মা দুর্গার প্রতীমা। বোর্নমাউথের ডরসেট ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের পুজোয়। —নিজস্ব চিত্র।
চোখে যেন নেশা লাগে এই উৎসবে!
কোট, স্যুট, টাইয়ের ফাঁস হঠাৎ যেন উধাও। ভিন্দেশি আদব-কায়দার মোড়ক সরিয়ে পুরোদস্তুর বাঙালিয়ানা চারপাশে। শাড়ি, পাঞ্জাবির সমাহারে ইংল্যান্ডের এক কোণের পুজোয় ম্যাডক্স স্কোয়ার, বাগবাজারের ছবি ভাসে।
সমুদ্রপারের শহর বোর্নমাউথের ডরসেট ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনে শারদোৎসবের সকাল-বিকেলে ঢাকের বাদ্যি, ধুনুচির ধোঁয়া, পুজোর ফুলের সুবাসে বাঙালি পোশাকের ভিড়ে কী ভাবে হারিয়ে যায় স্থান-কাল। মন ফেরে হাজার হাজার মাইল দূরের কল্লোলিনী কলকাতাতেই। অনলাইনের অ্যাপে আঙুল ঘোরে পুজোর মাস দু’য়েক আগে থেকেই। হালের বাঙালি-ফ্যাশনে কী পছন্দের, নজর থাকে সে দিকেই। এ বার সংগঠনের মহিলা সদস্যদের অনেকেরই ঝোঁক ছিল বালুচরীর দিকে। তা ছাড়াও স্বর্ণচরী, সিল্কের শাড়ি তো রয়েছেই। আমাদের পছন্দ আদি, অকৃত্রিম পাঞ্জাবি। তবে তার নকশায় একে অন্যকে তাক লাগাতে সকলেই তৈরি। সপ্তমীর সকালেই তার আঁচ মিলবে।
বছরের এই চারটে দিনই তো নিজেদের মাটি থেকে বহু দূরেও দেশের মাটির গন্ধ নিয়ে কাটানোর সুযোগ। কে তা হারাতে চায়! তাই বলে শুধু দেশের লোকই নয়, এই পুজোয় ভিড় জমে ইউরোপীয়দেরও। আসেন বাংলাদেশি মানুষজন। দুগ্গাপুজোর প্রসাদের কদর কত তাঁদেরও, খিচুড়ি, লাবড়ার ভোগের প্লেট দেখলেই বোঝা সহজ। শিঙাড়া, পাপড়ি চাট, মিষ্টি, পাঁপড়ও চেটেপুটে খাই সব্বাই। না হলে তো ফের এ সব পাতে পেতে বছরখানেকের অপেক্ষা।
বিকেল-সন্ধেও রঙিন হয় বাঙলার সুর-তালে। কেউ করেন গান, কেউ একক নাচ, কবিতা। একাঙ্ক নাটকও। রেকর্ডে পুরনো দিনের সন্ধ্যা, লতা, আশা, কিশোরের গানে অমোঘ নস্ট্যালজিয়া। বিসর্জনে ‘আসছে বছর আবার হবে’র রব।
পুজোর এমন নেশার আমেজ আর কোথায়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy