঁ দিকে) এবং স্যালি হাফিজ (ডান দিকে)।

ক্যানসার আক্রান্ত বোন (বাঁ দিকে) এবং স্যালি হাফিজ (ডান দিকে)। ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।

সংবাদ সংস্থা
বেইরুট, লেবানন শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৯:০০
Share: Save:

বোনের ক্যানসার। চিকিৎসার জন্য চাই অর্থ। কিন্তু দেশের ভঙ্গুর অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জেরে ব্যাঙ্কে সবার আমানত ‘ফ্রিজ’। তা হলে উপায়? সেটাই বার করলেন ক্যানসার আক্রান্তের দিদি। বন্দুক উঁচিয়ে ব্যাঙ্ক লুট করলেন। তবে নিলেন শুধু নিজের অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা, ছুঁলেন না অন্য কারও আমানত। গোটা ঘটনা ধরা থাকল মোবাইল ক্যামেরায়। লেবাননের রাজধানী বেইরুটের এমন ঘটনায় বিশ্ব জুড়ে আলোড়ন।

বেশ কিছু দিন হল ভয়ঙ্কর আর্থিক দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে লেবানন। ২০১৯ সাল থেকেই সে দেশের সমস্ত ব্যাঙ্কে জমা থাকা আমানতও অনির্দিষ্ট কালের জন্য ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৮০০ ডলার তুলতে পারেন আমানতকারীরা। কিন্তু বিপদ-আপদ কি আর সময় বুঝে আসে!

বেইরুটের বাসিন্দা স্যালি হাফিজ। বোন ক্যানসার আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্য চাই টাকা। কিন্তু ব্যাঙ্কে জমানো নিজের টাকাও তুলতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে কী করলেন স্যালি? সেই ঘটনার কথা শুনে কারও মুখে হর্ষধ্বনি, কেউ আবার ভয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছেন।

বুধবার, আচমকাই বেইরুটের ‘ব্লোম ব্যাঙ্কে’ হাজির স্যালি। সকলের সামনেই কোমরে গোঁজা বন্দুক বার করে তিনি ঘোষণা করেন, কাউকে মারতে বা অন্যের টাকা লুট করতে তিনি আসেননি। এসেছেন, নিজের অ্যাকাউন্টের টাকা তুলে নিয়ে যেতে। আইনি পথে যখন সেই টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, তখন বাধ্য হয়েই এই পথ নিতে হচ্ছে তাঁকে। এ কথা বলে, সবার চোখের সামনে বন্দুক উদ্যত তরুণী নিজের অ্যাকাউন্টে থাকা ১৩ হাজার আমেরিকার ডলার তুলে জানলা ভেঙে ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে যান। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ব্যাঙ্কে এসে পৌঁছয় নিরাপত্তা বাহিনী। কিন্তু তত ক্ষণে স্যালি পগারপার।

বোনের চিকিৎসার জন্য স্যালি যে পথ নিয়েছেন, তাকে বেআইনি বলছেন মানুষ। কিন্তু লেবাননের বর্তমান পরিস্থিতি একই সঙ্গে তুলছে একাধিক প্রশ্নও। তার জেরেই বেইরুটে রাতারাতি নায়কের সম্মান পাচ্ছেন স্যালি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, স্যালি যে বন্দুকটি উঁচিয়ে ব্যাঙ্ককর্মীদের ভয় দেখিয়ে কাজ হাসিল করেছিলেন, তা ছিল নেহাতই খেলনা।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে স্যালি বলেন, ‘‘আমার আর হারানোর কিছু নেই। আমি পথের একে বারে শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। দু’দিন আগে আমি শাখা প্রবন্ধকের (ব্রাঞ্চ ম্যানেজার) কাছে গিয়ে বলি, আমার বোন মরতে বসেছে। ওর হাতে খুব বেশি সময় নেই। কিন্তু কাজ হয়নি। আমি এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছি, যে আমার নিজের দু’টি কিডনি বিক্রি করে হলেও বোনের চিকিৎসা করাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bank Robbery beirut Lebanon Cancer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE